জ্ঞাত আয় বহির্ভুত সম্পদ অর্জনের মামলায় খুলনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা মুহাম্মদ মিজানুর রহমান মিজানের বিরুদ্ধে চার্জশিটে অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের বিষয়ক উপ পরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মদ আরিফ সাদেক নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মিজানের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ১০ কোটি ৫৮ লাখ ৫৭ হাজার ৯৮১ টাকার সম্পদ অবৈধভাবে অর্জন করেছেন তিনি। সেই সঙ্গে ২০ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন।
এর আগে ২০১৯ সালের ২১ আগস্ট এই আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে দুদকের ঢাকা সমন্বিত কার্যালয়-১ এ মামলা করেন সংস্থাটির পরিচালক মঞ্জুর মোর্শেদ।
এমপি থাকা অবস্থায় জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মিজানের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ৭ মার্চ অনুসন্ধানে নামে দুদক। ওই বছরের ৭ এপ্রিল জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হয় তাকে। ১৬ এপ্রিল দুদক কার্যালয়ে মিজানকে প্রায় ৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
দুদকের মামলার এজাহারে বলা হয়, এমপি থাকাকালে ক্ষমতার অপব্যবহারসহ নানা দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও ভোগদখলে রাখায় তার বিরুদ্ধে দুদক আইন-২০০৪ এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছে।
এজাহারে বলা হয়, মিজান খুলনার বটিয়াঘাটার কৃষ্ণনগর মৌজায় ৯০ শতাংশ জমির মূল্য দেড় কোটি টাকা নির্ধারণ করে পরে ২০ লাখ টাকা বিনিময় করে দলিল সম্পাদন করেন। দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে জমি কেনার এই তথ্য উল্লেখ করা হয়নি।
ক্ষমতার অপব্যবহার করে, প্রভাব খাটিয়ে খুলনা সিটি করপোরেশন ও অন্যান্য অফিসের ঠিকাদারি কাজ বাগিয়ে নিয়ে নামমাত্র কাজ করে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগও রয়েছে মিজানের বিরুদ্ধে। ২০১৮ বছরের শুরুতে এই অভিযোগেরও তদন্ত করে দুদকের অনুসন্ধানি টিম।
মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার পাশাপাশি নামে-বেনামে বাড়ি, গাড়ি, ব্যাংকে জমানো মোটা অঙ্কের সম্পদ অর্জনের অভিযোগও ছিল মিজানের বিরুদ্ধে।
দুদকের প্রধান কার্যালয়ে কমিশনের উপ-পরিচালক ও অনুসন্ধান কর্মকর্তা মঞ্জুর মোর্শেদ মিজানকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। জিজ্ঞাসাবাদে এমপি মিজান অভিযোগ অস্বীকার করেন।
নিজের বক্তব্যের সমর্থনে দুদককে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রও দাখিল করেন বলে জানান মিজান। কীভাবে সম্পদের মালিক হয়েছেন সেসব প্রমাণও দিয়েছেন বলে দাবি তার।
দুদক বলছে, এমপি হওয়ার পর তিনি ১০ কোটি টাকা মূল্যের একটি বিশাল বাড়ি, খুলনা শহরতলিতে ৫০ কোটি টাকার জমি, স্ত্রীর নামে সোনাডাঙ্গায় ৫ কোটি টাকা মূল্যের তিন তালা বাড়ি করেন। সন্তানদের নামে বিঘা বিঘা জমিও আছে। রাজধানীর গুলশান ও ধানমণ্ডিতে রয়েছে আলিশান ফ্ল্যাট। এর বাইরে বেনামি সম্পদ রয়েছে কোটি কোটি টাকার।