ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের সময় গ্রেপ্তার হওয়া অর্থ পাচার মামলার আসামি গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সহ-সভাপতি এনামুল হক এনু ও তার ভাই সাবেক যুগ্ম সম্পাদক রুপন ভূঁইয়ার জামিন শুনানি শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে রায়ের জন্য আগামী ১৪ জুলাই দিন ঠিক করেছে হাইকোর্ট।
বুধবার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ দিন ঠিক করে দেয়।
আদালতে আসামিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন শাহরিয়ার কবির বিপ্লব। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন খুরশীদ আলম খান।
শাহরিয়ার কবির বিপ্লব নিউজবাংলাকে বলেন, দুটি মামলায় জামিন বিষয়ে রায়ের জন্য দিন ঠিক করে দিয়েছে আদালত। এর মধ্যে একটি মামলা অর্থপাচার এবং আরেকটি মামলা বিশেষ ক্ষমতা আইনে।
একটি মামলায় বলা হয়েছে, এনুর বাসায় ১৭ লাখ ১৬ হাজার ৩০০ টাকা, সঙ্গে ৫ হাজার ১৬৪ গ্রাম স্বর্ণ পাওয়া গেছে।
‘আমাদের বক্তব্য হচ্ছে ১৭ লাখ ১৬ হাজার ৩০০ টাকা কারো বাসায় পাওয়া যায়, তাহলে দেশের কোন আইন নাই, যে আইন বলে বাংলাদেশি টাকা ঘরে রাখায় কোন অপরাধের মধ্যে পড়ে। এখন অর্থপাচার হতে হলে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আসতে হবে। এমন কোন অভিযোগ আসেনি। অথচ ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে তাদের রিটার্ন দাখিলে দেখানো হয়েছে ১৯ কোটি টাকার উপরে। আর পরের বছর দেখানো হয়েছে ২০ কোটি টাকার উপরে। এখন কথা হলো বৈধ টাকা ঘরে থাকলে অপরাধের মধ্যে পড়ে কি?’
আরেকটি মামলায় রুপনের বাসায় এক কোটি ৯৯ লাখ টাকা পাওয়ার বিষয়ে তার আইনজীবী বলেন, ‘তারও ইনকাম ট্যাক্সে একই রকম রিটার্ন দাখিল করা হয়েছে। এখন কথা হলো, কারো বাসায় যদি টাকা পাওয়া যায় তাহলে অর্থপাচার হয় কী করে? এসব বিষয় আমরা আদালতে তুলে ধরেছি। আদালত রায়ের জন্য দিন ঠিক করে দিয়েছেন।’
ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে নাম আসা আলোচিত দুই ভাই এনু রুপন
ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে ২০১৯ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর গেন্ডারিয়ায় এনু-রুপনের বাড়িতে অভিযান চালায় র্যাব। তাদের বাসায় টয়লেটে স্বর্ণের কমোট পাওয়া যায়। সেখান থেকে বিপুল পরিমাণ নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার জব্দ করা হয়।
এরপর ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের কর্মচারী আবুল কালাম ও এনুর বন্ধু হারুন অর রশিদের বাসায় অভিযান চালানো হয়। ওই অভিযানে ৫ কোটি ৫ লাখ টাকা, ৮ কেজি স্বর্ণালঙ্কার ও ৬টি আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ করে র্যাব।
এরই ধারাবাহিকতায় গত বছরের ১৩ জানুয়ারি এনু ও রুপনকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেই থেকে তারা কারাবন্দী।
২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুজনের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করে দুদক। তদন্ত শেষে দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে ৮৫ কোটি টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে।
এনুর বিরুদ্ধে ৪৭ কোটি ৩৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৭৮ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ এবং তার ভাই রুপন ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে ৩৭ কোটি ৫৭ লাখ ১৬ হাজার টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
এনু-রুপনের বিরুদ্ধে অর্থপাচার আইনে পাঁচটি মামলা হয়। সেগুলোর মধ্যে চারটি মামলার তদন্ত শেষ করে অভিযোগপত্র দিয়েছে সিআইডি।