বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

করোনা টিকার প্রযুক্তি উন্মুক্ত করার দাবি প্রধানমন্ত্রীর

  •    
  • ২২ জুন, ২০২১ ১৯:২৮

‘আমরা আশা করি, কোভিড-১৯-এর টিকাকে বৈশ্বিক সাধারণ মানুষের পণ্য ঘোষণা করা হবে এবং উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে টিকা উৎপাদনের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেয়া হবে।’

করোনা টিকাকে শিগগিরই সাধারণ মানুষের পণ্য ঘোষণা করা হবে বলে আশা রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেছেন, ডিজিটাল বিভক্তি ঠেকাতে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনকে উন্মুক্ত করতে হবে।

মঙ্গলবার বিকেলে কাতার ইকোনমিক ফোরামে ধারণকৃত বক্তব্যে এ আশা প্রকাশ করেন তিনি।

বাংলাদেশের সরকারপ্রধান বলেন, ‘কোভিড-১৯ মহামারি এরই মধ্যে একাধিক ধাক্কা ও ভঙ্গুরতা সৃষ্টির মাধ্যমে বিশ্বের স্বরূপ উন্মোচন করেছে। এরই মধ্যে এটি লাখ লাখ প্রাণ কেড়ে নিয়েছে এবং অর্থনীতিকে করেছে ক্ষতবিক্ষত। এই কঠিন মুহূর্তে শক্ত বৈশ্বিক সহযোগিতার বিকল্প নেই।

‘আমরা আশা করি, কোভিড-১৯-এর টিকাকে বৈশ্বিক সাধারণ মানুষের পণ্য ঘোষণা করা হবে এবং উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে টিকা উৎপাদনের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেয়া হবে।’

করোনাভাইরাসে টালমাটাল বিশ্ব এখন টিকার দিকে তাকিয়ে থাকলেও উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো টিকার ফর্মুলা কাউকে দিতে রাজি নয় এখনও। আবার উন্নত বিশ্বে চাহিদার চেয়ে বেশি টিকার মজুতের সময় তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে তৈরি হয়েছে হাহাকার।

বাংলাদেশ অগ্রিম টাকা দিয়েও ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে টিকা পাচ্ছে না। সে দেশে করোনা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় সরকার রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। আবার ভারত পর্যাপ্ত টিকা উৎপাদন করতে পারছে না যুক্তরাষ্ট্র কাঁচামাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রাখায়।

এ অবস্থায় টিকার জন্য চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি করার চেষ্টায় সরকার। আমদানির পাশাপাশি দেশেও উৎপাদনে আগ্রহী বাংলাদেশ। তবে দেশ দুটি প্রযুক্তি দেবে কি না, তা নিশ্চিত নয় এখনও।

এর বাইরে টিকা পাওয়ার আরেকটি উদ্যোগ কোভ্যাক্স থেকেও প্রত্যাশিত সহায়তা পাচ্ছে না স্বল্প আয়ের ও উন্নয়নশীল দেশগুলো। ন্যায্যতার ভিত্তিতে সারা বিশ্বে টিকা বিতরণে গড়ে ওঠা জোট উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত দেশকে তাদের জনসংখ্যার ২০ শতাংশের জন্য টিকা দেয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছিল।

প্রধানমন্ত্রী মনে করেন, মহামারি থেকে কোনো দেশ একা বাঁচতে পারবে না। অন্যদের ঝুঁকিতে রেখে নিজেদের বিপদমুক্ত ভাবা যাবে না। ফলে এই সময়ে পারস্পরিক সহযোগিতা জরুরি।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের সামনে প্রতিবন্ধকতাগুলো দৃশ্যমান। সামষ্টিক উন্নয়নে আমাদের অতি দ্রুত বাণিজ্য, ব্যবসা ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে সমন্বিত পরিকল্পনা এবং প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে।’

মহামারির মধ্যেও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের বিষয়টিও তুলে ধরেন তিনি। বলেন, ‘গত এক দশকে বাংলাদেশ ধারাবাহিকভাবে ৬ ভাগেরও বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। আমরা এরই মধ্যে এলডিসি উত্তরণে চূড়ান্ত মনোনয়ন লাভ করেছি। বর্তমান মহামারির সঙ্গে লড়াইয়ে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি জীবন ও জীবিকার মধ্যে সমন্বয় সাধনের।

‘আমাদের সরকার এখন পর্যন্ত ১৫ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলারের বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। মহামারির মধ্যেও আমাদের জিডিপি বৃদ্ধির হার ২০২০-২১ অর্থবছরে ৬.১ ভাগে পৌঁছেছে, যেটি বিশ্বে সর্বোচ্চ।’

দেশে বিনিয়োগের চমৎকার পরিবেশের কথা তুলে ধরে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বানও জানান শেখ হাসিনা। বলেন, ‘এখানে বিনিয়োগে বিভিন্ন প্রণোদনাও দেয়া হচ্ছে। কাতার এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো এই সুযোগ গ্রহণ করতে পারে। বিশেষ করে অবকাঠামো নির্মাণ, আইসিটি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, হালকা প্রকৌশল এবং ওষুধ, পাট ও কৃষি খাতে সুযোগ রয়েছে।’

কোভিড-পরবর্তী অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে ছয়টি পরামর্শও দেন শেখ হাসিনা। এগুলো হলো:

১. প্যারিস চু্ক্তির লক্ষ্য পূরণে আমাদের উচ্চাকাঙ্ক্ষী জলবায়ু পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে।

২. ডিজিটাল বিভক্তি ঠেকাতে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনকে উন্মুক্ত করতে হবে।

৩. বৈশ্বিক বাণিজ্য এবং রপ্তানি আয় বৃদ্ধি পুনরুজ্জীবিত করতে আমাদের আন্তর্জাতিক সহযোগিতার লক্ষ্য নির্ধারণ প্রয়োজন।

৪. এই অঞ্চলের ঝুঁকির মুখে থাকা অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য সংশ্লিষ্ট দেশ এবং শীর্ষ ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের পরিকল্পনা গ্রহণ।

৫. মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য আবশ্যিকভাবে নতুন আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

৬. সমন্বিত উন্নয়নের জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক, টেকসই এবং সামগ্রিক পরিকল্পনা গ্রহণ।

এ বিভাগের আরো খবর