বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ময়মনসিংহ থেকে গাড়ি ঢুকতে পারছে না গাজীপুরে

  •    
  • ২২ জুন, ২০২১ ১৪:৩৫

গাজীপুরে সড়কে সাধারণ পরিবহন চলাচল কম থাকলেও মানুষের চলাচল ছিল অন্যান্য দিনের মতোই। গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও জেলাজুড়ে অটোরিকশাসহ অন্যান্য যান চলতে দেখা গেছে।

সরকারি সিদ্ধান্তে করোনাভাইরাস সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, গাজীপুর, মাদারীপুর, রাজবাড়ী ও গোপালগঞ্জে লকডাউন দেয়া হয়েছে। আগামী ৩০ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত এ নির্দেশনা কার্যকর থাকবে।

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কও মঙ্গলবার সকাল থেকেই অনেকটা ফাঁকা। যাত্রীর সংখ্যা কম থাকার কারণে যানবাহনও কম।

তবে ময়মনসিংহ থেকে ছেড়ে আসা কিছু যানবাহন গাজীপুরের জৈনাবাজার ইউটার্নে আটকে দিচ্ছে পুলিশ। সেখানে যাত্রীদের নামিয়ে আবার যানবাহন ফিরে আসায় নগরীর পাটগুদাম বাস টার্মিনালে যানবাহনের কিছুটা চাপ বেড়েছে বলে জানিয়েছে ট্রাফিক পুলিশ।

সরেজমিনে পাটগুদাম বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, অন্যান্য দিনের চেয়ে বাসের সংখ্যা কম। তবে, যে বাসগুলো চলছে, সবগুলোই তাড়াতাড়ি ফিরে আসছে টার্মিনালে। ট্রাক, সিএনজি, মাহিন্দ্রা ও ব্যক্তিগত প্রাইভেট কার থাকলেও তা স্বাভাবিক দিনের চেয়ে অনেক কম।

বাসের কয়েকজন চালক জানান, সব ধরনের যাত্রীবাহী যানবাহন গাজীপুর জেলার জৈনাবাজার ইউটার্নে ভোর ৬টা থেকে আটকে দেয়া হচ্ছে। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।

তবে পণ্যবাহী যান, রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স ও পোশাকশ্রমিক বহনকারী গাড়িগুলোকে বাধা দেয়া হচ্ছে না।

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ জেলা ট্রাফিক পুলিশের টিআই (প্রশাসন) সৈয়দ মাহবুবর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আজকে গণপরিবহনের অনেক গাড়ি চলাচল করছে না। যে গাড়িগুলো ঢাকায় যেত, সেগুলো জৈনাবাজার থেকেই ময়মনসিংহে ফিরে আসছে। মাঝে মাঝে জটলা বেঁধে যাওয়ায় ট্রাফিক পুলিশ যান চলাচল স্বাভাবিক করতে কাজ করছে।

ময়মনসিংহ থেকে ছেড়ে আসা কিছু যানবাহন গাজীপুরের জৈনাবাজার ইউটার্নে আটকে দিচ্ছে পুলিশ। ছবি: নিউজবাংলা

গাজীপুর

গাজীপুরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মঙ্গলবার ভোর থেকেই জেলা ও মহানগরের বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নিতে দেখা গেছে।

সড়কে সাধারণ পরিবহন চলাচল কম থাকলেও মানুষের চলাচল ছিল অন্যান্য দিনের মতোই। গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও জেলাজুড়ে অটোরিকশাসহ অন্যান্য যান চলতে দেখা গেছে।

সকাল থেকে বৃষ্টি থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে মানুষের চলাচল। শিল্প-কারখানা খোলা থাকায় শ্রমিকদের চলাচল দেখা গেছে। যানবাহন না পেয়ে পায়ে হেঁটেই কর্মস্থলে গেছেন শ্রমিকরা।

অনেক প্রতিষ্ঠান তাদের নিজস্ব পরিবহনের মাধ্যমে শ্রমিকদের আসা-যাওয়ার ব্যবস্থা করেছে। বিধিনিষেধে দোকানপাট ও শপিং মল বন্ধের নির্দেশনা থাকলেও গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় দোকানপাট ও শপিং মল খোলা রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, কঠোর লকডাউনকে কেন্দ্র করে বিশেষ প্রস্তুতি নিয়েছে গাজীপুর জেলা প্রশাসন ও সিভিল সার্জন অফিস। প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা ও মহানগর পুলিশও।

এরই মধ্যে মঙ্গলবার ভোর থেকে বন্ধ করে দেয়া হয় জেলার সকল প্রবেশদ্বার। গাজীপুরের সবগুলো রেল জংশনে বন্ধ রয়েছে যাত্রী ওঠা-নামা।

সকাল থেকে পুলিশ রাজধানীর আব্দুল্লাহপুর-টঙ্গী ব্রিজ, কামারপাড়া, নরসিংদী সীমান্তে ঘোড়াশাল ব্রিজ, ময়মনসিংহ সীমান্তে জৈনাবাজার, কালিয়াকৈরসহ শহরের কয়েকটি পয়েন্টে কঠোরভাবে অবস্থান নিয়েছে। এসব চোকপোস্টে সকল যানবাহন ফিরিয়ে দেয় পুলিশ।

জরুরি সেবা, পণ্যবাহী যান, রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সসহ বিধিনিষেধের আওতাবহির্ভূত যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

তবে হাইওয়ে পুলিশ জেলার মহাসড়কগুলোতে যাত্রীবাহী যানবাহন আটকে দেয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন গাজীপুর জেলার বাইরে থেকে আসা যাত্রীরা।

পরিবহনের চালকসহ যাত্রীদের অনেকেই লকডাউনের তথ্য জানেন না বলে দাবি করেছেন।

গাজীপুর থেকে রাজধানীর উত্তরায় অফিস করেন সাখাওয়াত হোসেন রবিন। তিনি বলেন, ‘সকালে অফিসে যাওয়ার সময় কোনো পরিবহন না পেয়ে অটোরিকশা করে টঙ্গী ব্রিজ পর্যন্ত যাই। সেখানে পুলিশ সদস্যরা অটোরিকশা থেকে নামিয়ে দেন। পরে বাধ্য হয়ে পায়ে হেঁটে উত্তরা এসে সেখান থেকে অন্য রিকশা নিয়ে কোনোমতে অফিসে পৌঁছেছি।’

হাইওয়ে থানার সহকারী উপপরিদর্শক আতিকুল ইসলাম জানান, গাজীপুর ও ময়মনসিংহের সীমান্ত এলাকা জৈনা বাজারে যানবাহনের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। সরকারি নির্দেশে পণ্যবাহী ও অনুমোদিত গাড়ি ছাড়া কোনো গাড়ি গাজীপুরে প্রবেশ ও বের হতে দেয়া হচ্ছে না।

টঙ্গী রেল জংশনের স্টেশন মাস্টার মো. হালিমুজ্জামান জানান, লকডাউনের কারণে মঙ্গলবার সকাল থেকে গাজীপুরের জয়দেবপুর ও টঙ্গী রেল স্টেশনে কোনো ট্রেন থামেনি। এ ছাড়াও বন্ধ রয়েছে গাজীপুর থেকে কমলাপুর রুটে চলাচল করা তুরাগ ডেমো ও কালিয়াকৈর কমিউটার ট্রেন।

অনেক যাত্রী স্টেশনে এসে ট্রেন না পেয়ে ফিরে গেছেন বলেও জানান তিনি।

লকডাউন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ শেষে উপকমিশনার মোহাম্মদ ইলতুৎ মিশ বলেন, ‘গাজীপুরে ৯ দিনের কঠোর লকডাউন শুরু হয়েছে। সে লক্ষ্যে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ শহরের প্রবেশদ্বারগুলোতে চেকপোস্ট বসিয়ে যান চলাচল ও সাধারণ মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করছে। ঢাকায় আসা-যাওয়ার সময় পুলিশের চেকপোস্টে পড়তেই হবে। আমরা চাই একটা কমপ্লিট লকডাউন।’

এদিকে জেলার স্বাস্থ্য বিভাগের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে যোগাযোগ করা হলে জেলা সিভিল সার্জন ডা. খাইরুজ্জামান বলেন, ‘এখন পর্যন্ত গাজীপুরে করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়নি। রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আম নিয়ে আসা আড়তদার ও ব্যবসায়ীদের গাজীপুরের প্রবেশপথগুলোতে করোনার নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে।

জেলার কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতাল শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে করোনার চিকিৎসায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বর্তমানে সেখানে করোনা ইউনিটে ১৭ জন রোগী চিকিৎসাধীন।

এ বিভাগের আরো খবর