ছোট ভাই হত্যার ঘটনায় ১২ বছর বয়সী সৌরভের কাছ থেকে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি আদায়ের ঘটনা সত্য হয়ে থাকলে তা দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছে হাইকোর্ট।
বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার এ মন্তব্য করে।
আদালত বলে, ‘এটা তো দুঃখজনক। যদি এমন ঘটনা ঘটে থাকে এবং এটি যদি সত্য হয়, তাহলে সেটি আমাদের দেশের জন্য দুঃখজনক। আমরা এখনও জানি না কী ঘটেছে।’
ওই সময় রাষ্ট্রপক্ষকে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়ার কথা বলে আদালত।
‘পুলিশের ভুলে ১২ বছরের শিশুর ঘাড়ে ছোট ভাই হত্যার দায়’ শিরোনামে একটি পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়। ওই সংবাদ যুক্ত করে হাইকোর্টে আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শিশির মনির।
ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে দুই বিচারকের হাইকোর্ট বেঞ্চ মন্তব্য করে। আদালত ২৯ জুন পরবর্তী শুনানি ও আদেশের জন্য দিন ঠিক করে দেয়।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. বশির উল্লাহ।
শুনানিতে আইনজীবী শিশির মনির বলেন, ‘একজন বাবা তার এক সন্তানকে হারালেন। ওই সন্তান হত্যার অভিযোগে বড় ছেলে যার বয়স ১২ বছর, সে হয় আসামি। উল্টো বাড়িঘরও ছাড়তে হয়েছে সন্তানের বাবা-মাকে। ঘটনাটি একটি মানবিক ঘটনা।’
আইনজীবী বলেন, ‘১২ বছরের একটি শিশুকে নির্যাতন করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নিয়ে নেয়া হলো। শিশু আদালতের সামনে এলো। অথচ আইন থাকা সত্ত্বেও কোনো পদক্ষেপ নাই।
‘এই কারণে বিষয়টি দেখভালের জন্য আমরা আপনাদের কাছে এসেছি, যাতে ঘটনার সঠিক তদন্ত হয়ে সুষ্ঠু বিচার সম্পন্ন হয়।’
পরে আদালত রাষ্ট্রপক্ষকে শুনে ২৯ জুন পরবর্তী দিন ঠিক করে দেয়।
পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৫ সাল থেকে ছোট ভাইকে হত্যার দায় নিয়ে ঘুরতে হচ্ছে ১২ বছর বয়সী বড় ভাইকে। সে বছর ২৫ আগস্ট বগুড়ার কাটাখালী গ্রামের একটি পাটক্ষেত থেকে উদ্ধার করা হয় মহিদুল ইসলামের ছেলে সোহাগের মরদেহ। এরপর জিজ্ঞাসাবাদের কথা বলে পুলিশ বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায় বড় ভাই সৌরভকে। জোর করে হত্যার স্বীকারোক্তিও নেওয়া হয়।
এ মামলায় এখন বাড়িছাড়া পুরো পরিবার। এদিকে সন্তান হত্যা এবং আরেক সন্তানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার অভিযোগ থেকে রক্ষা করতে ধারে ধারে ঘুরে কোনো সহায়তা না পেয়ে দিশেহারা পরিবারটি।