১০ মাত্রার ভূমিকম্পের ক্ষতি মোকাবিলার প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান।
বৃহস্পতিবার সিলেট জেলা পরিষদ মিলনায়তনে ভূমিকম্প ঝুঁকিহ্রাস বিষয়ক অবহিতকরণ সভায় তিনি এ আহ্বান জানান।
ডা. এনামুর বলেন, ‘ভূমিকম্প ঠেকানোর কোনো উপায় নেই। তবে ক্ষয়ক্ষতি আমরা চাইলেই কমিয়ে আনতে পারি। রিখটার স্কেলে ১০ মাত্রার ভূমিকম্প হলেও যেনো কোনো মানুষ না মারা যায়, যেনো কোনো ভবন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেই রকম প্রস্তুতি নিতে হবে। এটা সম্ভব তা দেখিয়ে দিয়েছে জাপান। জাপান এখন ভূকিম্পসহনীয় দেশে পরিণত হয়েছে।’
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসিনের সভাপতিত্বে সভায় জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনের কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞরা বক্তব্য দেন।
সিলেটে গত ২৯ ও ৩০ মে ৫ দফা এবং ৭ জুন আরও ২ দফা ভূমিকম্প হয় । দফায় দফায় এই ভূমিকম্পের প্রেক্ষিতে এ সভার আয়োজন করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। এতে সহযোগিতা করে সিলেট জেলা প্রশাসন ও জাইকা।
সিলেটে ঘনঘন ভূমিকম্পের পর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এ সভার আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘সিলেট দেশের সবচেয়ে ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা। এখানে ৫টি সক্রিয় চ্যুতি (ফল্ট) রয়েছে। এ কারণে সিলেটকে ঘিরে আলাদা পরিকল্পনা নেয়া হবে। এখানে নকশা অনুমোদন ছাড়া কোনো ভবন যেনো গড়ে না ওঠে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
‘যেসব ভবন এরই মধ্যে নির্মাণ হয়ে গেছে সেগুলো ভূমিকম্প সহনীয় কিনা পরীক্ষা করে ত্রুটিপূর্ণ ভবন মেরামতের উদ্যোগ নিতে হবে। এজন্য মেয়র, উপজেলা চেয়ারম্যানসহ জনপ্রতিনিধিদের সচেষ্ট হওয়া প্রয়োজন।’
ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে জাইকার সহযোগিতার আশ্বাসের কথা উল্লেখ করে ডা. এনামুর বলেন, ‘এরই মধ্যে আমরা ক্ষতি মোকাবিলায় সক্ষমতা বাড়িয়েছি। ফায়ার সার্ভিস ও সশস্ত্রবাহিনীকে অনেক সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি দেয়া হয়েছে। ফলে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। তবে সতর্ক হতে হবে।’
সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী সভায় ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে কয়েকটি প্রস্তাব তুলে ধরেন।
সভায় বক্তব্য দেন সিলেটের জেলা প্রশাসক এম. কাজী এমদাদুল ইসলাম, ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাজ্জাদ হোসেন, আবহাওয়া অফিসের পরিচালক শামসুদ্দিন আহমদ, সেনাবাহিনীর ১৭ পদাতিক ডিভিশনের কর্মকর্তা লেফটেনেন্ট কর্নেল মিজান, গণপূর্ত বিভাগের অতিরিক্ত নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম, সিলেট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লুৎফুর রহমান, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ, বুয়েটের অধ্যাপক তাহমিন এন হোসেন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জহির বিন আলম ও ড. শারমিন রেজা চৌধুরী ও জাইকার প্রতিনিধি নাওকি মাথসুমুরা।