কানাডার ‘বেগমপাড়ায়’ বাড়ি নির্মাণকারী এবং কানাডাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অর্থপাচারকারী বাংলাদেশিদের নামের তালিকা প্রকাশ করতে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) স্মারকলিপি দিয়েছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয়ে কমিশনের সচিব মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদারের কাছে এ স্মারকলিপি দেয়া হয়।
এতে বলা হয়, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের অধিকার আদায়ের আন্দোলনের পাশাপাশি সমাজ ও রাষ্ট্রের সব অনিয়ম-অসঙ্গতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে আসছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।
এরই ধারাবাহিকতায় দেশের অর্থ বিদেশে পাচারকারী দুর্নীতিবাজদের নামের তালিকা জাতির সামনে দ্রুত প্রকাশ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।
বিদেশে অর্থপাচারকারীরা দেশ-জাতির শত্রু উল্লেখ করে স্মারকলিপিতে বলা হয়, ‘রাষ্ট্রের বিভিন্ন স্তরে দুর্নীতি, অনিয়ম ও অর্থপাচার পরিলক্ষিত হচ্ছে, যা সম্পূর্ণভাবে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পরিপন্থি। এই দুর্নীতিবাজদের দেশবিরোধী কর্মকাণ্ড আমরা কখনোই মেনে নিতে পারি না।
‘বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে দুর্নীতিবাজদের কোনো ঠাঁই নেই। তাই দ্রুত এসব দুর্নীতিবাজদের বিচার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।’
কানাডাসহ বিভিন্ন দেশে অর্থপাচারকারীরা ‘নব্য রাজাকার’ বলেও স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
সম্প্রতি জাতীয় সংসদে বক্তৃতাকালে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল অর্থপাচার বন্ধে এক প্রকার অসহায়ত্ব প্রকাশ করেন। বলেন, দেশের মানুষের কষ্টার্জিত টাকা বিদেশে চলে গেলে অন্যদের মতো তারও বেদনার অনুভূতি হয়।
মন্ত্রী বাংলাদেশ থেকে যারা অর্থপাচারে জড়িত, তাদের নামের তালিকা আহ্বান করেন বিরোধী দলের সাংসদদের কাছে। বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে টাকা যায়। কীভাবে যায় এটা আমি বুঝতে পারি। কিন্তু কারা নেয় এটা জানি না। কারা টাকা নিয়ে যায়, লিস্ট আমার কাছে নেই। নামগুলো আমাদের দেন। কাজটি করা আমাদের জন্য সহজ হবে।’
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, অর্থপাচারকারীদের একাধিক তালিকা এই মুহূর্তে সরকারের হাতেই আছে। অর্থমন্ত্রীর নিজের মন্ত্রণালয়ের অধীন একাধিক সংস্থাসহ সরকারের কয়েকটি সংস্থা ও মন্ত্রণালয় এসব তালিকা তৈরি ও সংগ্রহ করেছে।
কয়েক মাস আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এক সংবাদ সম্মেলনে কানাডায় অর্থপাচারকারী ২৮ জনের একটি তালিকা ওই দেশের সরকারের কাছ থেকে সংগ্রহ করেছেন বলেও জানিয়েছিলেন। কানাডার প্রবাসী বাংলাদেশিরাও দীর্ঘদিন ধরে সে দেশে টাকা পাচারকারী বাংলাদেশিদের প্রতিরোধে আন্দোলন করে যাচ্ছেন।
অর্থপাচারকারীদের বিষয়ে তদন্ত করার দায়িত্বে সরকারের যেসব সংস্থা আছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ), এনবিআরের সেন্ট্রাল ইন্টিগ্রেশন সেল (সিআইসি) এবং দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।