বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বাড়ি পাচ্ছে আরও ৫৩ হাজার পরিবার

  •    
  • ১৭ জুন, ২০২১ ১৯:২৫

বাড়িসহ জমি স্বামী-স্ত্রীর নামে রেজিস্ট্রি করে দেয়া হচ্ছে। প্রয়োজন মনে করলে এই জমিতে ভবিষ্যতে তারা নিজেদের মতো করে বাড়ি করে নিতে পারবেন। তবে জমি অন্য কারও কাছে হস্তান্তর করা যাবে না। বিষয়টি নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসনের নজরদারিও থাকবে।

মুজিববর্ষে দ্বিতীয় দফায় ৫৩ হাজার ৩৪০ ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দিচ্ছে সরকার।

প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা, ‘মুজিববর্ষে কোনো মানুষ গৃহহীন থাকবে না’ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবেই এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ প্রকল্প দুই-এর আওতায় এ ঘরগুলো পাবেন গৃহহীন দরিদ্র পরিবারগুলো।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ কার্যক্রম শুরু করবেন।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সরকারপ্রধানের মুখ্য সচিব আহমেদ কায়কাউস বৃহস্পতিবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।

কায়কাউস বলেন, ‘এ ছাড়াও এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে আরও এক লাখ ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে বিনা মূল্যে জমিসহ ঘর দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে।’

‘এসব গৃহহীন, ভূমিহীন, ছিন্নমূল পরিবারকে শুধু সেমিপাকা ঘরই দেয়া হচ্ছে না। সঙ্গে সঙ্গে স্বামী-স্ত্রীর যৌথ নামে জমির মালিকানাসহ সারা জীবনের জন্য স্থায়ী ঠিকানা দেয়া হচ্ছে। এতে তাদের জীবনযাত্রার মানের পরিবর্তন এসেছে। নারীর ক্ষমতায়নও হচ্ছে।’

মুজিববর্ষে কোনো মানুষ গৃহহীন থাকবে না বলে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার। লক্ষ্যমাত্রার আওতায় প্রথম পর্যায়ে ২৩ জানুয়ারি ৬৯ হাজার ৯০৪টি পরিবারকে বিনা মূল্যে ঘর দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আশ্রয়ণ প্রকল্পের কর্মকর্তারা জানান, প্রতিটি বাড়িতে দুটি করে বেডরুম, একটি রান্নাঘর, একটি টয়লেট ও একটি বারান্দা থাকবে।

প্রতিটি বাড়ির নির্মাণে খরচ হচ্ছে এক লাখ ৭১ হাজার টাকা। প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে এ প্রকল্পে খরচ হয়েছে ২ হাজার ২৩৬ কোটি ৩৭ লাখ টাকা।

কায়কাউস বলেন, ‘এটার অন্য দিক হলো, এতে এমপাওয়ারমেন্ট হচ্ছে। একটা লোক যখন রাস্তায় ঘুরে বেড়িয়েছে, মাথায় ছাদ ছিল না, পায়ের নিচে মাটি ছিল না, সে কিন্তু লাখপতি হয়ে যাচ্ছে। জমির মূল্য যদি আমরা হিসাব করি, ৩০ হাজার থেকে ৮ লাখ টাকা প্রতি শতকের দাম পড়ে।’

‘গড়ে ধরলে, ৫০ হাজার টাকা যদি ধরি জমির মূল্য, ২ লাখ টাকা বাড়ি বানাতে খরচ হচ্ছে। বিদ্যুৎ, গ্যাস মিলিয়ে প্রায় ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা সম্পত্তির মালিক হচ্ছে একটি দরিদ্র পরিবার। পাশাপাশি তাদের মাছ চাষ, হাঁস-মুরগি পালন—এসব বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘সরকারি অনেক জমিই অবৈধ দখলে ছিল। সেগুলো উদ্ধার করে দরিদ্র পরিবারগুলোকে পুনর্বাসন করা হচ্ছে। আপনারা রোববার দেখতে পাবেন, শ্রীমঙ্গলে প্রায় ৩৩ একর জমি অবৈধ দখলে ছিল, সেটাতে এখন একটা নান্দনিক পরিবেশ তৈরি হয়েছে।’

‘দ্বিতীয় পর্যায়ে ঘরগুলো হস্তান্তরে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। রোববার প্রধানমন্ত্রী এটা উদ্বোধন করবেন,’ যোগ করেন তিনি।

এখানেই হয়তো ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার জন্মাবে

আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে ভূমিহীনদের যে ঘর দেয়া হচ্ছে, সরকার আশা করছে, সেখান থেকেই একদিন ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ারের জন্ম হবে। সংবাদ সম্মেলনে মুখ্য সচিব আহমেদ কায়কাউস এ আশা ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা প্রত্যাশা করি, যারা এ বাড়িগুলোতে বসবাস করেন, এই বাড়িতেই একদিন ইঞ্জিনিয়ার জন্ম নেবে, ডাক্তার জন্ম নেবে, ম্যাজিস্ট্রেট জন্ম হবে বা রাজনীতিবিদ-মন্ত্রী জন্ম হবে।’

তিনি বলেন, ‘যারা বাড়িগুলো বরাদ্দ পেয়েছেন এগুলোর মালিকানা তাদেরই। আর তারা চাইলে ভবিষ্যতে বাড়িগুলো ভেঙে আরও উন্নত বাড়ি তৈরি করতে পারবেন।

মুখ্য সচিব কায়কাউস বলেন, ‘যে ভূখণ্ডে তাদের পুনর্বাসন করা হয়েছে সেটা কিন্তু তাদের নামে রেজিস্ট্রি করে দেয়া। এতে অনেকে হয়তো অজ্ঞতার জন্য বুঝতে পারছেন না কী করবেন। কিন্তু এখানে তার পূর্ণ অধিকার রয়েছে।’

‘কেউ যদি মনে করে ভবিষ্যতে অন্যরকম বাড়ি করবে, সেটাও সে করতে পারবে। কারণ সরকার কিন্তু তাকে বাড়ি-জমিসহ দিয়ে দিয়েছে।’

তিনি জানান, আশ্রয়ণ প্রকল্পে যাদের পুনর্বাসন করা হচ্ছে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। দেয়া হচ্ছে প্রশিক্ষণও।

তিনি বলেন, ‘আমরা গৃহ নির্মাণের জন্য যে জায়গাগুলো সিলেক্ট করেছি, সেগুলো গ্রোথ সেন্টারের পাশে। এর আগে আমরা দেখেছি, ভূমি মন্ত্রণালয় যখন চরাঞ্চলে পুনর্বাসন করেছিল তখন কেউ সেখানে থাকতে আগ্রহী হচ্ছিলেন না। এ কারণে সচেতনভাবেই আমরা চেষ্টা করছি তারা যেন কাজ পায় এমন জায়গায় তাদের বাড়ি দিতে।’

‘প্রথম পর্যায়ে যে ৭০ হাজার পরিবারকে ঘর দেয়া হয়েছে সেখানে বেশির ভাগেরই কর্মসংস্থান হয়েছে। ঘরের আঙিনাতে অনেকে চাষাবাদ করছেন, কেউ হয়তো ছোট করে দোকান শুরু করেছেন, মুরগি-ছাগল এগুলো পালন করছেন।’

প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সচিব তোফাজ্জল হোসেন সংবাদ সম্মেলনে জানান, মালিকানা থাকলেও চাইলেই কেউ জমিগুলো অন্য কারও কাছে হস্তান্তর করতে পারবে না।

তিনি বলেন, ‘এই জমিগুলো তাদের দিয়ে দেয়া হয়েছে। তাদের মিউটেশন বা নামজারিও করে দেয়া হয়েছে, সরেজমিনে দখলও দিয়েছি। এই জমিগুলোতে মুজিব শতবর্ষের একটা সিল দেয়া আছে। উপজেলা প্রশাসন বা জেলা প্রশাসনকে বলা আছে, যদি এটা কেউ অন্যায়ভাবে বা জোর করে হস্তান্তর করতে যায় এটা যাতে সহজে ট্র্যাক করা যায়, সেই ব্যবস্থা রাখতে।’

‘ফলে এটি হস্তান্তর করতে গেলেই জানাজানি হয়ে যাবে। এ পর্যায়ে হস্তান্তরের কোনো সুযোগ নেই। আইডেন্টিফাই করার কিছু চিহ্ন কিন্তু প্রত্যেক দলিলে আমরা ব্যবহার করেছি।’

এ বিভাগের আরো খবর