বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘ধর্মনিরপেক্ষতা সংবিধানের বড় অসংগতি’

  •    
  • ১৭ জুন, ২০২১ ১৪:২৪

হারুনুর রশীদ বলেন, ‘বাংলাদেশের সিংহভাগ মানুষ মুসলমান। ৯০ ভাগ মানুষ ইসলাম ধর্ম অনুসারী। আমাদের ধর্ম কোরআন। আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি কোরআনে ধর্মনিরপেক্ষতার কোনো স্থান নাই। এটি সংবিধানের বড় অসংগতি।’

দেশের সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে ধর্মনিরপেক্ষতা রাখাকে অসংগতি হিসেবে দেখছেন বিএনপির সংসদ সদস্য (এমপি) হারুনুর রশীদ।

জাতীয় সংসদের অধিবেশনে বৃহস্পতিবার ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এই মত দেন।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে সে সময় উপস্থিত ছিলেন সংসদনেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

হারুনুর রশীদ বলেন, ‘সংবিধানে বলা হচ্ছে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা। আজকে আমরা সেই জায়গায় আছি? আজকে এগুলার কোনটার চর্চা আছে?

‘বাংলাদেশের সিংহভাগ মানুষ মুসলমান। ৯০ ভাগ মানুষ ইসলাম ধর্ম অনুসারী। আমাদের ধর্ম কোরআন। আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি কোরআনে ধর্মনিরপেক্ষতার কোনো স্থান নাই। এটি সংবিধানের বড় অসংগতি।’

সংবিধানের দ্বিতীয় ভাগে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি অংশে বলা হয়েছে, ‘জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা—এই নীতিসমূহ এবং তৎসহ এই নীতিসমূহ হইতে উদ্ভূত এই ভাগে বর্ণিত অন্য সকল নীতি রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি বলিয়া পরিগণিত হইবে।’

‘মৌলিক অধিকারের কি অস্তিত্ব আছে?’

সংবিধান প্রদত্ত মৌলিক অধিকারগুলোর বাস্তবায়ন না হওয়া নিয়ে আক্ষেপ করেন হারুন।

তিনি বলেন, ‘সংবিধানের তৃতীয় অনুচ্ছেদে মৌলিক অধিকারের যে বিষয়গুলো রয়েছে, সভা-সমাবেশের কথা বলা আছে, এগুলোর কি কোনো অস্তিত্ব আছে? আজকে ভিন্নমত প্রকাশের কোনো স্বাধীনতা আছে? ভিন্নমত কোনো মানুষ প্রকাশ করতে পারছে?

‘রাষ্ট্রপতি নির্বাহী ক্ষমতার অধিকারী। সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদে ক্ষমতা দেয়া আছে; যেকোনো দণ্ডিত আসামিকে ক্ষমা করার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে।’

তিনি বলেন, “মহাজোট সরকারের আমলে প্রায় ৪০ থেকে ৫০ জন খুনের দণ্ডিত আসামিদেরকে ক্ষমা করা হয়েছে। এটি অত্যন্ত নাড়া দিয়েছে বিশ্বকে। কিছুদিন আগে আল জাজিরায় ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন’ নামে যে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, এতে গোটা বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। এটিও সংবিধানের একটি অসংগতি। সংবিধানের ত্রুটিগুলো সংশোধন হওয়া দরকার।”

খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিক কারণে সাজা দেয়া হয়েছে মন্তব্য করে বিএনপির এই এমপি বলেন, ‘সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। রাজনৈতিক কারণে মাত্র দুই বছরের সাজা দিয়েছেন। আপনি তাকে চিকিৎসার সুযোগটা দিচ্ছেন না।

‘আর বাংলাদেশের দণ্ডিত জঘন্যতম আসামি তাদেরকে মাফ করে দিচ্ছেন। এটি হতে পারে না। অবশ্যই তার পরিবারের পক্ষ থেকে সুচিকিৎসার জন্য আবেদন করেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি তাকে অবশ্যই সুচিকিৎসার সুযোগ দিবেন।’

জাতীয় পার্টির সমালোচনা

প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টিকেও একহাত নেন হারুন।

তিনি বলেন, ‘জাতীয় সংসদের সরকারি দল ও বিরোধী দল সবাই মিলে একাকার। আমাদের বিরোধীদলীয় নেতা বাইরে বলছেন, বিরোধী দলের কোনো মূল্য নাই।

‘সরকারি দলের কোনো মূল্য আছে? সরকারি দলের মন্ত্রীরা বারবারই বলছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী ছাড়া আর কেউ অপরিহার্য নয়। এভাবে রাষ্ট্র আসলে চলতে পারে না। রাষ্ট্রে একটি সম্মিলিত সরকারি দল বিরোধী দল এবং সকলের সম্মিলিত চিন্তাশক্তির মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রকে পরিচালনা করতে হবে।’

সুপ্রিম কোর্ট নিয়ে হারুন বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের বয়স ৫০ বছর হয়েছে। এখনও বিচারক নিয়োগে, নিয়োগকাঠামো তৈরি করতে পারিনি।’

বাংলাদেশের পাসপোর্ট থেকে ‘এক্সসেপ্ট ইসরায়েল’ শব্দ বাদ দেয়ার বিষয়টিও উঠে আসে হারুনের বক্তব্যে।

তিনি বলেন, ‘৫০ বছর পর বাংলাদেশের পাসপোর্ট থেকে ইসরায়েল শব্দটি বাদ দিলেন। নিঃসন্দেহে এটি অত্যন্ত অগ্রহণযোগ্য এবং এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এটিকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার জন্য অনুরোধ করছি।

‘মেজর সিনহা হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে সেদিন পুলিশের প্রধান, সেনাবাহিনীর প্রধান বলেছিলেন, বাংলাদেশ আর বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড দেখতে চায় না। কিন্তু এরপর থেমেছে? বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম এটা অব্যাহত আছে। আমরা এখান থেকে কখন ফিরে আসব?’

তিনি বলেন, ‘আমাদের খুব লজ্জা লাগে। যখন বাইরে চলাফেরা করি আমাদের মুখে কাপড় দিতে হয়। সংসদে কথা বলার কারণে মানুষ আমাদের দিকে তাকায়। সরকারি দলের মন্ত্রীদেরকে নিয়ে আমাদেরকে উপহাস করে? বলে আপনারা কি সরকারি দলের মন্ত্রীদের ভাড়া করেছেন নাকি?

‘আপনাদের কিছু মন্ত্রী সকালে এক বয়ান, বিকেলে এক বয়ান (দেন)। আওয়ামী লীগের মন্ত্রীরা সারা দিন বয়ান করছে বিএনপি ভোট বর্জন করছে; বিএনপির জনসমর্থন নাই। বিএনপি তো এজেন্ট দিতে পারে না। বিএনপিতে প্রার্থী প্রত্যাহার করছে। মনে হচ্ছে তারা আমাদের বিএনপির স্ট্যান্ডিং কমিটির নেতা। বিএনপির দায়িত্বশীল ব্যক্তি।’

নির্বাচন কমিশন বিলুপ্ত করে দেয়ার আহ্বান জানান বিএনপির এমপি।

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন দরকার কী? এটি বিলুপ্ত করে দেন। আমরা শুনেছি নির্বাচন কমিশনের এনআইডি কার্যক্রম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাহলে দরকার কি নির্বাচন কমিশনের? নির্বাচন কমিশন বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া দরকার।’

এ বিভাগের আরো খবর