জাতিসংঘ সদর দপ্তরে রোহিঙ্গা ও এলডিসিবিষয়ক দুটি বৈশ্বিক আয়োজনে অংশ নিতে যুক্তরাষ্ট্র সফরে গেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। কিন্তু এই সফরে তার দেখা হচ্ছে না যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি ভলকান বাজকির সম্প্রতি বাংলাদেশ সফরের সময় অনুষ্ঠান দুটিতে অংশ নিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বিশেষভাবে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রে জাতিসংঘের বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন জানিয়েছে, কাতার এয়ারওয়েজের নিয়মিত ফ্লাইটে রোববার স্থানীয় সময় বিকেলে নিউইয়র্ক পৌঁছান মোমেন। সোমবার থেকে তার সফরের কর্মসূচি শুরু হবে।
পূর্বনির্ধারিত দুটি সভায় যোগ দেয়া ছাড়াও জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস, সাধারণ পরিষদের বিদায়ি সভাপতি ভলকান বাজকির, শান্তিরক্ষা মিশন এবং জাতিসংঘের রাজনীতি বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারির সঙ্গে তার বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে ওয়াশিংটন যাওয়ার ইচ্ছা ব্যক্ত করে ব্লিঙ্কেনের সাক্ষাৎ চেয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন। টিকা নিয়ে আলোচনাই তার ওই বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য।
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের তরফে বলা হয়, ওই সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর শিডিউল খালি নেই। তিনি প্রচণ্ড ব্যস্ত থাকবেন। ফলে মন্ত্রী মোমেন যদি বেশি দিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করেন, তাহলে সাক্ষাতের একটি ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
মোমেনের সফরসূচিতে পরিবর্তন আনার কথা বলেছে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন। কিন্তু জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশন চলমান থাকায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর যুক্তরাষ্ট্র সফর দীর্ঘ হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র।
১০ জুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘দেশে সংসদ অধিবেশন চলছে। তাই আমাদের দ্রুত ফিরতে হবে। বেশি দিন যুক্তরাষ্ট্রে থাকতে পারছি না।
‘প্রাথমিক পরিকল্পনা মতে, ২০ জুন পর্যন্ত আমেরিকায় থাকব। ওই সময়ের মধ্যে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাক্ষাৎ পাওয়ার চেষ্টা করব।’
ওয়াশিংটনের কূটনৈতিক সূত্র বলছে, দূতাবাসের চেষ্টার কোনো কমতি নেই। কিন্তু ২০ জুনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর শিডিউল পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ।
দায়িত্বশীল একটি সূত্র বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাক্ষাৎ না পেলে নিউইয়র্ক থেকে ঢাকা ফিরবেন মন্ত্রী মোমেন। সে ক্ষেত্রে তার প্রস্তাবিত ওয়াশিংটন সফর বাতিল করা হবে।
ঢাকা ছাড়ার আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি ঢাকায় এসেছিলেন। তিনি আমাকে দাওয়াত দিয়ে গেছেন। আমি তা গ্রহণ করেছি।
‘এবারে নিউইয়র্কে দুটো বড় ইস্যু নিয়ে আলোচনার সুযোগ পাওয়া গেল। ১৫ জুন জাতিসংঘে রোহিঙ্গাদের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হবে।
‘সেখানে অংশ নেব। পরবর্তী সময়ে এলডিসি উত্তরণ নিয়ে আয়োজিত আরেকটি বৈঠকেও যোগ দেব। সেখানে বাংলাদেশ ও অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশে টিকা সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য কথা বলব।’
রোহিঙ্গা বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘নতুন রোহিঙ্গারা কী অবস্থায় আছে, এটা নিয়ে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ও অর্থনৈতিক এবং সামাজিক পরিষদ (ইকোসক) যৌথভাবে একটি বড় আয়োজন করেছে।
‘সেখানে আমাকে দাওয়াত দিয়েছে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে। আমি তাদের পরিস্থিতি সম্পর্কে জানাব এবং প্রত্যাবাসন শুরুর ক্ষেত্রে সহায়তার আহ্বান জানাব।’