টিকটক চক্রের মাধ্যমে ভারতে পাচার হওয়ার ৭৭ দিন পর পালিয়ে দেশে ফেরা এক তরুণীর মামলায় গ্রেপ্তার আসামিদের দুজন দোষ স্বীকার করেছেন।
মামলার তিন আসামিকে রিমান্ড শেষে বুধবার ঢাকার মুখ্য মহানগর আদালতের (সিএমএম) দেবব্রত বিশ্বাসের আদালতে হাজির করেন তদন্ত কর্মকর্তা খিলগাঁও থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মহিউদ্দিন ফারুক।
তখন দুই আসামি মেহেদি হাসান বাবু ও মহিউদ্দিন ১৬৪ ধারায় স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে রাজি হন। দুজনের জবানবন্দি রেকর্ড এবং তাদেরসহ অপর আসামি আব্দুল কাদেরকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা।
আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন বিচারক। এরপর তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বলে নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেন আদালতের নারী ও শিশু সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা এসআই রাফাত আরা সুলতানা।
এর আগে ৩ জুন এই তিন আসামিকে পাঁচ দিন করে পুলিশি রিমান্ডে পাঠায় আদালত।
একই মামলায় গত মঙ্গলবার আমিরুল ইসলাম ও আবদুস সালাম মোল্লা নামে আরও দুই আসামিকে পাঁচ দিন করে রিমান্ডে পাঠান ঢাকার মুখ্য মহানগর আদালতের (সিএমএম) হাকিম মামুনুর রশীদ।
মামলাটির ১২ আসামির মধ্যে দেশে অবস্থান করা পাঁচজনকেই জিজ্ঞাসাবাদে পেয়েছে পুলিশ। বাহিনীটির হাতে তথ্য, বাকি সাত আসামি ভারতে অবস্থান করছেন।
ভারতে পাচার হওয়ার ৭৭ দিনের নির্যাতন ও বন্দিদশা থেকে সম্প্রতি পালিয়ে দেশে ফিরে রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় গত ১ জুন ১২ জনকে আসামি করে মামলা করেন এক তরুণী।
ভিকটিমের বরাতে পুলিশ জানিয়েছে, ২০১৯ সালে হাতিরঝিলে মধুবাগ ব্রিজে মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি হৃদয় বাবুর সঙ্গে পরিচয় হয়, যিনি সম্প্রতি ভারতীয় পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ২০২১ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি কুষ্টিয়ায় বাউল লালন শাহ মাজারে আয়োজিত টিকটক হ্যাংআউটে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে কৌশলে ভিকটিমকে সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচার করেন হৃদয় বাবু। পাচারকারী চক্রের খপ্পরে পড়ার পর থেকে পালিয়ে দেশে ফেরা পর্যন্ত তার রোমহর্ষক করুণ কাহিনি কল্পনাকেও হার মানিয়েছে।
ভুক্তভোগী তরুণীর বরাতে পুলিশ জানায়, ভারতে পাচারের পর ভিকটিমকে বেঙ্গালুরুর আনন্দপুর এলাকায় পর্যায়ক্রমে কয়েকটি বাসায় রাখা হয়। এ সময় মেয়েটি ভারতে পাচার হওয়া আরও কয়েকজন বাংলাদেশি ভিকটিমকে দেখতে পান। যাদের সুপার মার্কেট, সুপার শপ বা বিউটি পারলারে ভালো বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে পাচার করা হয়েছে।