গণপূর্তের ঢাকা মেট্রোপলিটনের প্রধান প্রকৌশলী প্রদীপ কুমার বসু ও তার স্ত্রীর সম্পদের হিসাব চেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
প্রদীপের স্ত্রী তাপসী দাস নিজেও একজন প্রকৌশলী। তিনি খুলনা সড়ক সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী।
আলোচিত এ দম্পতির বিরুদ্ধে দুদকে আসা বিভিন্ন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সম্পদ বিবরণ জমা দেয়ার নির্দেশ দেয় কমিশন। সোমবার দুদক তাদের চিঠি দিয়েছে।
দুদক আইন, ২০০৪ (২০০৪ সনের ৫নং আইন) এর ধারা ২৬ এর উপধারা (১)-এর ক্ষমতাবলে প্রকৌশলী দম্পতি ও তাদের ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তিদের সম্পদ বিবরণী দাখিল করতে হবে। সম্পদের বিবরণী দাখিলের নির্দেশ পাওয়া ব্যক্তি ও তাদের ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তিদের স্বনামে-বেনামে অর্জিত যাবতীয় স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি, দায়-দেনা, আয়ের উৎস ও তা অর্জনের বিস্তারিত বিবরণী ২১ কার্যদিবসের মধ্যে কমিশনের কাছে জমা দিতে হবে।
আদেশে আরও বলা হয়, যদি তারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পদ বিবরণী জমা দিতে ব্যর্থ হন অথবা মিথ্যা বিবরণী জমা দেন তবে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গণপূর্তের একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, প্রদীপ কুমার বসু অনেক আগে থেকেই আলোচনায়। তিনি বিভাগীয় শাস্তির মুখোমুখি হয়েছেন। জি কে শামীম, গোল্ডেন মনিরসহ বিভিন্ন বিতর্কিত ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগের কারণে দুদক তাকে এর আগেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
ওই কর্মকর্তারা জানান, গোপালগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগে থাকা অবস্থায় প্রদীপ কুমার বসুর নাম জড়িয়ে যায় শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল নির্মাণে দুর্নীতির অভিযোগে। এ বিষয়ে ২০১৬ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়। এক বছরের জন্য তিনি সাময়িক বরখাস্ত ছিলেন।
খুলনা গণপূর্ত জোনে দায়িত্ব পালনকালেও প্রদীপ কুমার নানা বিতর্কের জন্ম দেন। তিনি শত কোটি টাকার মালিক বলে ঘনিষ্ঠ মহলে প্রচার রয়েছে। স্বর্ণ চোরাচালানি চক্রের হোতা গোল্ডেন মনিরের সঙ্গে তার সখ্যের কথা সহকর্মীরা জানেন।
মনিরের সঙ্গে একটি ছবি গত বছর ফেসবুকে ভাইরাল হলে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন প্রদীপ। সম্প্রতি র্যাব মনিরকে গ্রেপ্তার করলে জিজ্ঞাসাবাদে উঠে আসে গণপূর্তের নানা অপকর্ম। দুদকের অনুসন্ধানে এসব বিষয় গুরুত্ব পাচ্ছে।
এদিকে দুদক তদন্তের প্রয়োজনে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) নগর স্থিতিস্থাপক প্রকল্পের পরিচালক এবং প্রধান প্রকৌশলী (বাস্তবায়ন) আবদুল লতিফ হেলালী ও তার স্ত্রী রোজিনা বেগমের সম্পদ বিবরণী চেয়েছে। তাদের সম্পদের বিস্তারিত বিবরণী ২১ কার্যদিবসের মধ্যে কমিশনের কাছে দিতে হবে। একই সঙ্গে তাদের ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তিদের তথ্যও জানতে চেয়েছে দুদক।
দুদক রাজউকের সাবেক অফিস সহকারী মো. আব্দুল জলিল আকন্দ ও তার স্ত্রী জাহানারা বেগমের সম্পদের হিসাব ও জানতে চেয়েছে। এ দম্পতি ছাড়া তাদের ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তিদের সম্পদের হিসাব ২১ কার্যদিবসের মধ্যে দিতে হবে।