বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ছয় দফার ভেতরে এক দফা: প্রধানমন্ত্রী

  •    
  • ৭ জুন, ২০২১ ২০:৫৬

‘এই ছয় দফার ভিতরেই এক দফা নিহিত ছিল। সেটা অন্তত আমরা পরিবারের সদস্যরা জানতাম। তিনি সব সময় বলতেন ছয় দফা মানেই এক দফা অর্থাৎ স্বাধীনতা। আজকে আমরা সেই স্বাধীন জাতি।’

পাকিস্তান আমলে বঙ্গবন্ধুর দেয়া ছয় দফা প্রস্তাবের মধ্যেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা লুকিয়ে ছিল বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সোমবার বিকেলে ছয় দফা দিবসে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি আয়োজিত এক ভার্চুয়াল আলোচনায় ধারণ করা বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় ছয় দফার প্রেক্ষাপট এবং আন্দোলন নিয়ে কথা বলেন তিনি।

১৯৬৬ সালের আজকের এই দিনে বঙ্গবন্ধু পূর্ব পাকিস্তানের পূর্ণ স্বায়ত্তশাসনের একটি প্রস্তাব রাখেন। সে সময় পাকিস্তানি সরকার এই প্রস্তাবকে পাকিস্তান ভাঙার পরিকল্পনা হিসেবেই দেখে। বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে হয় মামলা।

বঙ্গবন্ধুও তার রাজনৈতিক ঘনিষ্ঠজনদের কাছে এটিকে আসলে এক দফা তথা স্বাধীনতার পরিকল্পনা হিসেবে তুলে ধরেছেন বলে পরে নানা লেখনীতে উঠে আসে।

বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনাও সেই কথাই জানালেন এই আয়োজনে। তিনি বলেন, ‘এই ছয় দফার ভিতরেই এক দফা নিহিত ছিল। সেটা অন্তত আমরা পরিবারের সদস্যরা জানতাম। তিনি সব সময় বলতেন ছয় দফা মানেই এক দফা অর্থাৎ স্বাধীনতা। আজকে আমরা সেই স্বাধীন জাতি।’

বঙ্গবন্ধু হত্যার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাঙালি জাতিকে তিনি যেভাবে গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন, যে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন, আর্থসামাজিক উন্নয়নে যে কর্মসূচি তিনি হাতে নিয়েছিলেন দুর্ভাগ্য যে তা তিনি করে যেতে পারেননি।’

বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের চেষ্টা করছেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি, আমার ছোট বোন বিদেশে ছিলাম। ছয় বছর দেশে আসতে পারিনি। আওয়ামী লীগ যখন আমাকে সভাপতি নির্বাচিত করল, আমি দেশে ফিরে এলাম। তখন থেকে আমাদের একটাই চেষ্টা ছিল- জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলব।

‘তিনি বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশে রেখে গিয়েছিলেন। আজকে আল্লাহর রহমতে আমরা উন্নয়নশীল দেশ। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। রক্ত কখনও বৃথা যায় না- এটাই প্রমাণিত সত্য। আজ জাতির পিতা আমাদের মাঝে নেই কিন্তু তার আদর্শ আছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পঁচাত্তরের পর আমরা মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ হারিয়ে ফেলেছিলাম কিন্তু সে আদর্শ আজকে আবার ফিরে এসেছে এবং জাতির পিতার সেই শিক্ষা নিয়েই বাংলাদেশ সারা বিশ্বের বুকে আজকে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে।’

ছয় দফার প্রেক্ষাপট

শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার ছাত্রজীবন থেকেই এ দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্যই সংগ্রাম করেছেন। বাঙালি জাতি একটা উন্নত জীবন পাবে, সুন্দর জীবন পাবে- এটাই তার আকাঙ্ক্ষা। তিনি সেটাই চেয়েছিলেন।

পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর বাংলার ওপর আঘাত, ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্টের নির্বাচন, সেই সরকারকে টিকতে না দিয়ে কেন্দ্রীয় শাসন জারি এবং মার্শাল ল চলার মধ্যেই ছয় দফা প্রণয়নের কথা তুলে ধরেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আর সেটা তার আরও সুযোগ এসে গেল ১৯৬৫ সালে পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধের মধ্য দিয়ে। যখন দেখা গেল, এই ভূখণ্ডের মানুষ সম্পূর্ণভাবেই নিরাপত্তাহীন। সেই সময় তিনি এই ছয় দফার দাবিটা উত্থাপন করেন।’

এই দাবিটা যখন উত্থাপন হয়েছিল, তখন সমস্ত পাকিস্তান বিরোধী দল একটা সম্মেলন ডেকেছিল লাহোরে।

সেই সম্মেলনে তিনি এই ৬ দফা উত্থাপন করতে চেষ্টা করেন। সেটা তখন গ্রহণ করা হয়নি। এমনকি বাংলাদেশের কয়েকজন রাজনীতিকও এটাকে গ্রহণ করেনি। পরে তিনি লাহোরে সংবাদ সম্মেলন করে এটি প্রকাশ করেন।

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘৬ দফা দাবি উত্থাপনের সাথে সাথেই পাকিস্তানি শাসকদের কথা ছিল যে, এটা সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন করার জন্যই এই দাবি তিনি তুলেছেন।’

এই ছয় দফা দাবিকে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের জনগণের বাঁচার দাবি বলতেন। ওই বছরেরই ২০ মার্চ পল্টন ময়দানে জনসভা হয় এবং সে জনসভার পর তিনি শুরু করেন সারা বাংলাদেশ ভ্রমণ।

জনগণের মধ্যে ছয় দফা সাড়া পাওয়ার পর গ্রেপ্তার করা হয় বঙ্গবন্ধুকে। তখন ৭ জুন হরতাল ডাকা হয়।

এ সময় বঙ্গবন্ধুর স্ত্রী শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিবের প্রসঙ্গও তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। বলেন, ‘এই হরতাল সফল করার জন্য আমার মা বিশেষ ভূমিকা নিয়েছিলেন। তিনি ইনটেলিজেন্স ব্রাঞ্চের চক্ষু বাঁচিয়ে আমাদের ছাত্রসমাজের সঙ্গে, সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে একটা হরতাল সফল করার জন্য তিনি বিভিন্ন কাজ করে ছিলেন যা আমি অনেকবার অনেক বক্তৃতায় বলেছি।’

হরতালে মনু মিয়া, আবুল হোসেন, শফিক, শামসুল হকসহ ১১ জন মানুষ নিহত হন।

ছয় দফা পরবর্তী সংগ্রামের বর্ণনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ছয় দফার ভিত্তিতে সত্তরের নির্বাচন হয়। সেই নির্বাচন হওয়ার পর যখন আওয়ামী লীগ সমগ্র পাকিস্তানে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পায়- যেটা পাকিস্তানিরা কোনো দিনই আশা করেনি।

‘ছয় দফা দাবি আদায়ের এই ৭ জুনে রক্তের অক্ষরে ছয় দফার দাবির কথা লিখে গিয়েছিল বলেই আজকে এই ছয় দফার ভিত্তিতেই নির্বাচন এবং আমাদের যুদ্ধে বিজয় এবং আমরা স্বাধীনতা অর্জন করি।’

এ বিভাগের আরো খবর