চীনের তৈরি সিনোভ্যাকের দেড় কোটি টিকা দ্রুত সময়ের মধ্যে দেশে আসবে বলে জাতীয় সংসদকে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে সোমবার নেত্রকোণা-৩ আসনের এমপি অসীম কুমার উকিলের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘চীন থেকে দেড় কোটি ডোজ সিনোভ্যাক টিকা কেনার জন্য সরকারের ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি অনুমোদন দিয়েছে। একই সঙ্গে শিগগিরই এই টিকা দেশে আনার প্রয়াস অব্যাহত আছে।’
বেলা ১১টায় অধিবেশনের শুরুতে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়।
সেখানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘চীন সরকারের কাছ থেকে পাঁচ লাখ ডোজ টিকা উপহার পাওয়া গেছে। এই টিকা ২৫ মে থেকে প্রয়োগ শুরু হয়েছে। আরও ছয় লাখ ডোজ অনুদান হিসেবে শিগগিরই পাওয়া যাবে।
‘সিরাম থেকে তিন কোটি ডোজ টিকা ক্রয়ের চুক্তি হয়েছিল। এর মধ্যে ৭০ লাখ ডোজ পাওয়া গেছে। চুক্তি মোতাবেক বাকি ২ কোটি ৩০ লাখ ডোজ সংগ্রহের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’
তিনি জানান, সিরামের সরবারাহকৃত ৭০ লাখ ও ভারত সরকারের উপহারে পাওয়া ৩২ লাখ ডোজের মধ্যে ১ কোটি ডোজ টিকা প্রদান হয়েছে।
ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে টিকা কিনতে বাংলাদেশ সরকার, বেক্সিমকো এবং সিরামের যৌথ চুক্তি হয়। প্রথমে তিন কোটি ডোজ টিকা কেনার চুক্তি হলেও টিকার দাম কমে যাওয়ায় নতুন করে আগের টাকায় তিন কোটি ৪০ লাখ টিকা পাওয়ার কথা বাংলাদেশের।
এ ছাড়া ভারত সরকার বাংলাদেশকে কয়েক দফায় ৩৩ লাখ টিকা উপহার হিসেবে দিয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, রাশিয়া থেকে ১ কোটি ডোজ স্পুটনিক ভি কেনা প্রক্রিয়াধীন। ফাইজারের ১ লাখ ৬২০ ডোজ টিকাদান শিগগিরই শুরু হবে। করোনাভাইরাসের টিকা সংগ্রহের জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার।
এ জন্য বিভিন্ন দেশ ও টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে। এ ছাড়াও দেশে টিকা উৎপাদনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। টিকা তৈরির প্রযুক্তি হস্তান্তরের জন্য বিভিন্ন দেশ ও উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে আলোচনা চলছে বলেও সংসদকে জানান তিনি।
সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, বেসরকারি চিকিৎসা সেবা আইন প্রণয়নের কাজ ২০০৮ সালে শুরু হলেও বিভিন্ন কারণে এখনও তা চূড়ান্ত হয়নি। পর্যায়ক্রমে এ আইনের সংস্কার কার্যক্রম করা হয়েছে।
সবশেষ ২০১৯ সালে স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন ২০১৯ নামে ওই আইনটি প্রণয়নের কার্যক্রম মন্ত্রণালয়ে চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। আইনটি দ্রুত করার লক্ষ্যে কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলেও জানান।
মন্ত্রী বলেন, বেসরকারি খাতে কোভিড-১৯ আক্রান্তদের জন্য বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মূল্য নির্ধারণের জন্য উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে অক্সিজেন ব্যবহারের মূল্য এবং এক্স-রে ও সিটিস্ক্যানসহ ১০টি জরুরি প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার মূল্য সহনশীল মাত্রায় নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ ছাড়া ডেঙ্গু রোগীদের জন্য প্রয়োজনীয় আরও দুটি পরীক্ষার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য সেবা সুরক্ষা আইন প্রণয়ন হলে অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষার মূল্যও নির্ধারণ করা সম্ভব হবে বলে সংসদকে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।