শহরের সুবিধা পৌঁছে দেয়া হলেও, নগরের জনদুর্ভোগ যেন গ্রামে তৈরি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখেই সরকার ঘোষিত ‘আমার গ্রাম, আমার শহর’ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম।
কর্মসূচি বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যালোচনা বিষয়ক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় রোববার সকালে অনলাইনে যুক্ত হয়ে সভাপতির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
তাজুল ইসলাম বলেন, ‘শহরে যে সব সমস্যা জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে, সেগুলোকে বিবেচনায় নিয়েই গ্রামকে শহরে রূপান্তরিত করতে হবে। রাজধানীসহ দেশের বড় বড় নগরে অবৈধভাবে জায়গা দখল করে অবকাঠামো নির্মাণের ফলে অপরিকল্পিতভাবে নগরায়ণ হয়েছে। পর্যাপ্ত রাস্তা, খোলা জায়গা, ড্রেনেজ ব্যবস্থা, অন্যান্য নাগরিক সেবা নিশ্চিত না করে গড়ে উঠেছে মহানগরী।’
তিনি বলেন, ‘উন্নয়ন এমনভাবে করতে হবে যেন শহরের নাগরিকরা যে অসুবিধা ভোগ করে সেগুলো গ্রামে না থাকে। সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।’
নগরের নাগরিক সমস্যা এবং বেদখল হওয়া খাল, জলাশয় পুনরুদ্ধারে সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।
মানুষের জীবন যাপনে প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা এবং চাহিদা অন্তর্ভুক্ত করে উপজেলাভিত্তিক দ্রুত মাস্টার প্ল্যান প্রণয়নের তাগিদ দেন মন্ত্রী। বলেন, ‘মানুষের আবাসিক এলাকা, এগ্রিকালচারাল ল্যান্ড, গ্রিনাইজেশন, প্লে-গ্রাউন্ড, রাস্তা-ঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট, স্কুল-কলেজ, কমিউনিটি ক্লিনিক, শপিং মল, শিল্পাঞ্চল, নদী-নালা, খাল-বিল সংরক্ষণসহ সবকিছু পরিকল্পিতভাবে করতে হবে। যেখানে সেখানে যা-তা তৈরি করে মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন করা যাবে না।’
মাস্টার প্ল্যান গ্রহণের যৌক্তিক কারণ এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা থাকতে হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘যেকোনো জায়গায় বাসা-বাড়ি, দোকানপাট, কিন্ডারগার্টেন, স্কুল, ক্লাব, মাদরাসা, কবরস্থান এভাবে চলতে দিলে দেশকে পরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলা সম্ভব হবে না।’
মন্ত্রী জানান, ‘‘আমার গ্রাম, আমার শহর’’ কারিগরি সহায়তা শীর্ষক একটি প্রকল্প নেয়া হয়েছে। এ প্রকল্পের জন্য পরামর্শক ও সহায়ক কর্মচারীর জন্য একটি অফিস স্থাপন করা হয়েছে এবং প্রস্তাবিত কারিগরি সহায়তা প্রকল্পের মাধ্যমে পাইলট হিসেবে ১৫টি গ্রামকে নির্বাচনের কাজ চলছে।’
করোনাভাইরাস মহামারিতে সারা বিশ্বের মতো দেশেও অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে এই প্রকোপ স্বল্প সময় থাকবে বলে মনে হলেও কবে শেষ হবে তা বলা মুশকিল। তাই করোনা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে আমাদের উন্নয়ন কাজগুলো এগিয়ে নিতে হবে।’
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, সরকারি নির্দেশনা এবং দলীয় সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নসহ ইউনিয়ন পরিষদকে দিয়ে অনেক কাজ করার সুযোগ রয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলা পরিষদের সক্ষমতা বাড়াতে পরিষদকে লোকবল এবং লজিস্টিক সাপোর্ট দিয়ে শক্তিশালী করার পাশাপাশি জবাবদিহির আওতায় আনা হবে বলেও জানান তিনি।
সভায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিবসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, সচিব, এলজিইডি ও ডিপিএসইর প্রধান প্রকৌশলী এবং প্রতিনিধিরা অংশ নেন।