বৃক্ষরোপণ অভিযানকে টেকসই করার লক্ষ্য নিয়ে সকলকে অনুপ্রাণিত ও সম্পৃক্ত করতে ‘বৃক্ষরোপণে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার ২০১৯’ এর জন্য ১৪ ব্যক্তি ও ১৬ প্রতিষ্ঠানকে চূড়ান্ত করেছে সরকার।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী শাহাব উদ্দিনের সভাপতিত্বে মনোনয়ন চূড়ান্ত করতে আয়োজিত ভার্চুয়াল সভায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পদক সংক্রান্ত জাতীয় কমিটি।
উপজেলা, জেলা, বিভাগীয় পর্যায়ে যাচাই-বাছাইয়ের পর জাতীয় কমিটি চূড়ান্তভাবে মনোনয়ন দেয়। জাতীয় কমিটির সদস্যরা আলোচনার পর ‘প্রাথমিক বিদ্যালয়, উচ্চ বিদ্যালয়, ইবতেদায়ি মাদ্রাসা, সিনিয়র মাদ্রাসা’ বিভাগে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরস্কারের জন্য সাতক্ষীরার ধানদিয়া ইউনিয়ন ইনস্টিটিউশন, নরসিংদীর কাজী মফিজ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় এবং পটুয়াখালীর শিয়ালী তালেমুন কুরআন নূরানী ও হাফেজিয়া মাদ্রাসাকে মনোনীত করা হয়েছে।
কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়’ বিভাগে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরস্কারের জন্য পটুয়াখালী মৌকরণ বি এল পি ডিগ্রি কলেজ, আছমতআলী খান কলেজ এবং খুলনার আলহাজ মোল্লা জালাল উদ্দিন কলেজকে মনোনীত করা হয়েছে।
ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ, পৌরসভা, সিটি করপোরেশন বিভাগে প্রথম ও দ্বিতীয় পুরস্কারের জন্য বাগেরহাটের রামপাল উপজেলা পরিষদ এবং পাবনার ঈশ্বরদী পৌরসভা মনোনীত হয়েছ।
অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, সেক্টর করপোরেশন, প্রতিষ্ঠান বিভাগে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরস্কারের জন্য খুলনার আরআরএফ এবং পটুয়াখালী বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের পওর বিভাগ এবং ঢাকার কেরানীগঞ্জ কারিগরী প্রশিক্ষণ কেন্দ্ৰ মনোনীত করা হয়েছে।
এনজিও, ক্লাব, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বিভাগে প্রথম ও দ্বিতীয় পুরস্কারের জন্য যথাক্রমে কুষ্টিয়ার বনায়ন এবং পঞ্চগড়ের বাংলাদেশ স্কাউটস মনোনীত হয়েছে।
বন বিভাগের সৃজিত বাগান বিভাগে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন দিনাজপুরের বীরগঞ্জ সামাজিক বন বিভাগ, যশোরের সামাজিক বন বিভাগ, কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগ।
ব্যক্তিগত পর্যায়ে বৃক্ষরোপণ বিভাগে প্রথম ও দ্বিতীয় পুরস্কারের জন্য খাগড়াছড়ির উনুচিং মারমা এবং মুন্সিগঞ্জের পারভীন সিরাজ মনোনীত হয়েছেন। আর তৃতীয় পুরস্কারের জন্য যৌথভাবে মনোনীত হয়েছেন নাটোরের ইসাক আহমেদ এবং মৌলভীবাজার মেহেদী হাসান কবির।
ব্যক্তি মালিকানাধীন নার্সারি বিভাগে প্রথম ও দ্বিতীয় পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন ঢাকার ঢাকার সাভারের উত্তরা ভাই ভাই নার্সারীর মালিক হেলেনা আক্তার হেনা এবং চট্টগ্রামের হাটহাজারীর ফতেয়াবাদ নার্সারীর মালিক রোজিনা ইয়াছমিন। আর তৃতীয় পুরস্কারের জন্য যৌথভাবে মনোনীত হলেন মৌলভীবাজারের বৃক্ষবন্ধু নার্সারির মালিক নিলু বেগম এবং খুলনার সততা নার্সারির মালিক অঞ্জনা রানী পাল।
বাড়ির ছাদে বাগান সৃজন বিভাগে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন ঢাকার কলাবাগানের নাহিদা বারিক, দিনাজপুরের রাখী দে এবং রাজশাহীর ওয়াহিদা ইয়াসমিন।
বৃক্ষ গবেষণা, সংরক্ষণ, উদ্ভাবন বিভাগে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরস্কারের জন্য রাজবাড়ীর আব্দুল হাকিম মণ্ডল, চট্টগ্রামের মোকাম্মেল হক খান এবং মৌলভীবাজারের হৃদয় চন্দ্ৰ দেবনাথকে মনোনীত করা হয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে বনমন্ত্রী বলেন, দেশে অনেক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান বৃক্ষরোপণ করে প্রশংসনীয় কাজ করে চলেছেন।
‘সরকার গত অর্থবছর দেশে আট কোটির বেশি বৃক্ষ রোপণ করেছে, এবার আট কোটির ওপরে বৃক্ষরোপণ করা হবে।’
বৃক্ষরোপণে যারা বিশেষ অবদান রাখেন তাদেরকে ১৯৯৩ সাল থেকে ‘বৃক্ষরোপণে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার’ দেয়া হয়। বিজয়ীদের সনদপত্রের সঙ্গে প্রথম স্থান অধিকারীকে ৩০ হাজার টাকা, দ্বিতীয় স্থান অধিকারীকে ২০ হাজার টাকা এবং তৃতীয় স্থান অধিকারীকে ১৫ হাজার টাকা দেয়া হয়।
মন্ত্রী বলেন, পুরস্কার প্রাপ্তদের সম্মানি আগামীতে আরও বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হবে।
সভায় অন্যদের মধ্যে ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার, সংসদ সদস্য শামীমা আক্তার খানম, মন্ত্রণালয়ের সচিব জিয়াউল হাসান, বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক আমীর হোসাইন চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকার শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা এবং প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবুসহ কমিটির অন্য সদস্যরা।