জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনকে শক্তিশালী করাসহ পরিবেশ রক্ষায় সরকারের কাছে নয় দফা দাবি জানিয়েছে পরিবেশবাদি সংগঠন হিউম্যান রাইটস এন্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি)।
শনিবার পরিবেশ দিবস উপলক্ষে ভার্চুয়ালি আলোচনা সভায় এ দাবি জানানো হয়।
আলোচনা সভায় সংগঠনটির সভাপতি সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, মহামারি করোনায় মানবজাতি ভযাবহ দুঃসময় অতিবাহিত করছে। এ সময় বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ।
তিনি বলেন, দেশের খাল, বিল, নদী, পাহাড়-পর্বত, বনজঙ্গল, পশু-পাখি—প্রকৃতির এমন সমাহার আজ হারিয়ে যাচ্ছে। বায়ু দুষণে আমাদের রাজধানী প্রথম স্থানে থাকছে।
‘অজ্ঞতা, অসতর্কতা ও অপরিকল্পিত উন্নয়নের নামে সুন্দর ও প্রাকৃতিক পরিবেশে ভরপুর বাংলাদেশকে আজ আর খুঁজে পাওয়া যায় না। এর অন্যতম কারণ প্রকৃতি ও পরিবেশের এ ক্ষতির সঙ্গে যারা জড়িত তারা বিত্তশালি, প্রভাবশালি, রাজনৈতিক ক্ষমতাশালী। অনেক ক্ষেত্রে পরিবেশ বিনষ্টকারী কাজের সঙ্গে এবং রায় বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির ক্ষেত্রে বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিরাও জড়িত থাকে, যার কারণে প্রশাসন কাজ করতে পারে না। এর থেকে উত্তরণের জন্য সংবিধানের আর্টিকেল ১০৮ একমাত্র হাতিয়ার হলেও তাও অনেকটা মুখ থুবড়ে পড়েছে।’
এ সময় সংগঠনের পক্ষ থেকে পরিবেশ রক্ষায় ৯ দফা দাবি উত্থাপন করা হয়।
নয় দফার মধ্যে রয়েছে পরিবেশ দূষণের সঙ্গে জড়িত এমপি বা জনপ্রতিনিধিদের পদ থেকে অপসারন ও নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনকে শক্তিশালি করে তাকে ক্ষমতায়ন এবং কমিশনকে ক্যাবিনেটের আওতায় আনা, সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, জেলা, উপজেলায় প্রকৃতি ও পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্থ হলে (প্রাকৃতিক দুর্যোগ ব্যাতিত) সংশ্লিষ্ট এলাকার কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত দায়বদ্ধ করে আইন পাস, পরিবেশ রক্ষায় কাজ করা পরিবেশবাদি, আইনজীবি, সাংবাদিক এবং সব ব্যক্তির সুরক্ষা প্রশাসনিকভাবে নিশ্চিত করা, পরিবেশ অধিদপ্তরের লোকবল বৃদ্ধি, সব জেলায় পর্যাপ্ত লোকবলসহ অফিস স্থাপন এবং পরিবেশ রক্ষার কাজে প্রয়োজনীয় আর্থিক বরাদ্দ, নদীর পাশে যে কোনো প্রজেক্ট বাস্তবায়িত করতে হলে আপিল বিভাগের নির্দেশনা অনুসারে সি এস রেকর্ড অনুসারে নদীর সীমানা নির্ধারণ করে তা সংরক্ষণ, পরিবেশের ক্ষতির করার কারণে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা বা সাজাপ্রাপ্ত হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির প্রতিষ্ঠান তাৎক্ষণিক বন্ধ ঘোষণা, পরিবেশ সংক্রান্ত সব বিভাগে দক্ষ, সৎ, কমিটেড এবং পরিবেশ নিয়ে পড়াশুনা করা ব্যক্তিকে নিয়োগ দেয়া এবং পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের বাজেট তিনগুণ বৃদ্ধি করা।
আলোচনায় সভায় বক্তব্য দেন অ্যাডভোকেট মো. ছারওয়ার আহাদ চৌধুরি, অ্যাডভোকেট এখলাছ উদ্দিন ভুইয়া, অ্যাডভোকেট মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, অ্যাডভোকেট মাহবুবুল ইসলামসহ আরও অনেকে।