জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় একসঙ্গে কাজ করার বিষয়ে একমত হয়েছে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্য।
এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশে কার্বন নিঃসরণের হার খুবই কম থাকা সত্ত্বেও বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে সীমাবদ্ধ রাখার বিষয়ে নিজেদের অবস্থান থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে ঢাকা।
বুধবার দুপুরে ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন ও ঢাকা সফররত কপ-২৬ প্রেসিডেন্ট অলোক শর্মার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক এবং জলবায়ু ইস্যুতে ঢাকা-যুক্তরাজ্যের মধ্যে রাউন্ড টেবিল বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে বিকেলে যৌথ প্রেস ব্রিফিংয়ে বক্তব্য দেন মোমেন ও অলক।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এই পৃথিবীকে বাঁচাতে হবে। আমরা অবশ্যই এই পৃথিবীকে বাঁচাব। আমরা বলি যে, মানুষ ও পৃথিবীকে বাঁচাতে হবে, আর এটা করার সামর্থ্য আমরা রাখি। আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে, আমরা বৈশ্বিক তামপাত্রা কমিয়ে ১ দশমিক ৫ ডিগ্রির মধ্যে নিয়ে আসব।
‘এটা নিয়ে আমরা আমাদের অবস্থান থেকে একসঙ্গে কাজ করতে চাই, আমাদের মানুষের উন্নয়নের জন্য কাজ করতে চাই।’
অন্যদিকে কপ-২৬ প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় আমরা একসঙ্গে কাজ করব। আমরা উভয় পক্ষ একমত হয়েছি, বৈশ্বিক তাপমাত্রা কমিয়ে ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি আনার লক্ষ্যে কাজ করব। প্যারিস জলবায়ু চুক্তি অনুযায়ী বিশ্বনেতারা কথা দিয়েছেন বৈশ্বিক তামপাত্রা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রির মধ্যে আনা হবে।’
চলতি বছরের নভেম্বরে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে জাতিসংঘ আয়োজিত জলবায়ু পরিবর্তনসংক্রান্ত সম্মেলন (কপ–২৬) সামনে রেখে বুধবার সকালে ঢাকায় আসেন অলোক শর্মা। সফরের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি।
সেখানে প্রধানমন্ত্রী কপ-২৬ প্রেসিডেন্টের কাছে আশা প্রকাশ করেন যে, বাংলাদেশসহ জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর স্বার্থ ও অগ্রাধিকারের বিষয়টি যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক ফোরামে গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরা হবে।
বাংলাদেশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি চায় জানিয়ে মোমেন বলেন, ‘আমরা নবায়নযোগ্য জ্বালানি চাই। সে ক্ষেত্রে আমরা যুক্তরাজ্যের প্রযুক্তিগত সহযোগিতা চাই। ক্যাপাসিটি বিল্ডিংয়ের ক্ষেত্রে আমরা তাদের সাহায্য চাই। আর আমরা একসঙ্গে কাজ করতে চাই। আমাদের কার্বন নিঃসরণের হার খুবই কম। আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ থেকে নবায়যোগ্য জ্বালানি শতকরা ৪০ ভাগ করতে চাই। আমাদের যে কয়লাভিত্তিক জ্বালানি, সেটা আমরা কমিয়ে আনব।’
১ থেকে ১২ নভেম্বর স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে জাতিসংঘ আয়োজিত বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৬ অনুষ্ঠিত হবে। সেই সম্মেলনে কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনার ওপর গুরত্ব দেয়া হবে জানিয়ে কপ-২৬ প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘কপ-২৬ সম্মেলনে বৈশ্বিক তামপাত্রা ১ দশমিক ৫-এর মধ্যে নিয়ে আসার ওপর জোর দেয়া হবে।
‘আমাদের বার্তা হচ্ছে কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনা। ধনী দেশগুলোর পক্ষ থেকে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে জলবায়ু ইস্যুতে ১০০ বিলিয়ন ডলারের তহবিল গঠনের মাধ্যমে সহযোগিতা করা হবে। আর এটা খুব কঠিন কিছু হবে না।’