বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

এমসি কলেজে ধর্ষণ: বরখাস্ত হচ্ছেন অধ্যক্ষ, হোস্টেল সুপার

  •    
  • ২ জুন, ২০২১ ১৩:৩০

এমসি কলেজে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে তাদের বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর রুল জারি করেছিল আদালত। ওই রুলের শুনানি শেষে অধ্যক্ষ ও হোস্টেল সুপারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট।

সিলেটের এমসি কলেজে গৃহবধু ধর্ষণের ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার দায়ে কলেজের অধ্যক্ষ ও হোস্টেল সুপারকে বরখাস্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।

এ বিষয়ে জারি করা রুল আংশিক গ্রহণ করে বুধবার বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেয়।

আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ মিসবাহ উদ্দিন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী।

পরে নওরোজ রাসেল চৌধুরী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সিলেটের এমসি কলেজে যে ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে, কিছু দৃষ্কৃতকারী একজন গৃহবধুকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটিয়েছে। ওই বিষয়টি হাইকোর্টের নজরে আনলে আদালত রুল জারি করে এবং ঘটনা তদন্তে চার সদস্যের বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে দেয়।

‘ওই কমিটির তদন্তে কলেজের অধ্যক্ষ এবং হোস্টেল সুপারসহ সংশ্লিষ্ট অনেকের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলা পাওয়া যায়।

তাদের এ দায়িত্বে অবহেলার কারণে তাদেরকে সাময়িক বরখাস্ত করে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।’

এ নির্দেশ পালনে শিক্ষা সচিব, আইন সচিব, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি এবং রেজিস্টারকে এ নির্দেশ প্রতিপালন করতে বলা হয়েছে।

গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর এমসি কলেজে গৃহবধূ ধর্ষণের ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষের উদাসিনতার কারণে তাদের বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে আদালত। পাশাপাশি ঘটনার অনুসন্ধানে যৌথ কমিটি গঠন করে দেয়া হয়।

চার সদস্যের অনুসন্ধান কমিটিতে সিলেটের জেলা ও দায়রা জজ মো. বজলুর রহমান, অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মমিনুন নেসা, চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবুল কাশেম ও সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শারমিন সুলতানা ছিলেন।

পরে এই অনুসন্ধান কমিটি হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ধর্ষণের ঘটনায়, হোস্টেল সুপার ও প্রহরীদের দায়িত্বে অবহেলা ছিল। তাই প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে এমসি কলেজের অধ্যক্ষও কোনোভাবেই ওই ঘটনার দায় এড়াতে পারেন না।

এতে বলা হয়, ‘ঘটনার তারিখে হোস্টেল ক্যাম্পাসে ওই ঘটনার নেপথ্যে মূলত হোস্টেল সুপারদের তদারকির ঘাটতি ও দায়িত্বে অবহেলাই দায়ী। তবে প্রতিষ্ঠান প্রধান হিসেবে কলেজের অধ্যক্ষের ওপরও এ দায়ভার চলে আসে।’

ধর্ষণের পেছনে মূলত হোস্টেলের বর্তমান তত্ত্বাবধায়করা, হোস্টেলের মূল গেটের ডে গার্ড, ৫ নম্বর ব্লকের ডে গার্ড ও নাইট গার্ড (নৈশপ্রহরী) এবং ৭ নম্বর ব্লকের ডে গার্ড ও নাইট গার্ডের দায়িত্বে অবহেলা ছিল।

প্রতিবেদেনে বলা হয়, ঘটনার সময় কলেজ বন্ধ থাকার পরও কয়েকজন ছাত্র ও প্রাক্তন ছাত্র হোস্টেলে অবস্থান করেন।

একজন প্রাক্তন ছাত্র ৫ নম্বর ব্লকের হোস্টেল সুপারের বাসভবন দখল করে থাকেন। প্রাক্তন ওই ছাত্ররা অবৈধভাবে কলেজে হোস্টেলের সিট দখল করে থাকার কারণে এবং প্রাক্তন ছাত্র সাইফুর রহমান হোস্টেল সুপারের বাসভবন জোর করে দখল করে থাকার কারণেই তাঁরা কলেজের হোস্টেল এলাকায় ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধ করার সাহস পান।

প্রতিবেদনে এ ধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে ১৫ দফা সুপারিশ করে বলা হয়, কলেজের নিয়মিত শিক্ষার্থীদের চাহিদার ভিত্তিতে হোস্টেলে আসন নিশ্চিত করতে হবে এবং অছাত্র বা প্রাক্তন ছাত্রদের হোস্টেলে বসবাস কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে।

গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে এমসি কলেজে বেড়াতে আসেন এক তরুণী। এ সময় ক্যাম্পাস থেকে কয়েকজন ছাত্র ওই তরুণীকে স্বামীসহ কলেজ ছাত্রাবাসে তুলে নিয়ে যায়। পরে তারা স্বামীকে বেঁধে মারধর করে গৃহবধূকে ধর্ষণ করে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে।

এ বিভাগের আরো খবর