বিশ্বের অন্য সব দেশের মতো জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়ার দায়িত্ব সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের হাতেই থাকা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ।
জাতীয় প্রেস ক্লাবে সোমবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধনের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশন থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হাতে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এখন থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধনের কাজটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ দেখবে।
এ সংক্রান্ত একটি চিঠি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে সুরক্ষা সেবা বিভাগ এবং নির্বাচন কমিশনের সচিবদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
জাতীয় পরিচয়পত্র নির্বাচন কমিশন থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে হস্তান্তরের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, বিষয়টি নিয়ে জটিলতা তৈরি হতে পারে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের অবস্থান তুলে ধরেন তথ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘জাতীয় পরিচয়পত্র আর ভোটার আইডি কার্ড এক বিষয় নয়। শিশু থেকে বৃদ্ধ সবাইকে জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়া হয়। পৃথিবীর সব দেশে এই জাতীয় পরিচয়পত্র দেয় স্বরাষ্ট্র অথবা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। এটি নির্বাচন কমিশন করে না। নির্বাচন কমিশন শুধু ভোটার তালিকা নিয়ে কাজ করে।’
বাংলাদেশে যখন শুধু ভোটার তালিকা প্রণয়নের প্রকল্প ছিল, তখন সেটি যৌক্তিকভাবেই নির্বাচন কমিশনের হাতে ছিল জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এখন যখন ভোটার তালিকা নয়, জাতীয় পরিচয়পত্র করা হচ্ছে, তখন পৃথিবীর সব দেশের মতো এটি সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের হাতে থাকাই যুক্তিযুক্ত।’
নিজের বক্তব্যের স্বপক্ষে যুক্তি দেখিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘প্রথমত জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়ার জন্য সকল তথ্য-উপাত্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংগ্রহ করে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পাসপোর্ট দেয়। বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশিদেরকেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পাসপোর্ট দেয়। তাদেরকেও জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়া হবে। সুতরাং এ ক্ষেত্রে যে সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেটি পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতোই সিদ্ধান্ত।’
আর জাতীয় পরিচয়পত্র প্রণয়নের পর ১৮ বছরের বেশি বয়সীদের তালিকা নির্বাচন কমিশনে হস্তান্তর করা হবে জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এখানে নির্বাচন কমিশন থেকে যে আশঙ্কার কথা বলা হয়েছে সেটি আসলে অমূলক এবং এটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হাতে থাকাই যুক্তিযুক্ত।’
বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘এটা তো অনেক আগের সিদ্ধান্ত। আমাদের কাছে সিদ্ধান্তটা কনভে করা হয়েছে। আমরা অ্যালোকেশন অব বিজনেস দেখছি। এরপর প্রয়োজন হলে আমরা আবার মিটিং করব। দেখি, কী হয়।’