কেরলের কোঝিকোড় থেকে বেঙ্গালুরু নিয়ে আসা হয়েছে যৌন নিপীড়নের শিকার বাংলাদেশি নারীকে। নির্যাতিতের বয়ান রেকর্ড করবে বেঙ্গালুরু পুলিশ। শনিবার এমনটাই জানিয়েছেন ডেপুটি পুলিশ কমিশনার এস ডি শরনাপ্পা।
এই নিপীড়নের ঘটনায় এখন পর্যন্ত দুই মহিলাসহ মোট ছয় জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধৃতরা সকলেই বাংলাদেশের নাগরিক।
গণধর্ষণের ঘটনাটি ঘটেছে ১৯ ও ২০ মে, পূর্ব বেঙ্গালুরুর কঙ্কনগরের একটি বাড়িতে। ভিকটিম এবং অভিযুক্তরা একে ওপরের পরিচিত। নারীটিকে ভয়াবহ যৌন নির্যাতনের ৩ মিনিট ৪৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিও করে পরে তা ভাইরাল করে দেওয়া হয়।
প্রথমে অসম, বাংলাদেশ এবং কেরালা পুলিশ তদন্ত করেছিল ঘটনাটি তাদের রাজ্যে ঘটেছে ধরে নিয়ে। বাংলাদেশের পুলিশ পরে এই নারীর পরিবারকে খুঁজে বের করে জানতে পারে তিনি বেঙ্গালুরুতে আছেন।
ওই নারীকে কয়েক মাস আগে বেঙ্গালুরুতে নিয়ে আসেন মহম্মদ বাবু শেখ, বিউটি পার্লারে চাকরি দেবার আশ্বাস দিয়ে। কিন্তু ওই নারীকে দেহ ব্যবসায় নামানোর চেষ্টা করেন বাবু ও তার সাগরেদরা। বাবু সাত মাস আগেই বেঙ্গালুরুতে এসে দেহব্যবসার চক্রে যোগ দেন।
নির্যাতিত ওই নারী বেঙ্গালুরুতে আসার আগে কেরলের কোঝিকোড় এবং হায়দ্রাবাদে বিউটি পার্লার ও স্পাতে কাজ করতেন। কিন্তু এক সময় বাবু শেখের সঙ্গে টাকা-পয়সা নিয়ে বিবাদ শুরু হয় তার। এরই মধ্যে হায়দ্রাবাদে দেহব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ গ্রেপ্তার করে বাবু শেখের স্ত্রী ও বোনকে। বাবুর ধারণা ওই নারীই ধরিয়ে দিয়েছে তার স্ত্রী ও বোনকে। এর কিছুদিন পরেই বাবু আলোচনা করে সব বিবাদ মিটিয়ে নেবার বাহানায় ওই নারীকে বেঙ্গালুরুতে নিয়ে যান। তার পরেই শুরু হয় নির্যাতন।
মোহাম্মদ বাবু শাইক (৩০)-এর সহযোগী রিফাদুল ইসলাম ওরফে টিকটক হৃদয় বাবু (২৫), রকিবুল ইসলাম সাগর (২৩), মোহাম্মদ বাবু শেখ (৩০) ও হাকিল (২৩) চরম নির্যাতন চালান ওই নারীর ওপর। তাদের সাহায্য করেন দুই মহিলা নসরথ ও কাজল।
এই ঘটনার পরে কোনো এক পরিচিতের সাহায্যে কেরল পালিয়ে যান ওই নারী। শুক্রবার কেরল পুলিশের সাহায্য নিয়ে বেঙ্গালুরু পুলিশ তাকে কোঝিকোড় থেকে খুঁজে বের করে নিয়ে যায়। বেঙ্গালুরুতে সরকারি হাসপাতালে মেয়েটির মেডিক্যাল টেস্ট হয়েছে।
অন্যদিকে, শুক্রবার পুলিশ হেফাজত থেকে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন হৃদয় বাবু এবং রকিবুল ইসলাম সাগর। পুলিশ তাদের পায়ে গুলি করে। আহত অবস্থায় তাদের হাসপাতালে ভর্তি করে বেঙ্গালুরু সিটি পুলিশ।