উন্নত বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন পূরণে সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব বজায় রেখেই চলতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস উপলক্ষে শনিবার সকালে সশস্ত্র বাহিনীর এক অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশকে আমরা চাই একটি উন্নত দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে গড়ে তুলতে। সেদিক লক্ষ্য রেখেই আমি সব সময় মনে করি বাংলাদেশকে সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব বজায় রেখেই চলতে হবে।
‘দেশের মানুষের অর্থনৈতিক উন্নতি করা, দারিদ্র্য দূর করা। আমাদের শুধু বর্তমান না, ভবিষ্যত বংশধরদের জন্যও তাদের শিক্ষা-দীক্ষা, স্বাস্থ্য সেবা থেকে শুরু করে কর্মসংস্থান ব্যাপকভাবে করা। সেখানেও তাদের শিক্ষা দেয়া এবং সেভাবে গড়ে তোলা সেটাই আমাদের কাজ।’
করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে সশস্ত্র বাহিনী ও বিদেশে শান্তি রক্ষায় নিয়োজিত বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের ধীর স্থিরভাবে পরিস্থিতি মোকবিলার আহ্বান জানান সরকার প্রধান।
তিনি বলেন, ‘আমি জানি এই কোভিড ভীষণভাবে মানুষকে কষ্ট দিচ্ছে। এই সময় খুব ধীর স্থিরভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে। কারণ, সবচেয়ে বেশি অসহিষ্ণুতা, একটা অনিশ্চয়তা দেখা দিচ্ছে।
‘এই সময় আমাদের একটু ধীরস্থিরভাবে চলতে হবে। আল্লাহর ওপর ভরসা রাখতে হবে। আমরা যে শান্তিতে বিশ্বাস করি সেই শান্তির সংস্কৃতিটা আমাদের সব সময় মনে রাখতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব শান্তি রক্ষায় যারা কাজ করে যাচ্ছেন, তারা বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্বই করছেন একইভাবে এবং বাংলাদেশের ভাবমুর্তি উজ্জল করছেন।
‘আমি জানি আপনাদের কষ্ট হয়। বিদেশে বৈরী পরিবেশে থেকে কাজ করে যাচ্ছেন। আসলে এটা একটা চ্যালেঞ্চও। এই চ্যালেঞ্চ নেয়ার জন্যও সাহস প্রয়োজন। আন্তরিকতাও প্রয়োজন। সেই কাজটিই আপনারা করে যাচ্ছেন।
‘যেকোনো জটিল অবস্থায় অনেক সময় আমরা দেখেছি যে অনেক দেশ (শান্তিরক্ষা মিশনে) যেতে চায় না। যখন আমাদের কাছে বলা হয়েছে, আমি বলেছি হ্যাঁ, আমরা বাঙালিরা যেকোনো জটিল অবস্থায়, যেকোনো বৈরী পরিবেশে থাকার মতো সাহস রাখি। কাজেই আমাদের শান্তিরক্ষিরা পারবে। সবচেয়ে সংঘাতপূর্ণ জায়গা সবচেয়ে জটিল জায়গাগুলোতেই আজকে আমাদের শান্তিরক্ষীরা অবদান রেখে যাচ্ছে।’
প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে করোনা পরিস্থিতিতে সরকারে নেয়া নানা পদক্ষেপও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাস, সারা বিশ্বকে স্থবির করে দিয়েছে। অনেক উন্নত দেশই হিমশিম খাচ্ছে। তবুও আমাদের প্রচেষ্টা, আমাদের বাংলাদেশে সবাই যাতে নিরাপদ থাকতে পারে বা করোনার কারণে দেশে প্রাণহানি না হয় বা এর প্রাদুর্ভাব বেশি না ছড়ায়।
‘পাশাপাশি আর্থ সামাজিক কর্মকাণ্ডও যেন স্থবির না হয়ে যায় সেদিকে লক্ষ্য রেখে আমরা আমাদের বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে যাচ্ছি। এরই মধ্যে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছে। এটাকে আমাদের ধরে রাখতে হবে। আমরা সেভাবেই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আমাদের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়েছে।’
করোনার জন্য শিক্ষা খাতের সমস্যা দ্রুত দূর করার আশ্বাস দেন সরকার প্রধান।
বিদেশে শান্তিরক্ষীরা যে সম্মান অর্জন করেছেন তা ধরে রাখার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের শান্তিরক্ষীরা যে মিশনেই গেছেন। যেখানেই জাতিসংঘের পতাকাকে সমুন্নত রাখার পাশাপাশি বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জল করেছেন।
‘আমার সবচেয়ে ভালো লাগে যখনই আন্তর্জাতিক কোনো মিশনে গেছি, যে দেশগুলোতে আমাদের শান্তিরক্ষীরা যেখানেই কাজ করছেন সে দেশগুলোর সরকার প্রধান বা সবাই তাদের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। এজন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। যে সম্মানটা আমরা পেয়েছি, এটাকে ধরে রেখে এগিয়ে যেতে হবে।’