বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মাগুরার ওপর দিয়ে যাবে ট্রেন

  •    
  • ২৭ মে, ২০২১ ১৬:০১

সরকারপ্রধান বলেন, ‘মাগুরায় কখনও রেললাইন ছিল না। পাশ দিয়ে রেললাইন গেছে। এ জন্য বহুদিন ধরে সেখানকার বাসিন্দাদের একটা আকাঙ্ক্ষা ছিল রেললাইনটির কয়েক মাইল সামনে একটা স্টেশন করে দিলে মাগুরার সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপিত হবে। পদ্মা সেতু হওয়ার পর এ সুফলটা মাগুরাবাসীও পাবেন।

লাইন না থাকায় এত দিন মাগুরার সঙ্গে অন্য জেলাগুলোর রেল যোগাযোগ ছিল না। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই ছিল মাগুরাবাসীর আক্ষেপ। তবে আশার কথা হলো, বেশি দিন আর আক্ষেপ করতে হবে না তাদের।

গণভবন থেকে বৃহস্পতিবার সকালে ভিডিও কনফারেন্সে ফরিদপুরের মধুখালী থেকে কামারখালী হয়ে মাগুরা পর্যন্ত নতুন রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ওই সময় সরকারপ্রধান বলেন, মাগুরায় কখনও রেললাইন ছিল না। পাশ দিয়ে রেললাইন গেছে। এ জন্য বহুদিন ধরে সেখানকার বাসিন্দাদের একটা আকাঙক্ষা ছিল রেললাইনটির কয়েক মাইল সামনে একটা স্টেশন করে দিলে মাগুরার সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপিত হবে। পদ্মা সেতু হওয়ার পর এ সুফলটা মাগুরাবাসীও পাবেন।

‘সেখানে আরেকটু বাকি থেকে যায়। আমি মনে করি মেহেরপুর পর্যন্ত করে দেয়া যেতে পারে সংযোগটি। কুষ্টিয়া থেকে মেহেরপুর পর্যন্তও কিন্তু এ সংযোগটা করে দেয়া যেতে পারে। বেশি সময় লাগবে না। মেহেরপুর যেহেতু মুজিবনগর সরকারের রাজধানী, সেখানেও একটা রেল যোগাযোগের পরিকল্পনা আমাদের নিতে হবে।’

এ সময় রেলের উন্নয়নে সরকারের নানা পদক্ষেপ বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন সরকারপ্রধান।

তিনি বলেন, ‘২১ বছর পর আওয়ামী লীগ যখন সরকারে আসে তখন থেকে আমরা প্রচেষ্টা চালাই যে জাতির পিতার অসমাপ্ত কাজগুলো সমাপ্ত করব। সেদিকে লক্ষ রেখে যেমন অন্য সব দিক নিয়ে আমরা কাজ করি, তেমনি যোগাযোগব্যবস্থা পুনর্গঠনে আমরা উদ্যোগ নিই।’

‘আর সেখানে সড়ক বা রেল পরিবহন, আমাদের নৌপথ, আমাদের আকাশপথ অর্থাৎ বিমান সবগুলোই আমরা কিন্তু বিশেষভাবে গুরুত্ব দিই। রেলওয়ে নিয়ে আমরা আলাদাভাবে একটা মন্ত্রণালয় করে দিই যাতে করে আলাদা বাজেট থাকে এবং রেলের উন্নয়ন হয়।’

তিনি বলেন, ‘এর কারণ হচ্ছে বিএনপি আমলে বিশেষ করে খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে বিশ্বব্যাংকের পরামর্শে রেলের সব যোগাযোগ বন্ধের কাজ হাতে নিয়েছিল। অনেক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়, অনেক সাব-লাইন বন্ধ হয়ে যায়। অনেক স্টেশন বন্ধ হয়ে যায়। পুরো রেল যোগাযোগটাকে তারা ধ্বংস করে দেয়।

‘গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের মাধ্যমে রেলের অনেক লোককে বিদায় দিয়ে দেয়। আমরা যখন সরকারে আসি, বঙ্গবন্ধু সেতু, যমুনা নদীর ওপর রেল যোগাযোগ স্থাপন করি। সেই সাথে রেল যোগাযোগ পুনঃস্থাপনের কাজ আমরা হাতে নিই।’

সারা দেশে রেল নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে ব্যাপক উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলেও জানান বঙ্গবন্ধুকন্যা।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এর মাধ্যমে সাধারণ মানুষের যোগাযোগের মাধ্যমটা সহজতর হয়। অল্প খরচে পণ্য পরিবহন করতে পারে তারা। একদিকে ব্যবসা-বাণিজ্য যেমন চলে, অপরদিকে মানুষের যাতায়াতও সহজ হয়। সেদিকে লক্ষ রেখে আমরা রেলকে গুরুত্ব দিই।

‘কারণ অন্যের পরামর্শে আমরা চলি না। বাংলাদেশটা কীভাবে চলবে, উন্নত হবে, মানুষের ভাগ্য কীভাবে পরিবর্তন হবে, বাংলাদেশটা কীভাবে উন্নত হবে আমরা সেটাকেই গুরুত্ব দিই। আর সেটাকে গুরুত্ব দিয়েই আজকে সমগ্র বাংলাদেশে রেল যোগাযোগে ব্যাপক কর্মসূচি আমরা হাতে নিয়েছি। এমনটি আমরা যেসব এলাকায় রেল নেই, সেসব এলাকাতেও রেল সংযোগটা দিয়ে দিচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু সেতুর সাথে রেল যোগাযোগটা করেছিলাম বলে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগটা বেড়ে যায়। আজকে সেই রেলসেতুর সাফল্য দেখে যারা একসময় রেল বন্ধই করে দিতে চেয়েছিল, তারাই আবার এখন আমাদের বলছে সেখানে আরেকটা রেলসেতু করার জন্য। অর্থাৎ যমুনা নদীর ওপর আরেকটা ডেডিকেটেড রেলসেতু, সেটার ভিত্তিপ্রস্তরও আমরা স্থাপন করেছি।

‘তাছাড়া বিভিন্ন এলাকায় যেমন ঢাকা-চট্টগ্রাম ডাবল লাইন করা। যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে নির্বাচনি ইশতেহারেও বিষয়টা ছিল। কাজেই আমরা সেটাও কিন্তু করে দিয়েছি। বিশেষ করে ঢাকা-মোংলা একটা রেললাইন নির্মাণ এই সংযোগটা আমরা তৈরি করছি। এটা একসময় খুলনা-বাগেরহাট হয়ে ছিল। বাগেরহাটের লাইনটা বন্ধ করে দিয়েছিল খালেদা জিয়া সরকার।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা নতুন করে আরও আধুনিকভাবে খুলনা-মোংলা রেললাইন, ঢাকা-টঙ্গী ডুয়েলগেজ রেললাইন, টঙ্গী-জয়দেবপুরে ডাবলগেজ রেললাইন, আখাউড়া- লাকসাম ডাবলগেজ রেললাইন, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ডুয়েলগেজ রেললাইন নির্মাণ করব।

‘ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইস্পিড রেললাইন প্রকল্প এখন পরীক্ষামূলক পর্যায়ে আছে। সেটা আমাদের দেশের মাটি কতটুকু স্পিড নিতে পারবে সেটা পরীক্ষা করেই একটা ফিজিবিলিটি স্টাডি করে আমরা সিদ্ধান্ত নেব।’

তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে বড় কথা আমরা পদ্মা সেতু নির্মাণ করছি, সেখানে আমরা রেললাইন নির্মাণ করছি। পদ্মা সেতু পার হয়ে ভাঙা হয়ে ডান দিকে যখন আমরা যশোর, খুলনা পর্যন্ত যোগাযোগ করব। অপরদিকে সোজা বরিশাল হয়ে একেবারে পায়রা নৌবন্দর পর্যন্ত আমরা রেললাইন করব। সে পরিকল্পনাও আমরা নিয়েছি।

‘বরিশাল অঞ্চলে বিশাল প্রশস্ত নদী রয়েছে। কাজেই সেখানে রেললাইন করা, যেটা ব্রিটিশরাও করতে পারেনি, আমরা উদ্যোগ নিয়েছি স্টাডি চলছে। ব্রিটিশদের অনুরোধ করেছি যে তারা যেন এই রেলটা নির্মাণ করে দেয়। সে পরিকল্পনা নিয়ে আমরা এগুচ্ছি। সমগ্র বাংলাদেশটাকেই আমরা রেলের আওতায় নিয়ে আসছি।’

ভারতের সাথে বন্ধ রেল যোগাযোগ পুনঃস্থাপনে সরকারের কর্মসূচিও তুলে ধরেন সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, ‘এ ছাড়া ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ হওয়ার পরে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের যে জায়গাগুলোতে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, আমরা সেগুলো পুনরায় স্থাপন করছি।

‘আমরা এখন শিলিগুড়ি পর্যন্ত একটা যোগাযোগ স্থাপন করব,’ যোগ করেন তিনি।

এ বিভাগের আরো খবর