দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭১ সালের ২০ ডিসেম্বর গুলিস্তানের জিপিও ভবনের কয়েকটি কক্ষ নিয়ে যাত্রা শুরু ডাক অধিদপ্তর। এরপর জিপিও ভবনের তৃতীয় তলা থেকে চলে প্রশাসনিক কার্যক্রম। দীর্ঘ প্রায় ৫০ বছর পর নতুন প্রধান কার্যালয় পেয়েছে ডাক বিভাগ।
গণভবন থেকে বৃহস্পতিবার সকালে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে আগারগাঁওয়ে ডাক বিভাগের নতুন ভবন উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
নতুন ডাক ভবনের উদ্বোধনের দিন স্মরণীয় করে রাখতে একটি বিশেষ স্মারক ডাকটিকিটও অবমুক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।
রাজধানীর গুলিস্তানের জিপিও মোড়ের নাম মূলত এসেছে ডাক বিভাগের কারণেই। ডাক বিভাগের প্রধান কার্যালয়ের অবস্থান হওয়ায় জিরো পয়েন্ট এলাকাটি জিপিও মোড় নামে পরিচিতি পায়।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে নতুন এই ভবনটির প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আধুনিক বিল্ডিং হয়েছে। খুব সুন্দর ভবন।
তিনি বলেন, উন্নত সুবিধা রেখে ভবনটি হয়েছে, যাতে গ্রাহকসেবা বাড়ে। ওই এলাকার অন্যান্য ভবন থেকে এটা একদম আলাদা। লেটার বক্স তো মানুষ ভুলেই যাচ্ছে। এটা দেখলে মনে হবে যে না, একটা বক্স আছে। এটা থাকবে।
অনুষ্ঠানে করোনার মধ্যে অনলাইন কেনাকাটার ক্ষেত্রে ডাক বিভাগকে এগিয়ে আসার নির্দেশ দেন সরকারপ্রধান। পচনশীল পণ্য পরিবহনে কুলিং ব্যবস্থাসহ ওয়্যার হাউজ নির্মাণের তাগিদও দেন তিনি।
সরকারপ্রধান বলেন, করোনার জন্য অনলাইন কেনাবেচা বেড়েছে। পচনশীল জিনিসও যেন ডাকের মাধ্যমে পাঠানো যায় সে ব্যবস্থা করতে হবে।
রান্না করা খাবারও যেন যেকোনো স্থানে পাঠানো যায়, এ জন্য কুলিং সিস্টেম দরকার। এভাবে সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে হবে। অনলাইনে ক্রয়-বিক্রয় বাড়ছে। ডাক বিভাগ পিছিয়ে থাকলে হবে না। এটা ডাক বিভাগের জন্য একটা বড় ব্যবসা হতে পারে।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ৯১ কোটি ৭৩ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে ডাক বিভাগের নতুন এ ভবন। ২০১৮ সালের ২০ মার্চ বাংলাদেশ ডাক অধিদপ্তরের সদর দপ্তর নামের এই প্রকল্পটি একনেকের অনুমোদন পায়। ডাকের আইকনিক সিম্বল ডাকবাক্সের আদলে নকশা করা হয়েছে ভবনটির।
ডাক বিভাগ বলছে, ১৪ তলা এই ভবনে রয়েছে দুটি বেজমেন্ট। থাকছে সুসজ্জিত ও সমৃদ্ধ লাইব্রেরি, আধুনিক পোস্টাল মিউজিয়াম, সুপরিসর অডিটরিয়াম, ক্যাফেটেরিয়া, ডে-কেয়ার সেন্টার, মেডিক্যাল সুবিধা, অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা এবং সার্বক্ষণিক ওয়াইফাইসহ অন্যান্য তথ্যপ্রযুক্তিগত সুবিধা।
ডাক বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, গুলিস্তানের ভবনটিতে ডাকের কার্যক্রম স্বাধীনতার পর শুরু হলেও এটি ৬০ বছরের পুরোনো। জিপিও ভবনের ঊর্ধমুখী সম্প্রসারণ আর সম্ভব নয়। এর ফলে নতুন একটি ভবন নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়।