বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বাবুনগরী-মামুনুলদের সম্পদের তথ্য চাইল দুদক

  •    
  • ২৬ মে, ২০২১ ১৮:৩২

সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ঢাকা জেলা রেজিস্ট্রারকে পাঠানো চিঠিতে হেফাজত নেতাদের পরিচালিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জমির দাগ, খতিয়ানসহ নথি চাওয়া হয়েছে। আর বিএফআইইউর প্রধানকে পাঠানো চিঠিতে সবার ব্যাংক হিসাবের তথ্য-উপাত্ত চাওয়া হয়েছে।

জুনায়েদ বাবুনগরী, মামুনুল হকসহ হেফাজতে ইসলামের ৪৬ নেতার সম্পদের হিসাব চেয়ে সরকারি চারটি দপ্তরে চিঠি পাঠিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

দুদকের পরিচালক আকতার হোসেন সোমবার হেজাফতের ওই নেতাদের আয়-ব্যয়, আয়ের উৎস, অবৈধ ও হিসাববহির্ভূত সম্পদের খোঁজে চিঠি পাঠিয়েছেন।

সরকারি দপ্তরগুলো হলো বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট (বিএফআইইউ), চার জেলার (ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও নেত্রকোণা) পুলিশ সুপার, তিন থানার (ফটিকছড়ি, হাটহাজারী ও পটিয়া) সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ঢাকা জেলা রেজিস্ট্রার।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ঢাকা জেলা রেজিস্ট্রারকে পাঠানো চিঠিতে হেফাজত নেতাদের পরিচালিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জমির দাগ, খতিয়ানসহ নথি চাওয়া হয়েছে। আর বিএফআইইউর প্রধানকে পাঠানো চিঠিতে সবার ব্যাংক হিসাবের তথ্য-উপাত্ত চাওয়া হয়েছে।

এর আগে গত ১৭ মে দুদকের মহাপরিচালক সায়ীদ মাহবুব খানের (বিশেষ তদন্ত) তত্ত্বাবধানে ও দুদকের পরিচালক আকতার হোসেনকে প্রধান করে ছয় সদস্যের একটি দল গঠন করা হয়। তদন্তের পুরো বিষয়টি তারা দেখবেন।

এই দলের বাকি সদস্যরা হলেন দুদকের উপপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম ও মোহাম্মদ নুরুল হুদা, সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ ও মো. সাইদুজ্জামান এবং উপসহকারী পরিচালক সহিদুর রহমান।

যাদের তথ্য চাওয়া হয়েছে

দুদক যাদের তথ্য চেয়েছে, তারা হলেন হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির জুনায়েদ বাবুনগরী, সাবেক কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির আহমেদ আবদুল কাদের ও মাহফুজুল হক, যুগ্ম মহাসচিব জুনাইদ আল হাবিব, মামুনুল হক, নাসির উদ্দিন মনির, জালাল উদ্দিন, অর্থ সম্পাদক মনির হোসাইন কাসেমী, সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামবাদী, আইনবিষয়ক সম্পাদক শাহীনুর পাশা চৌধুরী, সহকারী মহাসচিব ফজলুল করিম কাসেমী ও আজাহারুল ইসলাম, মুসা বিন ইসহাক, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আতাউল্লাহ আমিন ও সাখাওয়াত হোসাইন রাজী, মীর মুহাম্মদ ইদ্রিস, সহকারী অর্থ সম্পাদক মুহাম্মদ আহসান উল্লাহ, শিক্ষা ও সংস্কৃতি সম্পাদক হারুন ইজাহার, সহকারী আন্তর্জাতিক সম্পাদক শোয়াইব আহমেদ, সহকারী প্রচার সম্পাদক কামরুল ইসলাম কাসেমী, ইসলামি বক্তা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, নুর হোসাইন নুরানী, মাহমুদুল হাসান গুনবী, হেফাজত আমিরের ব্যক্তিগত সহকারী ইনামুল হাসান ফারুকী, কেন্দ্রীয় নেতা জাকারিয়া নোমান, আজহারুল ইসলাম, কামরুল ইসলাম কাসেমী।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসার শিক্ষাসচিব আবদুর রহিম কাসেমী, ওই মাদ্রাসার শিক্ষক মুহসিনুল করিম, জামিয়া ইসলামিয়া হলিমিয়া মধুপুর মাদ্রাসার নায়েবে মুহতামীম ওবায়দুল্লাহ কাসেমী।

মধুপুরের পীরের ছেলে আবু আম্মার আবদুল্লাহ, হেফাজতের কর্মী মো. আহম্মেদ কাশেমী, এহসানুল হক, রাবেতাতুল ওয়ায়েজিনের সাধারণ সম্পাদক হাসান জামিল, জাতীয় ওলামা মাশায়েখ পরিষদের সভাপতি খলিলুর রহমান মাদানি, মুফতি ফজলুল হক আমিনীর নাতি আশরাফ উদ্দিন মাহদি, মোহাম্মদ উল্লাহ জামি, বাহিরদিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ শাহ আকরাম আলী, শামসুল উলুম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ কামরুজ্জামান, সদস্য কেফায়েত উল্লাহ, জয়নাল আবেদীন ও সামছুল ইসলাম জিলানী, গাজী ইয়াকুব ওসমানী, আসাদুল্লাহ আসাদ, আলী হাসান উসামা ও আসাদুল্লাহ অসাদ।

গত ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে মুক্তিযুদ্ধের বন্ধু ভারতের সরকারপ্রধান নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে সহিংস হয়ে ওঠে হেফাজতে ইসলাম।

মোদিকে ঠেকাতে হঠাৎ করেই মাঠে নামে সংগঠনটি। যদিও সফরের চার দিন আগে ২২ মার্চ ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে সংগঠনটি ঘোষণা দেয়, মোদির সফরের বিরোধী হলেও তারা কোনো কর্মসূচি দেবে না।

তবে হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক ২৫ মার্চ বায়তুল মোকাররমের সামনের সমাবেশে ঘোষণা করেন, মোদি দেশে এলে সরকার পতনের ক্ষেত্র তৈরি করবেন তারা।

২৬ মার্চ জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম এলাকায় সরকার সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষের পর চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসাসংলগ্ন মসজিদ থেকে মিছিল নিয়ে গিয়ে স্থানীয় ডাকবাংলো ও এসি ল্যান্ড অফিসে হামলা করেন হেফাজত কর্মীরা। আক্রমণ হয় থানাতেও। তখন পুলিশ গুলি চালালে নিহত হন চারজন।

এর প্রতিবাদে ২৮ মার্চ হরতাল ডাকে সংগঠনটি।

শান্তিপূর্ণ হরতালের প্রতিশ্রুতি দিলেও সেদিন তাণ্ডব ছিল ভয়াবহ। বিশেষ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে হেফাজত কর্মীরা।

গত ৩ এপ্রিল সোনারগাঁয়ে রয়েল রিসোর্টের একটি কক্ষে এক নারীসহ স্থানীয়দের হাতে অবরুদ্ধ হন মামুনুল হক। সে সময় হেফাজতের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা তাকে উদ্ধার করতে এগিয়ে যান।

তারা রিসোর্টের পাশাপাশি সোনারগাঁ আওয়ামী লীগের কার্যালয়, স্থানীয় যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের বাড়িঘর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর চালান। হামলা হয় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দুই শতাধিক যানবাহনেও।

এরপর ১৮ এপ্রিল মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে মামুনুলকে গ্রেপ্তার করা হয়।

মামুনুল গ্রেপ্তারের পরদিন ১৯ এপ্রিল ভিডিওবার্তায় এসে বাবুনগরী ‘মাননীয় সরকার’ উল্লেখ করে গত ২৬ মার্চের তাণ্ডবের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন। এরপর ২৬ এপ্রিল আগের কমিটি বিলুপ্ত করে পাঁচ সদস্যের নতুন কমিটি ঘোষণা করেন বাবুনগরী।

এ বিভাগের আরো খবর