ব্যাপক বৃষ্টি আর ঝোড়ো বাতাস নিয়ে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ভারতের ওড়িশা রাজ্যে আঘাত হেনেছে।
হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, স্থানীয় সময় সকাল ৯টার কিছু পরই ওড়িশায় আছড়ে পড়তে থাকে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। এতে এখন পর্যন্ত একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
ওড়িশার উত্তরাঞ্চলীয় উপকূলে ইয়াসের আছড়ে পড়ার সময় বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৫৫ কিলোমিটার।
পশ্চিমবঙ্গের আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর জানায়, স্থানীয় সময় সকাল সোয়া ৯টার দিকে ইয়াস ওড়িশার উপকূলে আঘাত হানে। তখন বাতাসের গতিবেগ ছিল ১৩০ থেকে ১৪০ কিলোমিটার, যা সর্বোচ্চ হয়ে ১৫৫ কিলোমিটার পর্যন্ত ছিল। অন্তত তিন ঘণ্টা উপকূলে ভারী বৃষ্টি ঝরাতে পারে। এরপর সেটি স্থলভাগ দিয়ে অতিক্রম করতে পারে।
আবহাওয়া বুলেটিনে রাজ্যের মৌসম ভবন জানায়, উপকূলে আছড়ে পড়লেও এখন ধামড়া থেকে ৪৫ কিলোমিটার পূর্ব-উত্তরপূর্ব, দিঘা থেকে ৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ, দক্ষিণ-পশ্চিম ও বালাসুর থেকে ৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ, দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থান করছে ইয়াস।
ইয়াসের ঝোড়ো বাতাসে কলকাতাসহ বেশ কিছু জায়গায় ভারী বৃষ্টিপাত ও ঝোড়ো হাওয়া অব্যাহত আছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, ইয়াস থেকে সুরক্ষায় পশ্চিমবঙ্গের সাড়ে ১১ লাখ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
এ ছাড়া ওড়িশা থেকে আরও দুই লাখ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়েছে রাজ্য সরকার।
বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেয়া সর্বশেষ বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ওড়িশায় আঘাত হানার আগেই সকাল থেকে ঝড়ের প্রভাব পড়ে দেশের উপকূলে।
বিজ্ঞপ্তিতে অধিদপ্তর জানায়, ইয়াস উপকূল অতিক্রমের সময় খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, ভোলা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর ও চট্টগ্রাম জেলা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোতে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। ঘণ্টায় ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের কেন্দ্রের ৮৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার থেকে ১৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে।
মঙ্গলবার দুপুরেই ইয়াসের দূরত্ব কমে আসায় সতর্কসংকেত বাড়িয়ে দেয় অধিদপ্তর। উপকূলের অনেক অংশ উঁচু জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে।
ইয়াস ও পূর্ণিমার প্রভাবে খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, ভোলা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর ও চট্টগ্রামের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে তিন থেকে ছয় ফুট বেশি উচ্চতার জোয়ারে প্লাবন হতে পারে। এরই মধ্যে কয়েকটি অঞ্চলে পানি ঢুকেছে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।