বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বৃষ্টি গরমের অনুভূতি কমাল ১৩ ডিগ্রি

  •    
  • ২৪ মে, ২০২১ ২২:০৪

দিনের বেলায় ঢাকায় গরমের যে অনুভূতি, তা এত ছিল না সৌদি আরবের রিয়াদেও। তবে আরব আমিরাতের দুবাই শহরে দেখা গেছে সমান গরম। দুই শহরেই গরমের অনুভূতি ছিল ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে বৃষ্টি নামার পরে পরেই ঢাকায় উধাও সেই অনুভূতি। রাত ১০টায় দেখা যায় তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি আর গরমের অনুভূতি ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

তীব্র গরমে হাঁসফাঁস করতে থাকা মানুষদের স্বস্তি দিয়ে আকাশ ভেঙে নেমেছে বৃষ্টি। মানুষের মনে আনন্দ। টানা কয়েকদিন আরবের মতো গরম থেকে রক্ষা পাওয়ার সম্ভাবনায় দেখা দিয়েছে স্বস্তি।

সোমবার সন্ধ্যার পর থেকেই আকাশে মেঘের ঘনঘটা। বর্ষার মতো মেঘ না ডাকলেও বৃষ্টি হতে পারে, সেটা বোঝাই যাচ্ছিল।

রাত নয়টার পর থেকে প্রথমে শুরু হয় গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি। কিছুক্ষণ পর বেশ জোরেশোরেই নামে বর্ষণ।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তা রুহুল কুদ্দুস নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এটি গরমের তীব্র অনুভূতিটা কমিয়ে দেবে।’

বঙ্গোপসাগরে জন্ম নেয়া ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের সঙ্গে এই বৃষ্টির সম্পর্ক আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘না, ইয়াসের সঙ্গে এই বৃষ্টির কোনো সম্পর্ক নেই। এটা লোকাল ফরমেশন। তবে আপনি এটাকে ইয়াস এর প্রভাব বলতে পারেন। কারণ, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বাতাসের গতিবিধি পরিবর্তন হয়ছে। তবে এটি কিছু সময় পর কেটে যাবে।’

আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভাষ্যমতে মঙ্গলবারও বৃষ্টি হবে। ঢাকার পাশাপাশি ভিজবে দেশের নানা অঞ্চল। আকাশও থাকবে মেঘলা। উত্তাপ ছড়াতে পারবে না সূর্য।

বৃষ্টি নামার সঙ্গে সঙ্গে দেশে যে আরবের মতো গরমের অনুভূতি দেখা দিয়েছিল, তা উবে গেছে।

বেলা তিনটার দিকে ঢাকার মিরপুর ও বাড্ডায় গরমের অনুভূতি ছিল ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যদিও ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৮.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

গরমের অনুভূতি এত ছিল না সৌদি আরবের রিয়াদেও। তবে আরব আমিরাতের দুবাই শহরে দেখা গেছে সম পরিমাণ অনুভূতি।

তবে বৃষ্টি নামার পরে পরেই উধাও সেই অনুভূতি। রাত ১০টায় দেখা যায় তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি আর গরমের অনুভূতি ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়াবিদ রুহুল কুদ্দুস নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঢাকার পাশাপাশি আশেপাশেও কয়েকটি অঞ্চলে বৃষ্টির দেখা মিলেছে।’

তাপদাহ কমবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আজই কিন্তু গরমের প্রভাব কমতে শুরু করেছে। আগামী দুই তিনদিনে তাপমাত্রা আরও কমতে থাকবে।’

আবহাওয়া পূর্বাভাস

অধিদপ্তর বরছে, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বঞ্জসহ বৃষ্টি হতে পারে।

সেই সঙ্গে বিচ্ছিন্নভাবে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস এর প্রভাবে এই বৃষ্টি নয়, বলছে আবহাওয়া অধিদপ্তর

রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অনেক জায়গা থেকে প্রশমিত হতে পারে।

দিনের তাপমাত্রা এক থেকে তিন ডিগ্রি সেলসিয়াম হ্রাস পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা এক থেকে দুই ডিগ্রি কমতে পারে।

দিনভর দুঃসহ গরম

রতন মিয়া। রিকশা চালান। বয়স ২৫। পেটানো শরীর।

এমনিতে পরিশ্রমের কাজ। তার ওপর তীব্র গরম। দিনভর গা ভিজে থাকে ঘামে। লবণ বের হয়ে যায় বলে ক্লান্ত হয়ে পড়েন।

সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয়ের সামনে চায়ের দোকানে ক্লান্ত-পরিশ্রান্ত শরীরে বসেছিলেন রতন।

অনেক যাত্রীকে ফিরিয়ে দিয়েছেন। কারণ জানতে চাইলে রতন বলেন, ‘এই গরমে জান চলে না, এত গরম কমই দেখছি। একটা খেপ মারলেই গরমে শেষ হইয়া যাই। এর লাইগা বিশ্রাম নিতাছি।’

গত এক সপ্তাহ ধরেই তীব্র গরম পোড়াচ্ছে চারপাশ। তবে আবহাওয়া অধিদপ্তর তাপমাত্রার যে হিসাব দিচ্ছে, তাতে গরমের অনুভূতি এত বেশি হওয়ার কথা ছিল না।

কিন্তু যখন ঘটনাটি ঘটছে, তখন আয় কমে যাচ্ছে রতনদের।

দিনের বেলায় ঢাকায় দুবাইয়ের সমান গরমের অনুভূতিতে পুড়েছে মানুষ

করোনাকালে শহর ধীরে ধীরে কর্মমুখর হলেও পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি পরিস্থিতি। আবার এমন গরমে একান্ত বাধ্য না হলে বাইরে যাওয়াও কমিয়ে দিয়েছে নগরবাসী। দুইয়ে মিলে আয়ে ভাটা পড়েছে এই রিকশাচালকের।

তিনি আরও বলেন, ‘অন্য দিনে এই সময়ের মধ্যে ৪০০/৫০০ টাকা কামাই। আর আজ এখনও ২০০টাকাও কামাই নাই, গত কয়দিন ধইরা মনে হইতাছে বেশি গরম পরতাছে।’

তবে পোয়াবারো মো. শহীদুল্লাহর। তিনি ডাব বিক্রি করেন। সূর্য যখন পুড়িয়ে দিচ্ছে চারপাশ, তখন তার সঙ্গে দরদাম করার সুযোগ গেছে কমে।

বিক্রি কেমন?

শহীদুল্লাহ বলেন, ‘আগের চাইতে অনেক ভালো। আগে দিনে ৪০/৫০ টা ডাব বেচতাম। এহন বেচি কমসে কম ১০০টা বেচি।’।

বিক্রি বাড়ার কারণ অনুমেয় সহজেই।

ডাব বিক্রেতাও বললেন, ‘যেই গরম পড়ছে, ডাব না খাইয়া মানুষ করব কী?

উল্টোচিত্র জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের চা বিক্রেতা মো. সামাদের দোকানে। কাঠফাটা রোদে খা খা তার দোকান।

জানান চায়ের চাহিদা এখন কম। বললেন, ‘যেই গরম পড়ছে, মানুষ চা খাইয়া কী আরও গরম বাড়াইব নাকি?’

তাপমাত্রার অতিরিক্ত সাত ডিগ্রি অনুভব যে কারণে

গত এক সপ্তাহ ধরেই তীব্র গরম পোড়াচ্ছে চারপাশ। তবে আবহাওয়া অধিদপ্তর তাপমাত্রার যে হিসাব দিচ্ছে, তাতে গরমের অনুভূতি এত বেশি হওয়ার কথা ছিল না।

থার্মোমিটারের পারদে তাপমাত্রা যত, গরম লাগছে তার চেয়ে অনেক বেশি।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসাব বলছে, সোমবার ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৮.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিন তা ছিল ৩৭.৮ ডিগ্রি।

আবহাওয়াবিদ আব্দুল মান্নান বলেন, ‘এর চেয়েও বেশি তাপমাত্রা এ বছরে রেকর্ড করা হয়েছিল।’

তবে এই তাপমাত্রায় যতটা গরম অনুভূত হওয়ার কথা, লাগছে তার চেয়ে অন্তত সাত ডিগ্রি বেশি।

গত কয়েকদিন তাপমাত্রার চেয়ে গরমের অনুভূতি বেশি হওয়ার জন্য বাতাসে জলীয় বাস্প বেশি দায়ী বলছে আবহাওয়া অধিদপ্তর

সোমবার ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় গরমের অনুভূতি দেখা গেছে ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মরুর দেশ সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদেরও এতটা গরম ছিল না। সেখানে গরমের অনুভূতি ছিল ৪৩ ডিগ্রি।

ঢাকার সমান গরম দেখা গেছে আরব আমিরাতের দুবাইয়ে। সেখানে গরমের অনুভূতি দেখা গেছে ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এই তাপমাত্রায়ও এত গরম অনুভূত হওয়ার কারণ কী- এমন প্রশ্নে আবহাওয়াবিদ আব্দুল মান্নান বলেন, ‘মূলত দুটি কারণে অতিরিক্ত গরম অনুভব হচ্ছে। এর একটি হলো বঙ্গোপসাগর থেকে জলীয় বাষ্পের যোগান বেড়েছে। বাতাসে জলীয় বাম্প বেশি থাকলে এবং তখন প্রখর সূর্য কিরণ থাকলে গরম বেশি লাগে।’

এ বিভাগের আরো খবর