বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পাসপোর্টে ইসরায়েল শব্দ বাদ দেয়ায় ক্ষোভ ফখরুলের

  •    
  • ২৪ মে, ২০২১ ১৯:৩০

‘ইসরায়েলি বিমানের মুহুর্মুহু হামলা ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপে যখন ফিলিস্তিনের গাজা নগরী মৃত্যুপুরীতে পরিণত হচ্ছে, ঠিক সেই সময়ে বাংলাদেশের পাসপোর্টে ইসরায়েল ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা সরিয়ে নেয়া হয়েছে। যা হতাশ করেছে গোটা বিশ্ববিবেককে।’

পাসপোর্ট থেকে ইসরায়েল শব্দ বাদ দেয়ার বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নীরবতাকে সরকারের নীতিহীন অবস্থান বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সোমবার বিকেলে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব এ ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

ফখরুল বলেন, ‘ইসরায়েলি বিমানের মুহুর্মুহু হামলা ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপে যখন ফিলিস্তিনের গাজা নগরী মৃত্যুপুরীতে পরিণত হচ্ছে, ঠিক সেই সময়ে বাংলাদেশের পাসপোর্টে ইসরায়েল ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা সরিয়ে নেয়া হয়েছে। যা হতাশ করেছে গোটা বিশ্ববিবেককে।

‘আবার ২৩ মে ফিলিস্তিনবিরোধী ওই সিদ্ধান্তে ইসরায়েল সরকারের অভিনন্দন-টুইটের প্রেক্ষিতে তা অস্বীকার করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সরকারের পজিশন ঘোষণা করা হয়। অপরদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নীরবতা গোটা বিষয়ে সরকারের নীতিহীন অবস্থান বেরিয়ে এসেছে।’

তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘আমরা এখনও ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দিইনি এবং আমরা এখনও ফিলিস্তিনের পক্ষে অত্যন্ত সোচ্চার। আমরা বিশ্বাস করি টু স্টেট সলুশ্যনে।’

পাসপোর্ট থেকে ‘একসেপ্ট ইসরায়েল’ মুছে দেয়া প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের পাসপোর্ট থেকে ইসরায়েল শব্দটি বাদ দেয়ার বিষয়টি কূটনৈতিক ক্ষেত্রে কোনো বড় ডিল নয়। এটা আমাদের পররাষ্ট্রনীতিতে কোনো প্রভাব ফেলবে না।’

ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংকট সমাধানে বাইডেনের বক্তব্য তাৎপর্যময়

এ ছাড়া ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংকট সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বক্তব্য অত্যন্ত তাৎপর্যময় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব।

তিনি বলেন, ‘ইসরায়েল কর্তৃক ফিলিস্তিনি ভূমি দখলের ঘৃণ্য পরিকল্পনা রুখে দিতে সমগ্র বিশ্ববাসীর নৈতিক সমর্থনের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে জাতিসংঘসহ বিশ্বের সব বিবেকবান রাষ্ট্রসমূহকে অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে। এই পরিপ্রেক্ষিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বক্তব্য নিঃসন্দেহে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংকট সমাধানে অত্যন্ত তাৎপর্যময়।’

গাজা পুনর্গঠনে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বলেছেন, ‘ইসরায়েলের পাশাপাশি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাই সংঘাতের একমাত্র জবাব। মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় দুই রাষ্ট্রই একমাত্র সমাধান।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সংঘাতের মূল কেন্দ্র জেরুজালেম নগরে আন্তসাম্প্রদায়িক লড়াই বন্ধ করার প্রতি জো বাইডেনের উদাত্ত আহ্বান সংকট সমাধানে ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় মার্কিন গণতন্ত্রপ্রিয় নাগরিকদের দৃঢ় সমর্থনের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের সুস্পষ্ট বহিঃপ্রকাশ।

‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপি ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংকট নিরসনে এ ধরনের সুস্পষ্ট অবস্থান গ্রহণ করায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও মার্কিন জনগণের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ, অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছে। নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতি চীনসহ অন্য সব সদস্যরাষ্ট্র আগে থেকেই যুদ্ধবিরতি করে দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের পক্ষে তাদের মত প্রকাশ করেছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, জাতিসংঘের প্রস্তাব এবং অসলো চুক্তির আলোকে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংকট সমাধানে ইসরায়েলের পাশাপাশি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ঘোষণা বাস্তবায়নের পথ সুগম করাই হচ্ছে প্রধান চ্যালেঞ্জ। চলমান হত্যাকাণ্ডকে আন্তর্জাতিক বিচার-প্রক্রিয়ায় আনার উদ্যোগসহ দুই রাষ্ট্র গঠনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন জাতিসংঘের নেতৃত্বে অতিসত্বর কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর নেতৃত্বের প্রতি আহ্বান জানাই।’

ফখরুল বলেন, ‘১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রবাসী সরকারের আমল থেকেই বাংলাদেশ বিশ্বের সব ধর্মপ্রাণ মুসলিম ও মানবতাবাদী বিশ্ববাসীর সঙ্গে স্বাধীনতাপ্রিয় ফিলিস্তিন নাগরিকদের প্রতি নৈতিক, আত্মিক ও সম্ভাব্য সব ক্ষেত্রে নিবিড়ভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।

‘অথচ গভীর হতাশা, লজ্জা ও ক্ষোভের সঙ্গে বর্তমান অবৈধ, ভোটারবিহীন নতজানু বাংলাদেশ সরকার ফিলিস্তিন নাগরিকদের ওপর ইসরায়েলি হামলার বিরুদ্ধে কেবল একটি দায়সারাগোছের বিবৃতি প্রদানের মধ্যেই নিজেদের দায়িত্ব সীমাবদ্ধ রেখেছে।

‘এমনকি ইসরায়েলি বিমানের হামলা ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপে যখন ফিলিস্তিনের গাজা নগরী মৃত্যুপুরীতে পরিণত হচ্ছে, ঠিক সেই সময় বাংলাদেশের পাসপোর্টে ইসরায়েল ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা সরিয়ে নেয়া হয়েছে। যা হতাশ করছে গোটা বিশ্ববিবেককে।’

ফিলিস্তিনের জন্য ওষুধসামগ্রী পাঠাবে বিএনপি

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে ফিলিস্তিন নাগরিকদের স্বাধীনতা-সংগ্রামে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান স্বতঃস্ফূর্ত সহযোগিতা করেছেন। তিনি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার অবিসংবাদিত নেতা ইয়াসির আরাফাতকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে কেবল বাংলাদেশের পক্ষ থেকেই অঙ্গীকারবদ্ধ ছিলেন না, তিনি ফিলিস্তিনিদের পক্ষে ওআইসি, ন্যামসহ অন্যান্য মুসলিম দেশগুলোকেও ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা রাখতে বিশেষ অবদান রেখেছেন।

‘শহিদ জিয়ার ঐতিহাসিক ভূমিকা এবং পরবর্তীকালে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দল ও সরকার থেকে শুরু করে বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি সেই একই নীতি ও অবস্থান অব্যাহত রেখেছে। মুসলিম ভ্রাতৃত্ব ও মানবতার পক্ষের শক্তি হিসেবে ফিলিস্তিনি নাগরিকদের স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে বিজয়ী হওয়ার আগ পর্যন্ত আমরা সার্বিকভাবে তাদের পাশে থাকার দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করছি। ইতিমধ্যেই আমাদের দল ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে যুদ্ধাহতদের জন্য ওষুধসামগ্রী পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’

গাজায় হামলার ১১তম দিনে এসে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার ঘোষণা দেয় ইসরায়েল।

এই ১১ দিনের এ সংঘর্ষে গাজা উপত্যকায় অন্তত ২৩২ জন নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে কমপক্ষে ১০০ জন নারী ও শিশু। আর ২ শিশুসহ নিহত হয়েছে ১২ ইসরায়েলি।

এ বিভাগের আরো খবর