রাজধানীর পল্লবীতে শিশুপুত্রের সামনে বাবা শাহীনুদ্দিন মানিককে কুপিয়ে হত্যার মামলায় গ্রেপ্তার আরেক আসামি দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।
এই আসামি ছাত্রলীগের সাবেক নেতা সুমনের জবানবন্দি রেকর্ড করেন ঢাকার মুখ্য মহানগর আদালতের (সিএমএম) হাকিম দেবদাস চন্দ্র অধিকারি।
সোমবার সুমনকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ।
এ সময় সুমন স্বেচ্ছায় হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের মিরপুর জোনাল টিমের পরিদর্শক সৈয়দ ইফতেখার হোসেন।
আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
এরপর তাকে কারাগারে আটক রাখার আদেশ দেন বিচারক।
গত ১৬ মে বিকেলে জমির বিরোধের মীমাংসার কথা বলে শাহীনুদ্দিন মানিককে পল্লবী থানার ডি-ব্লকের একটি গ্যারেজের ভেতর নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
এ ঘটনায় মানিকের মা আকলিমা বেগমের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৭ মে পল্লবী থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ১৬ মে বিকেল ৪টার দিকে সুমন ও টিটু নামের দুই যুবক শাহীনুদ্দিন মানিককে জমির বিরোধ মেটানোর কথা বলে ফোন করে ডেকে নেন।
শাহীনুদ্দিন মানিক মোটরসাইকেলযোগে পল্লবীর ডি-ব্লকের ৩১ নম্বর সড়কের ৪০ নম্বর বাসার সামনে গেলে, সুমন ও টিটুসহ ১৪-১৫ জন মিলে তাকে টেনেহিঁচড়ে ওই বাড়ির গ্যারেজের মধ্যে নিয়ে যান।
এ সময় শাহীনের ছয় বছরের ছেলে মাশরাফি গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে ছিল।
গ্যারেজে ঢুকিয়ে শাহীনকে চাপাতি, চায়নিজ কুড়াল, রামদা দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন তারা। এরপর তাকে ওই গ্যারেজ থেকে বের করে ৩৬ নম্বর বাড়ির সামনে এনে ফের দ্বিতীয় দফা কুপিয়ে ফেলে রেখে চলে যান খুনিরা। ঘটনাস্থলেই শাহীনের মৃত্যু হয়।
আকলিমার অভিযোগ, পল্লবীর সেকশন-১২ বুড়িরটেকের আলীনগর আবাসিক এলাকার হ্যাভেলি প্রোপার্টিজ ডেভেলপার লিমিটেডের এমডি এবং লক্ষ্মীপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এম এ আউয়ালের সঙ্গে জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে ভাড়া করা স্থানীয় সন্ত্রাসীদের দিয়ে এম এ আউয়াল শাহীনুদ্দিন মানিককে হত্যা করিয়েছেন। আনুমানিক পাঁচ কোটি টাকা মূল্যের ১০ একর জমি জবরদখলে বাধা দেয়ার কারণেই তাকে খুন করা হয় বলে আকলিমা অভিযোগ করেন ।
মামলার প্রধান আসামি লক্ষ্মীপুর-১ আসনের সাবেক এমপি ও ইসলামী গণতান্ত্রিক পার্টির চেয়ারম্যান এম এ আউয়াল।
অন্য আসামিরা হলেন- ছাত্রলীগের সাবেক নেতা সুমন, আবু তাহের, মুরাদ, মানিক, মনির, শফিক, টিটু, কামরুল, কিবরিয়া, দিপু, আবদুর রাজ্জাক, মরন আলী, লিটন, আবুল, বাইট্যা বাবু, বড় শফিক, কালা বাবু, নাটা সুমন ও ইয়াবা বাবু।
আসামিরা সবাই পল্লবী থানা এলাকার বাসিন্দা।