বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ট্রেন চালু হলেও যাত্রী কম

  •    
  • ২৪ মে, ২০২১ ১৫:০৩

৪৯ দিন বন্ধ থাকার পর সোমবার থেকে শর্তসাপেক্ষে শুরু হয়েছে ট্রেনে যাত্রী পরিবহন। কাউন্টার বন্ধ। এখন শুধু অনলাইনে টিকেট পাওয়া যাচ্ছে। প্রথম দিনে ট্রেনগুলোতে যাত্রীর দেখা মিলেছে কম।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকারের চলমান কঠোর বিধিনিষেধের আওতায় ৪৯ দিন বন্ধ ছিল ট্রেন চলাচল। সোমবার থেকে শর্তসাপেক্ষে শুরু হয়েছে ট্রেনে যাত্রী পরিবহন। তবে ট্রেনগুলোতে যাত্রীর দেখা মিলেছে কম।

করোনার কারণে ট্রেনের টিকিট কাউন্টারগুলো ছিল বন্ধ। রেলযাত্রার জন্য এখন শুধু অনলাইনে টিকিট পাওয়া যাচ্ছে।

প্রথম দিনে একেকটি বগিতে পাঁচ থেকে ১০ জন যাত্রী নিয়েও চলাচল করেছে অনেক ট্রেন। স্টেশনগুলোতে ছিল না চোখে পড়ার মতো ভিড়।

রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে সকালে গিয়ে দেখা যায়, স্টেশনের প্রবেশমুখেই নিরাপত্তা কর্মীদের তল্লাশিচৌকি। সেখানে যাত্রীদের তাপমাত্রা পরিমাপ করাসহ জীবাণুমুক্তকরণের ব্যবস্থা আছে। প্রত্যেক যাত্রীকেই এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে।

রেলযাত্রা শুরুর প্রথম দিনে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রীদের চাপ ছিল না একেবারেই। প্রতিটি ট্রেনে যাত্রী ছিল হাতেগোনা। অনেকটা ফাঁকা ট্রেন ছেড়ে যায় স্টেশন থেকে।

স্টেশনের টিকিট কাউন্টারগুলো বন্ধ। অর্ধেক ব্লক রেখে অনলাইনে বিক্রি হচ্ছে টিকিট।

এ অবস্থায় টিকিট না কেটেই স্টেশনে এসেছিলেন কয়েকজন যাত্রী। তারা ঢুকতে না পেরে ফিরে যান।

যাত্রীরা নিউজবাংলাকে জানান, তারা ভেবেছিলেন স্টেশনে এসে টিকেট কাটবেন। গন্তব্য কিশোরগঞ্জ। কিন্তু এখানে এসে শোনেন টিকেট কাটতে হবে অনলাইনে। তাই চলে যেতে হচ্ছে বাসস্ট্যান্ডে।

অনলাইনে টিকিট কেটে কিশোরগঞ্জ যাচ্ছেন সারাফত হোসেন। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, অনলাইনে টিকিট কাটার সময় প্রথমে একবার সার্ভারে সমস্যা হয়েছে। দ্বিতীয় চেষ্টায় কাটা গেছে। অনলাইনে পাশাপাশি দুই সিটের একটি ব্লক করা। সে জন্য দুটি সিটের মধ্যে একটির টিকিট কাটা যায়।

অনেকটা ফাঁকা প্ল্যাটফর্মে দেখা যায়, দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেনের গায়ে জীবাণুনাশক স্পে করছেন রেলওয়ের কর্মীরা। সেই সঙ্গে প্রতিটি বগির দরজার সামনেই একজন করে অ্যাটেনডেন্ট হাতে হ্যান্ড স্যানিটাইজার নিয়ে দাঁড়িয়ে। ট্রেনে উঠতে যাওয়া যাত্রীদের হাতে স্প্রে করছেন তারা।

কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেসের অ্যাটেনডেন্ট আব্দুল লতিফ জানান, স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে। বলা হয়েছে, প্রতিটি স্টেশনেই যেন নিয়ম মেনে যাত্রী তোলা হয়।

সব টিকিট অনলাইনে

রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সোমবার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন পরিদর্শন করেন। তিনি বিশেষ ব্যবস্থায় পরিচালিত ট্রেনের টিকিট বিক্রিসহ নানা বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন। ইঙ্গিত দেন রেলের সব টিকিট অনলাইনে বিক্রির বিষয়ে।

মন্ত্রী বলেন, ‘এখন স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে প্রতিদিন ৫৬টি আন্তনগর ট্রেন সারা দেশে চলাচল করবে। প্রতিটি স্টেশনে গুরুত্ব সহকারে স্বাস্থ্যবিধি মানা হবে। আমরা সেটা মনিটর করব।’

তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি মেনে গত বছরেও আমরা রেল চালু রেখেছিলাম। সেই সময় কিছু দুর্বলতা ছিল। আমরা যাত্রীদের চাপ নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনি। তখন বাধ্য হয়ে আমরা বিমানবন্দর, নরসিংদীর মতো বেশ কয়েকটি স্টেশনে যাত্রাবিরতি বন্ধ করে দিয়েছিলাম।

‘এখন টিকিট ছাড়া কেউ যেন প্ল্যাটফর্মে না আসতে পারে সেই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এতে করে যাত্রীদের চাপ নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।’

কাউন্টারে টিকিট বিক্রি হবে না উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, শুধু অনলাইনে রেলের টিকিট পাওয়া যাবে। অর্ধেক টিকিট ব্লক করা আছে। তাই চাইলে কেউ পাশাপাশি দুই সিটের টিকিট কিনতে পারবেন না। স্বাস্থ্যবিধি মানা নিশ্চিত ও চলাচল নিরুৎসাহিত করতেই এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

অনলাইনে টিকিট কাটা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, করোনা মহামারির সময় স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতেই এই ব্যবস্থা করা হয়েছে। যারা অনলাইনে অভ্যস্ত নন তারা আস্তে আস্তে শিখে নেবেন।

‘মানুষ তো বিকাশ, নগদ ব্যবহার করাও শিখেছে। তা ছাড়া রেলের টিকিট কার্যক্রম ভবিষ্যতে পুরোটাই অনলাইনে করার চিন্তা রয়েছে আমাদের।’

যাত্রী সংকট সবখানে

বিভিন্ন জেলা থেকে পাওয়া খবরে জানা যায়, ট্রেন চলাচল শুরুর প্রথম দিনে যাত্রী ছিল একেবারেই কম। অনেকেরই জানা নেই ট্রেন চলাচলের সংবাদ। আবার যাত্রীদের অনেকে অনলাইনে টিকেট সংগ্রহ করাকে ঝামেলা মনে করে যাচ্ছেন সড়ক পথে।

সোমবার সিলেটে যাত্রী নিয়ে প্রথম ট্রেনটি ছেড়ে যায় বেলা ১১টায়। ঢাকাগামী জয়ন্তিকা এক্সপ্রেসে যাত্রী ছিল একেবারে কম।

সিলেট রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজার শামীম আহমদ বলেন, কাল হঠাৎ করে ট্রেন চালুর ঘোষণা আসায় যাত্রী কম হয়েছে। অর্ধেক আসনই পূরণ হয়নি। বেলা সাড়ে তিনটায় পারাবত ও রাত সাড়ে নয়টায় উদয়ন নামের আরও দুটি ট্রেন এখান থেকে ছেড়ে ঢাকা ও চট্টগ্রাম যাবে। মাস্ক ছাড়া কোনো যাত্রীকেই ট্রেনে উঠতে দেয়া হচ্ছে না।

লালমনিরহাট রেলওয়ে স্টেশন থেকে সকাল ১০টা ২০ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায় লালমনি এক্সপ্রেস। অনলাইনে টিকিট কিনে যাত্রীরা স্টেশনে এসেছেন। প্রবেশপথেই ডিজিটাল থার্মোমিটারে যাত্রীদের দেহের তাপমাত্রা মাপা হচ্ছে। সকল যাত্রীর মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

লালমনি এক্সপ্রেসের চালক জহুরুল হক বলেন, ট্রেন চলাচল শুরু হওয়ায় ঢাকা যেতে অনেক যাত্রীর কষ্ট লাঘব হবে।

বাংলাদেশ রেলওয়ের লালমনিরহাট বিভাগীয় রেল সুপার রেজাউল করিম বলেন, ‘সরকারি নির্দেশনা মেনে অনলাইনে টিকিট বিক্রি করে লালমনি এক্সপ্রেস যাত্রা শুরু করেছে। অনলাইনে টিকিট বিক্রির কারণে যাত্রীদের সংখ্যা এই মুহূর্তে জানা নেই।’

খুলনায় ট্রেন চলতে শুরু করেছে রোববার রাত আড়াইটা থেকে। খুলনা থেকে গোয়ালন্দ ঘাটের উদ্দেশে ছেড়ে গেছে নকশীকাঁথা মেইল। এরপর সকাল ৭টা ১০ মিনিটে চিলাহাটির উদ্দেশে রূপসা এক্সপ্রেস, সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে পার্বতীপুরের উদ্দেশে রকেট এক্সপ্রেস এবং ১১টায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের উদ্দেশে ছেড়ে গেছে মহানন্দা এক্সপ্রেস।

রেলওয়ের খুলনার স্টেশন মাস্টার মানিক চন্দ্র সরকার বলেন, ‘স্টেশনে যাত্রীর তেমন কোনো চাপ নেই। দুই-চার দিন পর যাত্রী বাড়তে পারে।’

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গত ৫ এপ্রিল থেকে দূরপাল্লার সব ধরনের বাস, ট্রেন, লঞ্চ বন্ধ রাখা হয়। অবশ্য ঈদের আগে ৬ মে জেলা পর্যায়ে চলাচলের জন্য বাসসহ কিছু পরিবহন খুলে দেয়া হলেও লঞ্চ এবং ট্রেন বন্ধই রাখা হয়। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে লকডাউন বাড়িয়ে করা হয়েছে ৩০ মে মধ্যরাত পর্যন্ত।

এ বিভাগের আরো খবর