ভারতের উত্তর আন্দামান সাগর ও পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’-এ পরিণত হয়ে বুধবার সন্ধ্যায় উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ নিউজবাংলাকে বলেন, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়ে একই এলাকায় (১৬ দশমিক ১ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০ দশমিক ২ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এটি রোববার দুপুরে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৭০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭১০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে গভীর নিম্নচাপ এবং পরবর্তী সময়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।
নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিম্নচাপ কেন্দ্রের কাছে সাগর উত্তাল রয়েছে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার সব নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।
রোববার রাত আটটার দিকে জানতে চাইলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ রুহুল কুদ্দুস নিউজবাংলাকে জানান, রাত ৯টা কিংবা ১২টায় হালনাগদ তথ্য দেয়া যেতে পরে। এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় ওই লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এটি ঘনীভূত হয়ে নিম্নচাপ এবং পরবর্তী সময়ে গভীর নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে।
তিনি বলেন, গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার সব নৌকা ও ট্রলারকে রোববারের মধ্যেই উপকূলে ফিরে আসতে বলা হয়েছে।
আন্দামান সাগর ও পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে সবশেষ উড়িষ্যা-পশ্চিমবঙ্গ হয়ে আগামী বুধবারের দিকে বাংলাদেশের খুলনা উপকূলে পৌঁছতে পারে। তিনি বলেন, ‘২২ মে লঘুচাপ সৃষ্টির পর ২৪ মের দিকে একটা সাইক্লোন হতে পারে। এরপর ২৫ মে মধ্যরাত বা ২৬ মে সকাল নাগাদ এটা উপকূল অতিক্রম করবে।
তবে সঠিকভাবে কোন উপকূল এটি অতিক্রম করবে, তা আর একটু সময় না গেলে বলা যাবে না। এটা হতে পারে উড়িষ্যা ও পশ্চিমবঙ্গে প্রভাব ফেলতে পারে। আবার বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূল দিয়েও বয়ে যেতে পারে। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গায় অস্থায়ী দমকা ও ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।