সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের জামিন হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, রাষ্ট্রপক্ষ চেয়েছে রোজিনার জামিন হোক।
তবে সাংবাদিকদের সতর্ক করে মন্ত্রী বলেছেন, পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি রাষ্ট্রের আইন মেনে চলতে হবে।
রোববার দুপুরে সচিবালয়ে গণমাধ্যমে বিভিন্ন সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘রোজিনা ইসলাম মুক্তি পাওয়ায় আমি সন্তুষ্টি প্রকাশ করছি। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জামিনের বিরোধিতা করেননি। রাষ্ট্রপক্ষ চেয়েছে জামিন হোক। এ জন্য আপনাদের সঙ্গে আমিও সন্তোষ প্রকাশ করছি।’
এটিকে ‘অনভিপ্রেত ঘটনা’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি আশা করব, জামিন হওয়ার পর সব ভুল বোঝাবুঝির অবসান হবে। আমাদের কাজ করতে হবে, একই সঙ্গে আইনও মানতে হবে।’
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। ছবি: নিউজবাংলা
অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাট ভারত, পাকিস্তানসহ আরও ৪০টি দেশে আছে দাবি করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কাজ করতে হবে, তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে। আইন মানতে হবে।
‘আমি মন্ত্রী। আমি যদি কোনো অফিসে যাই, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের অফিসে গিয়ে তাদের অনুমতি ছাড়া তাদের কোনো গোপনীয় নথি থেকে কোনো কাগজপত্র আমার পজেশনে নিই, নিশ্চয় সেটি বেআইনি। এটি অপরাধ। সে ক্ষেত্রে ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবে।’
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে সেদিন রোজিনা ইসলামের সঙ্গে কী ঘটেছিল সে বিষয়ে তদন্ত চলছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এখানে কী ঘটেছিল সেটি তদন্ত সাপেক্ষ। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য হচ্ছে, এ ধরনের ঘটনা সেখানে ঘটেছিল, তাই তারা মামলা করেছে।
‘কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়’ জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘অবশ্যই নিরপেক্ষ তদন্ত যাতে হয়, সেজন্য আমি প্রথম থেকে সচেষ্ট ছিলাম, সচেষ্ট আছি, বিষয়টির নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সচেষ্ট থাকব।
‘মামলা ডিবিতে গেছে। সুতরাং তদন্তের মাধ্যমে যাতে সত্যিটা বেরিয়ে আসে, কী ঘটেছিল। এবং তার সঙ্গে কোনো অন্যায় আচরণ করা হলে, সেটিও তদন্তে আসবে। তার সঙ্গে যদি কোনো অন্যায় হয়ে থাকে সেটি গ্রহণযোগ্য নয়, নিন্দনীয়।’
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার ঠেকাতে সচেষ্ট
ডিজিটাল নিরাপত্তাসহ অন্য আইনের অপব্যবহারের কারণে যাতে সাংবাদিকদের হেনস্তা করা না হয়, সে জন্য মন্ত্রণালয় কাজ করছে বলে জানিয়েছেন হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘কোনো (সাংবাদিকদের সঙ্গে বেআইনিভাবে) আইনের অপপ্রয়োগ যাতে না হয় সে জন্য আমি সব সময় আপনাদের সঙ্গে একমত।’
ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের অপপ্রয়োগ ঠেকাতে শুরু থেকে সচেষ্ট দাবি করে মন্ত্রী বলেন, ‘ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট সারা দেশের সব মানুষের সিকিউরিটি দেয়ার জন্য।
‘যেকোনো আইনেরই অপব্যবহারের সুযোগ থাকে। এই আইনের অনেক অপব্যবহার হয়েছে। অনেক সাংবাদিকের ওপর অপব্যবহার হয়েছে। এই আইনের আশ্রয় নিয়েছে এমন ঘটনাও আছে। যাতে অপব্যবহার না হয় সেটি নিশ্চিত করা প্রয়োজন।’
তিনি বলেন, ‘প্রথম দিকে যেভাবে অপব্যবহার হচ্ছিল সেটা কিন্তু পরে বন্ধ করা হয়েছে। এখন অনেকটা কমে এসেছে। আর যাতে এ রকম অপব্যবহার না হয় সেটা আপনাদের সঙ্গে নিয়ে আমি কাজ করব।’