অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের চারটি ধারায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের করা মামলায় প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামকে শর্তাধীন জামিন দিয়েছে আদালত।
তবে জামিন পেলেও রোববারই রোজিনা কারামুক্ত হচ্ছেন কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
বেলা ১১টার দিকে রোজিনাকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেয় আদালত। কিন্তু জামিনের প্রক্রিয়া শেষে আদেশ কাশিমপুর কারাগারে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে না পৌঁছালে আজই রোজিনার মুক্তি পাওয়া কঠিন বলে জানিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ।
সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের জামিন আবেদনের বিষয়ে আদেশ দেন মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক আবদুল্লাহ আল বাকি। রোজিনা যেন বিদেশে যেতে না পারেন, সে অনুরোধ করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী।
এমন অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক রোজিনাকে পাঁচ হাজার টাকার বন্ডে মুচলেকা ও পাসপোর্ট জমা দেয়ার শর্তে জামিন দেন।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রোজিনার পাসপোর্ট আদালতে জমা দেন তার স্বামী মনিরুল হক মিঠু।
তিনি সাংবাদিকদের জানান, রোজিনা একাধিক গুরুতর রোগে আক্রান্ত ও অসুস্থ।
‘আমি কারাগারে খবর নিয়েছি, রোজিনা খুব অসুস্থ। আজকের মধ্যেই ছাড়া না পেলে সে মারাও যেতে পারে।’
জামিন আদেশ পাওয়ার পরবর্তী প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে রোজিনার আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ইতিমধ্যেই রোজিনার পাসপোর্ট জমা দেয়া হয়েছে। বন্ডের কাজও চলছে। এরপর আদালতের জিআর শাখা (সাধারণ নিবন্ধন শাখা) আদেশের অনুলিপি সংশ্লিষ্ট কারাগারে পাঠাবে।’
রোজিনা আজই মুক্তি পাচ্ছেন কি না, জানতে চাইলে সমাজী বলেন, ‘আমরা আশাবাদী।’
তবে রোববারই রোজিনাকে কারামুক্তি দিতে হলে বিকেল ৫টার মধ্যে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগারে জামিন আদেশ পৌঁছাতে হবে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কারাগারের একজন কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘কারাগারে আমরা রুটিনমাফিক চলি। একটি দৈনিক রুটিন হলো লকআপ। সকালে কারাবন্দিদের লকআপ থেকে বের করা হয়। আবার সন্ধ্যায় তাদের লকআপে ফিরিয়ে নেয়া হয়। এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ পার্ট।
‘কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগারে লকআপ টাইম সন্ধ্যা ৬টা। এ সময় সবাই ঠিকমতো সেলে ঢুকল কি না, আমাদের সেটা নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়। কাউকে ছাড়তে হলে অবশ্যই লকআপ টাইমের অন্তত ১ ঘণ্টা আগে আমাদের কাছে আদেশ আসতে হয়। না হলে আমরা পরদিন আসামি মুক্তি দিই।’
এদিকে কারা অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রোজিনার মামলাটি ঢাকা জেলার। সে অনুযায়ী তার জামিনের আদেশ আগে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে যাবে। সেখানে আদেশ গ্রহণ করার পর সেটি আবার যাবে কাশিমপুর মহিলা করাগারে।’
এমন প্রক্রিয়ার কারণ জানতে চাইলে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘এখন পর্যন্ত সব নারী আসামিকে কাশিমপুরেই রাখা হচ্ছে। তাই এমন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই যেতে হবে।’
সাংবাদিক রোজিনা আজই ছাড়া পাচ্ছেন কি না ও তার শারীরিক অবস্থা কেমন, তা জানতে একাধিকবার কাশিমপুর মহিলা কারাগারের জেলার হাসনা জাহান বীথিকে কল করা হয়। তবে কলগুলো রিসিভ হয়নি।