বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ঈদযাত্রায় সড়কে প্রাণ গেল ৩১৪ জনের

  •    
  • ২২ মে, ২০২১ ২৩:০৩

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণমতে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ৯৪টি জাতীয় মহাসড়কে, ৮৯টি আঞ্চলিক সড়কে, ৩৪টি গ্রামীণ সড়কে, ১৮টি শহরের সড়কে এবং অন্যান্য স্থানে ৪টি হয়েছে।

ঈদুল ফিতরের আগে ও পরে ১৪ দিনে (৭-২০ মে) দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ২৩৯টি। এ সময় নিহত হয়েছে ৩১৪ জন এবং আহত হয়েছে ২৯১ জন। নিহতের মধ্যে নারী ৪৩ ও শিশু ২৮।

এই সময়ে চারটি নৌ-দুর্ঘটনায় তিনজন নিহত এবং সাতজন আহত হয়েছে। এ ছাড়া একটি রেলপথ দুর্ঘটনায় একজন নিহত হয়েছে।

শনিবার রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ সব তথ্য জানানো হয়।

যানবাহনভিত্তিক নিহতের চিত্র

বিজ্ঞপ্তিতে দুর্ঘটনায় যানবাহনভিত্তিক নিহতের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী ১৩৪ জন, বাস যাত্রী ৪ জন, ট্রাক, পিকআপ, ট্রাক্টর ও ট্রলি যাত্রী ১৭ জন, মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকার যাত্রী ২৯ জন, থ্রি-হুইলার যাত্রী (সিএনজি-ইজিবাইক-অটোরিকশা-টেম্পো) ৩৩ জন, নছিমন, ভটভটি, মাহিন্দ্র ও চান্দের গাড়ি যাত্রী ১৬ জন, প্যাডেল রিকশা, বাইসাইকেলের আরোহী ৫ জন নিহত হয়েছে।

দুর্ঘটনা সংঘটিত সড়কের ধরন

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ৯৪টি জাতীয় মহাসড়কে, ৮৯টি আঞ্চলিক সড়কে, ৩৪টি গ্রামীণ সড়কে, ১৮টি শহরের সড়কে এবং অন্যান্য স্থানে ৪টি হয়েছে।

দুর্ঘটনার ধরন

দুর্ঘটনাগুলোর ৪৪টি মুখোমুখি সংঘর্ষ, ৯৫টি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ৭৬টি পথচারীকে চাপা অথবা ধাক্কা দেয়া, ১৯টি যানবাহনের পেছনে আঘাত করা এবং ৫টি অন্যান্য কারণে ঘটেছে।

দুর্ঘটনায় আক্রান্ত বা জড়িত যানবাহন

দুর্ঘটনার জন্য দায়ী ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও পিকআপ ২২ দশমিক ৫০ শতাংশ, ট্রাক্টর ও ট্রলি ৩ দশমিক ৭১ শতাংশ, মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কার, অ্যাম্বুলেন্স ও জীপ ৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ, যাত্রীবাহী বাস ৪ দশমিক ৮৭ শতাংশ, মোটরসাইকেল ২৯ দশমিক ২৩ শতাংশ, থ্রি-হুইলার (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান-লেগুনা- টেম্পু) ২০ দশমিক ৪১ শতাংশ, নসিমন-ভটভটি-আলমসাধু-মাহিন্দ্র-চান্দের গাড়ি ৬ দশমিক ৭২ শতাংশ এবং প্যাডেল রিকশা-রিকশা ভ্যান-বাইসাইকেল ২ দশমিক ৫৫ শতাংশ।

দুর্ঘটনায় আক্রান্ত যানবাহনের সংখ্যা

দুর্ঘটনায় আক্রান্ত যানবাহনের সংখ্যা ৪৩১টি। যার মধ্যে ট্রাক ৬২, বাস ২১, কাভার্ডভ্যান ১২, পিকআপ ২৩, ট্রলি ৭, ট্রাক্টর ৯, মাইক্রোবাস ২৪, প্রাইভেটকার ১৬, অ্যাম্বুলেন্স ১, জীপ ১, র‌্যাবের পিকআপ ১, মোটরসাইকেল ১২৬, ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান-লেগুনা-টেম্পু ৮৮, নসিমন-ভটভটি-আলমসাধু-মাহিন্দ্র-চান্দের গাড়ি ২৯ এবং প্যাডেল রিকশা, রিকশাভ্যান, বাই-সাইকেল ১১টি।

দুর্ঘটনার বিভাগওয়ারী পরিসংখ্যান

দুর্ঘটনার বিভাগওয়ারী পরিসংখ্যান বলছে, ঢাকা বিভাগে দুর্ঘটনা ৩৩ দশমিক ৪৭ শতাংশ ও প্রাণহানি ৩২ দশমিক ৮০ শতাংশ; রাজশাহী বিভাগে দুর্ঘটনা ১৬ দশমিক ৭৩ শতাংশ ও প্রাণহানি ১৪ দশমিক ৯৬ শতাংশ; চট্টগ্রাম বিভাগে দুর্ঘটনা ১৪ দশমিক ৬৪ শতাংশ ও প্রাণহানি ১৬ দশমিক ২৪ শতাংশ; খুলনা বিভাগে দুর্ঘটনা ৮ দশমিক ৭৮ শতাংশ ও প্রাণহানি ৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ; বরিশাল বিভাগে দুর্ঘটনা ৬ দশমিক ৬৯ শতাংশ, প্রাণহানি ৭ দশমিক ৯৬ শতাংশ; সিলেট বিভাগে দুর্ঘটনা ৭ দশমিক ৫৩ শতাংশ, প্রাণহানি ৭ দশমিক ৬৪ শতাংশ; রংপুর বিভাগে দুর্ঘটনা ৬ দশমিক ২৭ শতাংশ ও প্রাণহানি ৫ দশমিক ৪১ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে দুর্ঘটনা ৫ দশমিক ৮৫ শতাংশ ও প্রাণহানি ৫ দশমিক ৯ শতাংশ ঘটেছে।

ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। ৮০টি দুর্ঘটনায় নিহত ১০৩ জন। সবচেয়ে কম ময়মনসিংহ বিভাগে। ১৪টি দুর্ঘটনায় নিহত ১৬ জন। একক জেলা হিসেবে চট্টগ্রাম জেলায় সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। ১৮টি দুর্ঘটনায় ২৩ জন নিহত। সবচেয়ে কম জামালপুর জেলায়। ২টি দুর্ঘটনা ঘটলেও কেউ হতাহত হয়নি।

সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ

সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণগুলোর মধ্যে ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, বেপরোয়া গতি, চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা ও শারীরিক ও মানসিক অসুস্থতা, বেতন ও কর্মঘন্টা নির্দিষ্ট না থাকা, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল ও তরুণ ও যুবকদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো অন্যতম।

এছাড়া জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা, দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, বিআরটিএর সক্ষমতার ঘাটতি ও গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজিও রয়েছে।

সুপারিশ

দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বাড়াতে হবে। চালকের বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করতে হবে। বিআরটিএর সক্ষমতা বাড়াতে হবে। পরিবহনের মালিক-শ্রমিক, যাত্রী ও পথচারীদের প্রতি ট্রাফিক আইনের বাধাহীন প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।

মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল বন্ধ করে এগুলোর জন্য আলাদা পার্শ্বরাস্তা (সার্ভিস লেন) তৈরি করতে হবে। পর্যায়ক্রমে সব মহাসড়কে রোড ডিভাইডার নির্মাণ করতে হবে। গণপরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে।

রেল ও নৌ-পথ সংস্কার ও সম্প্রসারণ করে সড়ক পথের উপর চাপ কমাতে হবে। টেকসই পরিবহন কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে। ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’ বাধাহীনভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।

এ বিভাগের আরো খবর