বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ত্রাণ চেয়ে পোশাক কারখানা মালিকের ফোন যে কারণে

  •    
  • ২২ মে, ২০২১ ১৫:১৭

ওই ব্যক্তি ভেবেছিলেন ৩৩৩ এ ফোন করে কেউ ত্রাণ পায় না, তাই তিনি ফোন করেছিলেন: নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফা জহুরা

নারায়ণগঞ্জে যে পোশাক কারখানার মালিক ত্রাণ সহায়তা চেয়ে শাস্তির মুখে পড়েছেন, তিনি ভেবেছিলেন ৩৩৩ নম্বরে কল করলে আসলে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয় না। তাই তিনি ফোন করে পরীক্ষা করতে দিয়েছিলেন।

সম্পদশালী হয়েও ফোন করে হয়রানি করায় তাকে ১০০ জনকে খাদ্য দিতে হবে। আর সে প্রস্তুতিও তিনি শেষ করেছেন।

সেই ব্যক্তির নাম ফরিদ আহমেদ। বাড়ি নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার কাশীপুর ইউনিয়নের দেওভোগ এলাকায়।

বিকেল চারটায় বাড়ির পাশে থাকা একটি মাঠে তিনি ত্রাণ বিতরণ করবেন বলে নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফা জহুরা।

নিউজবাংলাকে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমি নিজেও থাকব সেখানে। এই ত্রাণের সম্পূর্ণ প্রস্তুতি তিনি শেষ করেছেন, এটা আমাদেরকে জানিয়েছেন।’

ফরিদ আহমেদের ফোন পেয়ে ত্রাণ নিয়ে তার বাড়িতে গিয়ে হতবাক হয়ে যান উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন, অফিস সহকারী কামরুল ইসলাম। পরে তারা ভবন দেখে ইউএনওকে জানান।

তারা গিয়ে দেখেন ফরিদ আহমেদ চার তলা ভবনের মালিক। তিনি সুস্থ সবল। ব্যবসা করেন। একটি বেশ বড়সড় হোশিয়ারি কারখানার মালিক।

বরিশালের কাশিপুর ইউনিয়নের পশ্চিম বিল্ববাড়ি গ্রামের লতা আক্তারকে খাবার দিতে গিয়ে তার আবাসস্থলের দুরবস্থা দেখে তাকে বিনা মূল্যে বাড়ি দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে

পরে বৃহস্পতিবার ফরিদের বাড়িতে গিয়ে ইউএনও আরিফা জহুরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেন। সরকার প্রতি ব্যাগে যে পরিমাণ খাদ্য সহায়তা দেয়, এমন একশটি ব্যাগ ত্রাণ হিসেবে বিতরণের নির্দেশ দেন।

প্রতি প্যাকেটে থাকতে হবে ১০ কেজি চাল, ৫ কেজি আলু, এক কেজি করে ডাল, সয়াবিন তেল, লবণ ও পেঁয়াজ।

ফরিদ আহমেদ কেন এমন করলেন- জানতে চাইলে ইউএনও বলেন, ‘ওই ব্যক্তি ভেবেছিলেন ৩৩৩ এ ফোন করে কেউ ত্রাণ পায় না, তাই তিনি ফোন করেছিলেন।’

নারায়ণগঞ্জ সদরে ত্রাণ চেয়ে ৩৩৩ নম্বরে এখন পর্যন্ত ফোন এসেছে ৫৬৮টি। এর মধ্যে ৩৩০ জনকেই খাদ্য দেয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। বাকি সবগুলো যাচাই বাছাই করা হচ্ছে।

৩৩৩ নম্বরে কল পাওয়ার পর যাচাইবাছাই করে খাদ্য সহায়তা নিয়ে হাজির হচ্ছেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা

করোনাকালে ৩৩৩ নম্বরে কল করলে যাচাই বাছাই করে অসহায় মানুষদের কাছে খাবার পৌঁছে দিচ্ছে প্রশাসন। তবে সবাইকেই এই খাবার দেয়া হয় না। যাচাই বাছাই করে যাদেরকে সত্যিকারের দুস্থ বলে প্রমাণ পাওয়া যায়, তাদেরকেই দেয়া হয় খাবার। বরিশালে একজনকে খাবার দিতে গিয়ে তার আবাসস্থলের দুরবস্থা দেখে এক নারীকে বিনা মূল্যে বাড়ি দেয়ার উদ্যোগও নেয়া হয়েছে।

তবে অভাব না থাকলেও কেবল মজা করার জন্য ফোন করার ঘটনাও ঘটেছে।

নারায়ণগঞ্জের ঘটনাটি নিয়ে ইউএন আরিফা জহুরা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘৩৩৩ নম্বরে কল করেন কাশীপুরের ব্যবসায়ী ফরিদ আহমেদ। উপজেলা প্রশাসনের লোকজন তার বাড়িতে খাদ্য সহায়তা নিয়ে যান। সেখানে গিয়ে দেখেন তিনি মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন। তিনি চার তলা বাড়ি ও পোশাক কারখানার মালিক। সরকারি লোকজনকে হয়রানির দায়ে তাকে জরিমানা হিসেবে ১০০ প্যাকেট খাদ্য সহায়তা প্রদানের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’

কাশিপুরের দেওভোগ এলাকায় ফরিদ আহমেদের বেশ বড়সড় একটি গেঞ্জি কাপড়ের কারখানা আছে। তবে এ বিষয়ে তার বক্তব্য জানতে পারেনি নিউজবাংলা।

ইউএনও জানান, কেবল ফরিদ আহমেদ না। ৩৩৩ নম্বরে অনেকই অযথা ফোন করেন। এতে করে সরকারি লোকজন হয়রানির শিকার হন।

এ বিভাগের আরো খবর