আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) করোনাভাইরাস সংক্রান্ত টেকনিক্যাল কমিটির চেয়ার নির্বাচিত হয়েছে বাংলাদেশ।
জাতিসংঘের জেনেভা কার্যালয়ে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন এ তথ্য জানিয়েছে।
করোনা মহামারির প্রাদুর্ভাবের ফলে বিশ্বব্যাপী শ্রম জগতে যে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে তা থেকে সফল ও কার্যকর উত্তরণে অন্তর্ভুক্তিমূলক, টেকসই ও মানবিক উপায়ের সন্ধানে সব সদস্য রাষ্ট্রের অংশগ্রহণে এক দীর্ঘ আলোচনার আয়োজন করে আইএলও।
এই আলোচনার ফলে করোনা সংক্রান্ত আউটকাম ডকুমেন্টের একটি খসড়া প্রণয়ন করা হয়, যা ৩-১৯ জুন অনুষ্ঠেয় ১০৯তম আন্তর্জাতিক শ্রম সম্মেলনে গৃহীত হবে।
এ খসড়ার ওপর সব সদস্য রাষ্ট্রের মতামত ও সম্মতি নিতে আসন্ন আন্তর্জাতিক শ্রম সম্মেলনের আগে চূড়ান্ত নেগোসিয়েশন হবে।
এ গুরুত্বপূর্ণ নেগোসিয়েশনে সভাপতিত্ব করার জন্য সর্বসম্মতিক্রমে বাংলাদেশ নির্বাচিত হয়।
জেনেভায় বাংলাদেশ মিশনের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মুস্তাফিজুর রহমান ওই নেগোসিয়েশনে সভাপতিত্ব করবেন।
খসড়া প্রণয়ন সংক্রান্ত কমিটিতে বাংলাদেশ এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রতিনিধি হিসেবেও নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন করে।
২০২০ সালের এপ্রিলে করোনা নিয়ে আইএলওর তাদের পর্যবেক্ষণের তৃতীয় সংস্করণ প্রকাশ করে। এতে বলা হয়, বিশ্বে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর অর্ধেকের জীবিকা হারানোর ঝুঁকি তৈরি করেছে করোনা।
সংস্থাটির মতে, করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বজুড়ে অব্যাহতভাবে কর্মঘণ্টা কমে যাওয়ায় প্রায় ১৬০ কোটি মানুষ জীবিকা হারানোর ঝুঁকিতে আছে, যা মোট কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর প্রায় অর্ধেক।
মহামারির কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকটের ফলে অনানুষ্ঠানিক অর্থনীতির প্রায় ১৬০ কোটি শ্রমিকের জীবিকা নির্বাহ ঝুঁকিতে পড়বে। মূলত করোনার প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে দেশে দেশে নেয়া লকডাউন পদক্ষেপের কারণে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে।
এই সংকটের প্রথম মাসে বিশ্বব্যাপী অনানুষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকের আয় কমেছে ৬০ শতাংশ, যা আফ্রিকার দেশের ক্ষেত্রে ৮১ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্র, এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ২১ দশমিক ৬ শতাংশ এবং ইউরোপ ও মধ্য এশিয়ায় ৭০ শতাংশ।
বিকল্প আয়ের উৎস ছাড়া এই শ্রমিক এবং তাদের পরিবারগুলোর টেকার কোনো উপায় থাকবে না বলে মনে করে আইএলও। এ অবস্থায় কর্মীকে সহায়তা দেয়ার জন্য জরুরি, সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য অনুযায়ী এবং নমনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে আইএলও।