সরকারি নথি চুরির চেষ্টার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়ে দুই দিন ধরে জেলে থাকা প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলাম জামিন পাননি।
বৃহস্পতিবার জামিন শুনানি শেষে প্রায় দুই ঘণ্টা পর ঢাকার মুখ্য মহানগর আদালতের (সিএমএম) হাকিম বাকী বিল্লাহ জানিয়েছেন, এ বিষয়ে রোববার আদেশ দেয়া হবে।
এর আগে দুপুর ১টার দিকে ভার্চুয়াল আদালতে জামিন আবেদনের ওপর শুনানি শুরু হয়। প্রায় এক ঘণ্টা শুনানি শেষে বিচারক জানান, পরে আদেশ দেয়া হবে।
এ সময় আসামিপক্ষের আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী বলেন, ‘মেহেরবানি করে আজকেই আদেশ দেবেন।’
জবাবে বিচারক বলেন, ‘হ্যাঁ, আজকেই দেব।’ কিন্তু পরে জানিয়ে দেন জামিন বিষয়ে আদেশ দেয়া হবে আগামী রোববার।
আসামি পক্ষের আইনজীবী সমাজী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আগামী রোববার অর্থাৎ ২৩ মে রাষ্ট্রপক্ষের ডকুমেন্ট উপস্থাপন এবং সেটা পর্যালোচনা করে আদেশ দেবেন বলে আমরা জেনেছি। প্রথমত কথা হলো এই যে ডকুমেন্ট উপস্থাপন, কী ডকুমেন্ট রাষ্ট্রপক্ষ দেবেন সেটা সম্পর্কে যদি ডিফেন্স অবগত না হয় এবং কথা বলার সুযোগ না পায় তাহলে আমি মনে করি ন্যায় বিচার ব্যাহত হবে।’
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. হেমায়েত উদ্দিন খান (হিরন) সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আমাদের বক্তব্য উপস্থাপন করেছি এবং আসামি পক্ষও বক্তব্য উপস্থাপন করেছে। মামলাটি আদেশের জন্য অপেক্ষমান রাখা হয়েছিল। বিজ্ঞ বিচারক একটি আদেশ দিয়েছেন।
‘রাষ্ট্রপক্ষের থেকে আসামির স্বীকারোক্তির যে ভিডিও চিত্র রয়েছে সেটি আদালতে উপস্থাপন করব এবং ভিডিও ফুটেজ উপস্থাপনের জন্য উনি রোববার আদেশের দিন ধার্য করেছেন। এটাই হলো এ মামলার সর্বশেষ আদেশ।’
সচিবালয়ে সোমবার এক কর্মকর্তার কক্ষে পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় অবরুদ্ধ রাখার পর রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলা করেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপসচিব শিব্বির আহমেদ ওসমানী। মামলায় রোজিনার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় নথি চুরির অভিযোগ আনা হয়েছে।
পরদিন তাকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। মামলায় রোজিনাকে পাঁচ দিনের জন্য রিমান্ডে পেতে আবেদন করেছিল পুলিশ। শুনানি শেষে এই আবেদন নাকচ করে দেন বিচারক মোহাম্মদ জসীম।
জামিন আবেদন করেছিলেন আসামিপক্ষের আইনজীবী। এই আবেদন আংশিক শুনানি নিয়ে পূর্ণাঙ্গ শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার দিন রাখেন বিচারক। রোজিনাকে পাঠিয়ে দেয়া হয় কাশিমপুর কারাগারে।
শুরু থেকেই রোজিনাকে মুক্তির আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে সাংবাদিক সংগঠনগুলো। সাংবাদিক নেতারা এরই মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন। মন্ত্রীরা আশা প্রকাশ করে বলেছেন ন্যায্য বিচার পাবেন রোজিনা।