সচিবালয়ে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে অবরুদ্ধ করে যারা হয়রানি ও হেনস্তা করেছে, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে তাদের শাস্তির আওতায় আনতে তথ্যমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ)।
সকালে রাজধানীর মিন্টো রোডে সরকারি বাসভবনে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদের কাছে ডিআরইউ নেতারা এই স্মারকলিপি তুলে দেন।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান খানের সই করা স্মারকলিপিতে বলা হয়, ‘এই ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত প্রয়োজন। অন্যথায় সারা দেশে প্রশাসনের অভ্যন্তরে লুকিয়ে থাকা দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা আরও বেশি বেপরোয়া হয়ে উঠবে।
‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে গঠিত তদন্ত কমিটির ওপর সাংবাদিক সমাজ আস্থা রাখতে পারছে না। সরকারঘোষিত দেশে স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিবেশ নিশ্চিত করতে আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত চাই। জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে দায়ের করা বিতর্কিত অফিশিয়াল সিক্রেট অ্যাক্টসহ সব কালাকানুন বাতিল চাই।’
পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তার হাতে রোজিনা ইসলাম হয়রানি ও হেনস্তার শিকার হয়েছেন দাবি করা হয় স্মারকলিপিতে।
এতে বলা হয়, ‘সচিবালয়ে একজন নারী সাংবাদিকের সঙ্গে এমন ন্যক্কারজনক আচরণ দেশ ও বিদেশে সরকারের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ন করেছে। মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সরকার দায়িত্ব পালনকালে পুরস্কার পাওয়া একজন সাংবাদিককে তথ্য বা নথি চুরির দায়ে বিতর্কিত একটি মামলায় আসামি করে জেলে পাঠানো হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের এমন আচরণ প্রধানমন্ত্রীঘোষিত দুর্নীতি বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির সঙ্গে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক।’
এমন ঘটনায় অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার পথ রুদ্ধ হবে এবং কোনোভাবেই দুর্নীতি বিরোধী সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব নয় বলেও মনে করে ডিআরইউ।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আচরণে গোটা সাংবাদিক সমাজ ক্ষুব্ধ জানিয়ে স্মারক লিপিতে বলা হয়, 'রোজিনা ইসলামকে গ্রেপ্তার হয়রানি শুধু ব্যক্তি রোজিনার ওপরই হামলা নয় বরং এটি স্বাধীন সাংবাদিকতা ও অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার ওপর চরম আঘাত।’
রোজিনা ইসলামের ওপর এই নির্যাতন মামলা, গ্রেপ্তার মানবাধিকারেরও চরম লঙ্ঘন বলে মনে সংগঠনটি।
আমলার এমন আচরণ সরকারের সঙ্গে সাংবাদিক সমাজকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্র কি না তা খতিয়ে দেখার কথা বলা হয়েছে মন্ত্রীর কাছে দেয়া স্মারকলিপিতে।