করোনাভাইরাস সংক্রমণের মধ্যে বিদেশি নাগরিকদের জন্য কঠিন শর্ত আরোপ করায় সৌদি আরবের তিনটি গন্তব্যে আপাতত ফ্লাইট বন্ধ রেখেছে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। এতে বিপাকে পড়েছেন দেশটিতে যেতে চাওয়া বাংলাদেশি কর্মীরা।
বিমানের রুট পরিকল্পনা অনুযায়ী, দেশটির তিনটি গন্তব্যে বর্তমানে ফ্লাইট পরিচালনা করছে প্রতিষ্ঠানটি। গন্তব্যগুলো হলো রিয়াদ, দাম্মাম ও জেদ্দা। এই তিন গন্তব্যে সপ্তাহে ১৮টি ফ্লাইট পরিচালনা করছে বিমান।
এর বাহিরেও মক্কা ও মদিনাতেও রয়েছে বিমানের ফ্লাইট। তবে কোভিড পরিস্থিতিতে আপাতত এ দুই গন্তব্যে ফ্লাইট পরিচালনা করা হচ্ছে না।
করোনা সংক্রমণ রুখতে সম্প্রতি নানা শর্ত আরোপ করেছে সৌদি আরব সরকার।
দেশটিতে ভ্রমণ করতে যাওয়া সব বিদেশি নাগরিকের জন্য কোভিড চিকিৎসা সংক্রান্ত ইন্স্যুরেন্স বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এই ইন্স্যুরেন্সের আওতায় হাসপাতাল-ক্লিনিকসহ প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে ১৪ দিনের খরচ অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
এ ছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকার ব্যবস্থা করতে হবে সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইনসের মাধ্যমে। দেশটিতে যেতে চাওয়া যাত্রীদের ভ্রমণের প্রথম ও সপ্তম দিন পিসিআর টেস্টের ব্যবস্থাও এয়ারলাইনসকে করতে হবে বলে শর্ত দেয়া হয়েছে।
ফ্লাইটের যাত্রীদের তালিকাও এয়ারলাইনসকে যাত্রার চার দিন আগে দেশটির কর্তৃপক্ষকে জমা দিতে হবে বলে শর্ত দিয়েছে সৌদি আরব।
এসব শর্ত কার্যকর হচ্ছে বৃহস্পতিবার থেকে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু সালেহ মোস্তফা কামাল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সৌদি সরকার আমাদের যে শর্তগুলো দিয়েছেন সেগুলো আমাদের স্টেশনগুলোতে জানিয়ে দিয়েছি। এখন সেখানে আমাদের কর্মকর্তারা চেষ্টা করছেন হোটেল ব্যবস্থাপনা করতে।
‘আমরা চেষ্টা করছি কত কম খরচে এই হোটেলগুলো আমরা পেতে পারি। এগুলো করতে কিছুটা সময় লাগছে। এর বাইরেও ফ্লাইট শুরুর চার দিন আগে যাত্রী তালিকা দেয়ার একটি শর্ত রয়েছে। সেটির কারণেও ফ্লাইটে সমস্যা হচ্ছে।’
এদিকে বুধবার মধ্যরাতে বিমানের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, আগামী ২৪ মে পর্যন্ত সৌদি আরবে ফ্লাইট স্থগিত থাকবে।
দেশের প্রবাসী আয়ের সবচেয়ে বড় বাজার সৌদি আরব। দেশটির বিভিন্ন শহরে অন্তত ২০ লাখ প্রবাসী বিভিন্ন খাতে কাজ করছেন। এর বাইরেও হজ ও ওমরাহ করতে বিপুল পরিমাণ বাংলাদেশি দেশটিতে গিয়ে থাকেন।
করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ রুখতে এর আগে গত বছরের ৬ ডিসেম্বর সব আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বাতিল করেছিল সৌদি আরব। নিষেধাজ্ঞা কার্যকর ছিল ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত। ফ্লাইট না থাকায় ছুটিতে আসা প্রবাসী বাংলাদেশিদের একটি বড় অংশকে অনিশ্চয়তায় পড়তে হয়। পরে অবশ্য সরকারের মধ্যস্থতায় সমস্যার সমাধান হয়।
বিমান ছাড়াও সৌদি আরবের জাতীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠান সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইনস ও নাস এয়ার ঢাকা থেকে দেশটির বিভিন্ন গন্তব্যে ফ্লাইট পরিচালনা করে।