বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বজ্রপাতে কী করবেন

  •    
  • ১৯ মে, ২০২১ ০০:১৮

বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থানের জন্য বজ্রপাত কেন্দ্রিক আবহাওয়া তৈরি হয়। আকাশে ঘন কালো মেঘ দেখলেই বুঝতে হবে যে এই মেঘে বজ্রপাত ঘটবে। যেতে হবে নিরাপদ আশ্রয়স্থলে।

চলছে বজ্রপাতের ভরা মৌসুম। প্রায় প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও থেকে বজ্রপাতে প্রাণহানির খবর আসছে। শুধু মঙ্গলবারই ছয় জেলা থেকে ১৭ জনের মৃত্যুর খবর পেয়েছে নিউজবাংলা। এর মধ্যে নেত্রকোণাতেই প্রাণ গেছে আট জনের।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, এপ্রিল থেকে জুন মাসে দেশে বজ্রপাত তুলনামূলকভাবে বেশি হয়। এ সময় একটু সাবধানতা অবলম্বন করলেই নিরাপদে থাকা যেতে পারে। এড়ানো যেতে পারে অনাকাঙ্ক্ষিত প্রাণহানি।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ রুহুল কুদ্দুস নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই সময়টাতে বজ্রপাত বেশি হয়ে থাকে আর আমরাও অনেক বেশি অসাবধানতা অবলম্বন করি। আপনি যখন আকাশে ঘন কালো মেঘ দেখবেন, তখন এটা বুঝতে হবে যে এই মেঘে বজ্রপাত ঘটবে। তখন আপনাকে নিরাপদ আশ্রয়স্থলে যেতে হবে।’

তিনি জানান, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কালো মেঘের ঘনত্ব বেড়ে যাওয়ায় বজ্রপাতও বেড়েছে। বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থানের জন্য বজ্রপাত কেন্দ্রিক আবহাওয়া তৈরি হয়।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, দেশে গত ১০ বছরে বজ্রপাতে মারা গেছে আড়াই হাজারের বেশি মানুষ। ২০২০ সালের ৭ অক্টোবর পর্যন্ত দেশে বজ্রপাতে মৃত্যু হয়েছে ২৩৯ জনের। ২০১৯ সালে মৃত্যু হয় ২৩১ জনের। আর ২০১৮ সালে মৃত্যু হয় ২৭৭ জনের।

মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য অফিসার মো. সেলিম হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ বছরের তথ্য এ মুহূর্তে আমার জানা নেই। মূলত এপ্রিল-মে মাসেই বজ্রপাতে প্রাণহানির সংখ্যাটা বাড়ে। প্রতিটি জেলা থেকে জেলা প্রশাসক তালিকা পাঠালে আমরা সংখ্যাটা বলতে পারব। এজন্য কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।’

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, বিশ্বের বজ্রপাতে মৃত্যুর এক-চতুর্থাংশ হয়ে থাকে বাংলাদেশে। দেশে বছরে প্রতি বর্গকিলোমিটারে প্রায় ৪০টি বজ্রপাত হয়। আর মৃত্যুর সংখ্যা হাওড়, চর ও বিল এলাকায় বেশি।

বনভূমি, উঁচু গাছের সংখ্যা কমে যাওয়াকেও বজ্রপাতে মৃত্যুর অন্যতম কারণ হিসেবে মনে করছেন আবহাওয়াবিদরা। তারা বলছেন, বড় গাছগুলো আগে বিজলির বিরুদ্ধে কাজ করে। ফলে প্রাণহানি কম হতো। আবহাওয়া সম্পর্কিত বড় ঘাতক হিসেবে দেখা দিয়েছে বজ্রপাত।

আবহাওয়াবিদ রুহুল কুদ্দুস বলেন, ‘আমরা এর আগেও বজ্রপাত নিয়ে সতর্ক করেছি। এবার আবার বাড়তে পারে যদি সাবধানতা অবলম্বন না করা হয়।’

বজ্রপাতে প্রাণহানি কমাতে আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে ৯টি পরামর্শ রয়েছে।

০১. পাকা বাড়ির নিচে আশ্রয় নিন। ঘন ঘন বজ্রপাত হতে থাকলে কোনো অবস্থাতেই খোলা বা উঁচু জায়গায় না থাকাই ভালো। এ অবস্থায় সবচেয়ে ভালো হয় যদি কোনো দালানের নিচে আশ্রয় নিতে পারেন।

০২. উঁচু গাছপালা ও বিদ্যুতের লাইন থেকে দূরে থাকুন। উঁচু গাছপালা বা বিদ্যুতের খুঁটিতে বজ্রপাতের সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই এসব জায়গায় যাবেন না বা কাছাকাছি থাকবেন না। ফাঁকা জায়গায় কোনো যাত্রী ছাউনি বা বড় গাছ ইত্যাদিতে বজ্রপাত হওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত বেশি থাকে।

০৩. জানালা থেকে দূরে থাকুন। বজ্রপাতের সময় বাড়িতে থাকলে জানালার কাছাকাছি থাকবেন না। জানালা বন্ধ রাখুন এবং ঘরের ভেতর থাকুন।

০৪. ধাতব বস্তু এড়িয়ে চলুন। বজ্রপাত ও ঝড়ের সময় বাড়ির ধাতব কল, সিঁড়ির রেলিং, পাইপ ইত্যাদি স্পর্শ করবেন না। এমনকি ল্যান্ড লাইন টেলিফোনও স্পর্শ করবেন না। বজ্রপাতের সময় এগুলোর সংস্পর্শে এসে অনেকে আহত হন।

০৫. টিভি-ফ্রিজ থেকে সাবধান। বজ্রপাতের সময় বৈদ্যুতিক সংযোগযুক্ত সব যন্ত্রপাতি স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকুন। টিভি, ফ্রিজ ইত্যাদি বন্ধ করা থাকলেও ধরবেন না। বজ্রপাতের আভাস পেলে আগেই এগুলোর প্লাগ খুলে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করুন। অব্যবহৃত যন্ত্রপাতির প্লাগ আগেই খুলে রাখুন।

০৬. বজ্রপাতের সময় রাস্তায় গাড়িতে থাকলে যত দ্রুত সম্ভব বাড়িতে ফেরার চেষ্টা করুন। যদি প্রচণ্ড বজ্রপাত ও বৃষ্টির সম্মুখীন হন তবে গাড়ি কোনো পাকা ছাউনির নিচে নিয়ে যান। এ সময় গাড়ির কাঁচে হাত দেয়া বিপজ্জনক হতে পারে।

০৭. ঝড়-বৃষ্টির সময় রাস্তায় পানি জমতে পারে। বজ্রপাত অব্যাহত থাকলে সে সময় রাস্তায় বের না হওয়াই মঙ্গল। একে তো বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা থাকে। উপরন্তু কাছাকাছি কোথাও বাজ পড়লে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার সম্ভাবনাও থেকে যায়।

০৮. বজ্রপাতের সময় চামড়ার ভেজা জুতা বা খালি পায়ে থাকা খুবই বিপজ্জনক। যদি একান্ত বেরোতেই হয় পা ঢাকা জুতো পড়ে বের হোন। রবারের গাম্বুট এক্ষেত্রে সব থেকে ভালো কাজ করবে।

০৯. বজ্রপাতের সময় রাস্তায় চলাচলের সময় আশেপাশে খেয়াল রাখুন। যেদিকে বাজ পড়ার প্রবণতা বেশি সে দিক বর্জন করুন। কেউ আহত হলে তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করুন।

এ বিভাগের আরো খবর