সরকারি নথি চুরির অভিযোগের মামলায় গ্রেপ্তার সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম জামিন চেয়ে আবেদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে আগামী বৃহস্পতিবার।
সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি রুমে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা অবরুদ্ধ রাখার পর শাহবাগ থানায় পাঠিয়ে সোমবার রাতে ‘অফিশিয়াল সিক্রেটস’ অ্যাক্টে রোজিনার বিরুদ্ধে মামলা করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এই মামলাতে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
মঙ্গলবার সকালে রোজিনাকে ঢাকার মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড আবেদন করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী। জামিন আবেদন করেন রোজিনার আইনজীবীরা।
শুনানি শেষে বিচারক মোহাম্মদ জসিম রিমান্ড আবেদন নাকচ করে দেন। আর জামিন আবেদন আংশিক শুনানি শেষে বাকি শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার দিন রাখেন।
জামিনের বিষয়ে রোজিনার আইনজীবী এহসানুল হক সামাজী সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিজ্ঞ আদালত শুনানি শেষে জামিনের বিষয়টি অনিষ্পন্ন রেখে আমাদেরকে মৌখিকভাবে জানিয়েছেন যে, এটার শুনানি করা যাবে।
‘সেই আলোকে আমরা আলোচনার ভিত্তিতে আগামী বৃহস্পতিবার জামিনের বিষয়ে অধিকতর শুনানির জন্য আদালতের কাছে মৌখিকভাবে নিবেদন করেছি। সেই আলোকে আদালত আগামী বৃহস্পতিবার রোজিনা ইসলামের জামিনের দরখাস্ত আইন অনুযায়ী নিষ্পত্তি করবেন।’
আসামি পক্ষের দাবি, যে নথি জব্দের কথা বলা হচ্ছে তা রোজিনা ইসলামের কাছ থেকে নয় বরং একজন সরকারি কর্মকর্তার কাছ থেকেই জব্দ করা হয়েছে।
সামাজী বলেন, ‘আমরা বিজ্ঞ আদালতকে বলেছি এই মামলা ভিত্তিহীন উদ্দেশ্য প্রণোদিত। এই মামলায় আসামিকে যে অভিযোগ অভিযুক্ত করা হয়েছে তা বানোয়াট ও মিথ্যা। কেননা এই মামলার এজাহারের মধ্যে যে ডকুমেন্টসের কথা বলা হচ্ছে তার কোনো বর্ণনা এজাহারের মধ্যে নেই।’
এই আইনজীবী জানান, তার মক্কেল মহান পেশার দায়িত্ব পালন করতে সচিবালয়ে গিয়েছিলেন। তিনি ইতোপূর্বে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কিছু দুর্নীতির খবর সংশ্লিষ্ট পত্রিকায় প্রচার ও প্রকাশ করেছিলেন।
আসামি পক্ষের আইনজীবী জানান, তার মক্কেলের চিকিৎসার বিষয়েও আবেদন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে কোনো আদেশ তাদের হাতে এসে পৌঁছায়নি।
রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী আবদুল্লাহ আবুর দাবি, সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম সচিবালয়ের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সচিবের রুমে গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র এই আসামি ছবি নেন এবং কিছু কাগজপত্র চুরি করে নিয়ে যান।
তিনি বলেন, ‘যেহেতু সে গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র চুরি করেছে এবং ছবি তুলেছে তাই এটা সরকারের সিক্রেসি নষ্ট হয়েছে এবং সেই ধারায় মামলা হয়েছে। একজন সাংবাদিক এই ধরনের কাজ করতে পারে না। এজন্য আমরা পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের কথা বলেছি। তবে আদালত এটি করে নাই। শুনানি হয়েছে। আদালত তাকে কারাগারে প্রেরণের কথা বলেছে এবং বৃহস্পতিবার জামিনের শুনানির জন্য দিন রেখেছেন।’