রাষ্ট্রীয় গোপনীয় নথি চুরির অভিযোগে করা মামলায় সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতে নেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে তাকে শাহবাগ থানা থেকে একটি গাড়িতে করে আদালতের উদ্দেশে নিয়ে যায় পুলিশ।
আদালতে নেয়ার আগে শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আবদুল্লাহ বলেন, `রোজিনা আপা সুস্থ আছেন।'
এ সময় রোজিনা ইসলামের স্বামী শাহবাগ থানার ভেতরে ছিলেন।
রোজিনা ইসলামকে সিএমএম আদালতে নেয়ার পর আদালতের গারদখানার সামনে পুলিশের গাড়িতেই রাখা হয়েছে।
সোমবার দুপুরে রোজিনা ইসলাম স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে গেলে সেখানকার কর্মকর্তারা তাকে অবরুদ্ধ করেন। পাঁচ ঘণ্টা অবরুদ্ধের পর তাকে নেয়া হয় শাহবাগ থানায়।
মন্ত্রণালয় অভিযোগ করছে, এই গণমাধ্যমকর্মী রাষ্ট্রীয় কিছু গোপনীয় নথি সরিয়েছেন, কিছু নথির ছবি তুলেছেন। এগুলো প্রকাশ হলে বিদেশি রাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক নষ্ট হতে পারত। নথিগুলো ছিল ভ্যাকসিন ক্রয়-সংক্রান্ত।
অভিযোগে বলা হয়, বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের ভ্যাকসিন ক্রয়-সংক্রান্ত আলোচনা চলছে। এর খসড়া সমঝোতা স্মারক ও নন ডিসক্লোজার অ্যাগ্রিমেন্ট প্রণয়নকাজ চলমান রয়েছে। সমঝোতা স্মারক নিয়ে পক্ষদ্বয়ের মধ্যে প্রতিনিয়ত পত্র ও ই-মেইলের মাধ্যমে যোগাযোগ হচ্ছে। যেখানে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সন্নিবেশিত রয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের করা মামলায় বলা হয়, বেলা ২টা ৫৫ মিনিটে রোজিনা ইসলাম স্বাস্থ্যসেবা বিভাগে সচিবের একান্ত সচিবের দপ্তরে ঢোকেন। তখন একান্ত সচিব দাপ্তরিক কাজে সচিবের কক্ষে অবস্থান করছিলেন। সে সময় রোজিনা ইসলাম দাপ্তরিক গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র শরীরের বিভিন্ন স্থানে লুকানোর পাশাপাশি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ছবি তোলেন।
সে সময় সচিবের দপ্তরে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য মিজানুর রহমান খান বিষয়টি দেখতে পেয়ে রোজিনাকে বাধা দেন। আর নির্ধারিত কর্মকর্তার অনুপস্থিতিতে তিনি ওই কক্ষে কী করছেন, তা জানতে চান। এ সময় রোজিনা নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দেন।
অতিরিক্ত সচিব কাজী জেবুন্নেছা বেগম তল্লাশি করে রোজিনার কাছ থেকে বেশ গুরুত্বপূর্ণ কাজগপত্র এবং নথির ছবি-সংবলিত মোবাইল উদ্ধার করেন।
এরপর রাত ৯টার দিকে রোজিনাকে সচিবালয় থেকে শাহবাগ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। রাত ১১টার পর মামলায় রোজিনাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।