মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে দেশের পাঁচটি বিভাগের ওপর দিয়ে। আবহাওয়া অফিস বলছে, আরও দুই দিন তাপপ্রবাহ চলবে।
গরমে দুর্বিষহ হয়ে পড়ছে জনজীবন।
আবহাওয়াবিদ আব্দুল মান্নান নিউজবাংলাকে বলেন, পুরো ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগ, রাজশাহী বিভাগের রাজশাহী ও পাবনা এবং চট্টগ্রাম বিভাগের কুমিল্লা ও নোয়াখালীর ওপর দিয়ে এই মাঝারি তাপদাহ বয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, সোমবারসহ কমপক্ষে আরও দুই দিন এই পরিস্থিতি থাকবে।
সারা দেশের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে দেখা যাচ্ছে, দেশের কোথাও কোথাও কালবৈশাখী এবং বজ্রসহ ঝড়বৃষ্টি হতে পারে।
তবে সাগরে লঘুচাপ বা নিম্নচাপ নেই। আপাতদৃষ্টিতে বঙ্গোপসাগরে কোনো ধরনের ঘূর্ণিঝড় বা জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কাও নেই বলে জানান তিনি।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেয়া তথ্যানুসারে, সোমবার ঢাকা বিভাগের মধ্যে ফরিদপুরে সর্বোচ্চ ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি, মাদারীপুরে ৩৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি ও গোপালগঞ্জে ৩৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে।
এ ছাড়া তাপমাত্রা তুলনামূলকভাবে বেশি থাকতে পারে রাজশাহী (সর্বোচ্চ ৪২.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস), খুলনা (সর্বোচ্চ ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) ও বরিশালে (সর্বোচ্চ ৩৮ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস)।
রোববার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে রাঙামাটিতে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। খুলনায় ছিল ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, রাজশাহীতে ৩৬ দশমিক ৫, বরিশালে ৩৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের অন্যান্য বিভাগে তাপমাত্রা তুলনামূলক কম ছিল।
চলমান তাপপ্রদাহে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন বৃদ্ধ ও শিশুরা। গরমে এরই মধ্যে শিশুদের মধ্যে পানি শূন্যতা দেখা দিয়েছে।
ঈদের ছুটি শেষে অফিস, আদালত, কলকারখানা খুলতে শুরু করেছে। রাজধানীমুখী জনস্রোতের ছোটবাহনে ঢাকায় ফেরার কষ্ট বাড়িয়েছে এই অসহ্য গরম।
মিরপুর পল্লবীর বিথি রহমান বলছিলেন, গরমে তার তিন বছর বয়সী মেয়ের ডায়রিয়াজনিত পানি শূন্যতা দেখা দিয়েছে। মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালে গিয়ে এমন গরমজনিত অনেক শিশুর দেখা মিলেছে।
উত্তরা ১৪ নম্বর সেক্টরের বাসিন্দা হাসান রহমান জানান, আগে সাধারণত দিনে এক থেকে দুই ঘণ্টা এবং রাতে দুই থেকে তিন ঘণ্টা এসি চালাতে হতো। এখন বাচ্চাদের সুস্থ রাখতে ২৪ ঘণ্টা এসি চালাতে হয়।
খুলনার ইমরুল হাসান, কুমিল্লার এনামুল হক, রাজশাহীর এনায়েত আলি, ফরিদপুরের রাসেল মিয়া জানান, চলমান তাপদাহে দুপুরের আগেই মানুষ বাড়ি বা গাছের ছায়ায় আশ্রয় নিচ্ছেন।
কখনও কখনও বাতাস বইলেও তা এত গরম যে শরীর পুড়িয়ে দেয়।
আবহাওয়াবিদদের মতে, তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তা ‘মৃদু তাপপ্রবাহ’। উষ্ণতা বেড়ে ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তা ‘মাঝারি তাপপ্রবাহ’। আর তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির বেশি হলে তা ‘তীব্র তাপপ্রবাহ’ হিসেবে বিবেচিত হয়।