চলমান লকডাউন কবে নাগাদ তোলা হবে তা প্রতিবেশী ভারতের করোনাভাইরাস পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করছে বলে জানিয়েছে সরকার। এর ওপর নির্ভর করছে দেশে দূরপাল্লা ও আন্তজেলা গণপরিবহন সেবা চালুর বিষয়টিও।
সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে এসে এ কথা জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
এদিন সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে শুরু হয় মন্ত্রিসভার বৈঠক। ভার্চুয়াল বৈঠকে গণভবন থেকে যুক্ত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। আর সচিবালয় থেকে যুক্ত হন মন্ত্রিসভার অন্য সদস্যরা।
লকডাউন নিয়ে সরকারের ভাবনা কী, এমন এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘পাঁচ-ছয় দিন যাক, তারপর কী অবস্থা হয়, দেখা যাক।
‘আমাদের মেইন কনসার্ন হলো, ইন্ডিয়ার অবস্থাটা। আমাদের একটা সুবিধা হয়েছে, ওয়েস্ট বেঙ্গল বা এসব জায়গাতেও বা ইস্টার্ন প্রভিন্সগুলোতেও তারা লকডাউন দিয়েছে। তাতে আমাদের নাচারাল প্রটেকশন হয়ে গেছে। আমাদের ওই বিষয়গুলোতে খুব কেয়ারফুল থাকতে হবে।’
ভারতের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ রাখার বিষয়টিকে বেশ গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে জানিয়ে সচিব বলেন, ‘তাই বলছি আগামী সাতদিন যাক। সাতদিন পর একটা সিনারিও আসবে, তখন দেখা যাবে।’
দূরপাল্লার বাস, ট্রেন, লঞ্চ আরও কিছু দিন বন্ধ রাখার সুপারিশ করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে খন্দকার আনোয়রুল বলেন, ‘আপাতত সাত দিন। তারপর পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় সংক্রমণ প্রতিরোধে ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল ‘কঠোর’ বিধিনিষেধসহ ‘সর্বাত্মক’ লকডাউন আরোপ করে সরকার। পরে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে সারা দেশে সর্বাত্মক লকডাউন আরও এক সপ্তাহ অর্থাৎ ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ায় সরকার।
এর মধ্যে আরও এক দফা বাড়িয়ে লকডাউনের মেয়াদ করা হয় ৫ মে মধ্য রাত পর্যন্ত। তা শেষ হওয়ার দুই দিন আগে ১৬ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয় লকডাউন। রোববার নতুন প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, লকডাউন বহাল থাকবে ২৩ মে মধ্যরাত পর্যন্ত।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হলে অবস্থা বুঝে যত দ্রুত সম্ভব লকডাউন বা বিধিনিষেধ তুলে নেয়ারও পরিকল্পনা রয়েছে। তার আগেই সিটি করপোরেশন, জেলা শহর ও পৌর এলাকাগুলোতে মাস্ক পরা শতভাগ নিশ্চিত করতে চায় সরকার।
এ ব্যাপারে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘যেহেতু এটা কমিউনিটি ডিজিজ তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও বলেছেন সবাইকে মাস্ক পরতে হবে।’
মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে এ বিষয়ে পুলিশকে বিচারিক ক্ষমতা দেয়া যায় কি না এ বিষয়ে সরকার ভাবছে বলে আগেই জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।
পুলিশকে বিচারিক ক্ষমতা দেয়ার পরিকল্পনা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছু শুনি নাই।’
খন্দকার আনোয়ারুল বলেন, ‘অথরিটিটা টোটাল ডিজি হেলথের। আর ওইখানে বোধয় কোনো পেনাল প্রভিশনও নাই। সবকিছু দেখে আমরা বলেছি, যদি আপনারা মনে করেন আম্যান্ডমেন্ড করেন।’
সংক্রামক ব্যধি বিষয়ক আইনটি স্বাস্থ্য মহাপরিচালকের তত্ত্বাবধানে থাকে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘সেজন্য বলা হয়েছে, যখন ইমপ্লিমেন্টেশন করতে যাবে ফিল্ডে, এটা কীভাবে আরও ইফেকটিভ করা যায়, সেটা দেখুন।’