বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

এসেছি তো ঝড় মাথায় নিয়েই: শেখ হাসিনা

  •    
  • ১৭ মে, ২০২১ ১৪:০৩

চার দশক আগে স্বদেশে প্রত্যাবর্তনের স্মৃতিচারণায় শেখ হাসিনা বলেন, ‘আসার পর অনেক ঝড়ঝাপটা পার হতে হয়েছে এতে কোনো সন্দেহ নাই। তবে এসেছি তো ঝড় মাথায় নিয়েই। সেদিন ৬০ মাইল বেগে ঝড় হচ্ছিল, তখন আমি ট্রাকে। হাজার হাজার মানুষ রাস্তায়।’

পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যার প্রায় ছয় বছর পর দেশে ফেরার সেই দিনটির স্মৃতিচারণা করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনেক বাধাবিপত্তি অতিক্রম করে দেশে পা রেখে তিনি দেখেছিলেন প্রকৃতিও বিরূপ; ঝড় হচ্ছে ৬০ মাইল বেগে। বিরূপ আবহাওয়ার মধ্যেও পাশে পেয়েছিলেন হাজার হাজার সমর্থককে।

সোমবার মন্ত্রিসভা বৈঠকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে চার দশক আগে স্বদেশে প্রত্যাবর্তনের স্মৃতি এভাবেই তুলে ধরেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘তখনকার সরকার কিছুতেই আমাকে আসতে দেবে না। আমার বিরুদ্ধে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র, আমাকে চিঠিপত্র পাঠানো, বিভ্রান্ত করার চেষ্টা, অনেক কিছুই করা হয়েছিল।

‘আসার পর অনেক ঝড়ঝাপটা পার হতে হয়েছে এতে কোনো সন্দেহ নাই। তবে এসেছি তো ঝড় মাথায় নিয়েই। সেদিন ৬০ মাইল বেগে ঝড় হচ্ছিল, তখন আমি ট্রাকে। হাজার হাজার মানুষ রাস্তায়।’

সে সময়ের আওয়ামী লীগের সব নেতা-কর্মীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে দলটির প্রধান বলেন, ‘আমি কৃতজ্ঞতা জানাই আওয়ামী লীগের সে সময়ের সব নেতা-কর্মীকে। আমার অবর্তমানে আমাকে সভাপতি নির্বাচিত করে, যেটা আমি জানতাম না আসলে। তারপর থেকে যারা আমার সাথে ছিল এবং এ দেশের জনগণ।’

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে আক্রমণ করে যখন বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়, তখন শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা ছিলেন বেলজিয়াম। সেখান থেকে তাকে জার্মানি নেয়ার ব্যবস্থা করেন সে সময়ের রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন রশিদ চৌধুরী। সেখান থেকে তাকে পাঠানো হয় ভারতে।

ইন্দিরা গান্ধীর সরকার বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেয়। তবে নিরাপত্তার শঙ্কায় তাদের প্রকাশ্যে আনা হয়নি। গোপনে একটি ফ্ল্যাটে রাখা হয়।

ছয় বছর পর ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে শেখ হাসিনাকে সভাপতি করা হয়। এরপর ১৭ মে তিনি দেশে ফেরেন।

মন্ত্রিসভা বৈঠকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে চার দশক আগে স্বদেশে প্রত্যাবর্তনের স্মৃতিচারণা করেন শেখ হাসিনা

শেখ হাসিনা বলেন, ‘জানতাম খুনি ও যুদ্ধাপরাধী যাদের বিচার আমার বাবা শুরু করেছেন তারা ক্ষমতায়। খুনিদের ইনডেমনিটি দেয়া হয়েছে তারা ক্ষমতায়। ওই অবস্থায় কিন্তু আমি চলে আসছিলাম। আর কোনো কিছু চিন্তা করিনি, আমি চলে এসেছি।

‘এই স্বাধীনতা ব্যর্থ হতে পারে না, এই স্বাধীনতাকে আমার সফল করতেই হবে এভাবেই একটি প্রতিজ্ঞা আমার আর রেহানার সব সময় ছিল।’

দেশের সাধারণ মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জনগণের শক্তিটা হচ্ছে সবচেয়ে বড় শক্তি। আমি যখন বাবা-মা, ভাইবোন সব হারিয়ে এখানে এসেছি, গ্রামেগঞ্জে যেখানেই গেছি, সাধারণ মানুষ, গ্রামের মানুষ তাদের অনেক ভালোবাসা পেয়েছি। অনেক স্নেহ-দোয়া। আমার মনে হয় ওই শক্তিটাই সবচেয়ে বড় শক্তি ছিল।

‘তাদের ভাগ্যটা পরিবর্তন করা। আজকে আমরা উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছি। শুধু দেশের ভেতরেই না, বাহিরেও অনেক ঝড়ঝাপটা পেরিয়ে এই জায়গায় আমরা আসতে পেরেছি, এটাই সবচেয়ে বড় কথা।’

দেশের ইতিহাস আর কেউ বিকৃত করতে পারবে না বলেও মন্তব্য করেন সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, ‘ইতিহাস একেবারে মুছে ফেলা হয়েছিল, পুরো পরিবর্তন। এখন একটা আত্মবিশ্বাস এসে গেছে, বাংলাদেশের ইতিহাস আর কেউ বিকৃত করতে পারবে না, আর মুছতে পারবে না।

‘এজন্য আমি দেশের মানুষের কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই। আমার দলের নেতা-কর্মী অনেকেই আজকে নেই। আমার সাথে কাজ করেছেন সে সময়, অনেককেই হারিয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের ফিরে আসার বিষয়ে সবার আগে স্টেটমেন্ট দেয় ছাত্রলীগের পক্ষে ওবায়দুল কাদের। সে তখন ছাত্রলীগের প্রেসিডেন্ট। আর যুবলীগের চেয়ারম্যান তখন ছিলেন আমাদের আমির হোসেন আমু। আর পার্লামেন্টে এ কথাটা তুলেছিলেন মিজানুর রহমান চৌধুরী, যদিও পরে তিনি অন্য দলে চলে যান।

‘এটুকু বলতে পারি, আল্লাহ সব সময় সহযোগিতা করে বা কিছু কাজ দেয় মানুষকে। সে কাজটা যতক্ষণ শেষ না হয় ততক্ষণই কিন্তু আল্লাহ রক্ষা করে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই বাংলাদেশ স্বাধীন বাংলাদেশ, স্বাধীন থাকবে এবং আমার বাবার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলব।’

এ বিভাগের আরো খবর