বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বাসায় তালা, বাবুল-মিতুর দুই সন্তান কোথায়

  •    
  • ১৬ মে, ২০২১ ২৩:৫৪

মঙ্গলবার তার বর্তমান স্ত্রী এবং বাবুল-মিতু দম্পতির দুই সন্তান ও বাবুলের এক ভাতিজা মোহাম্মদপুরের ওই বাসা থেকে চট্টগ্রাম যাচ্ছেন বলে বের হন। এরপর তারা কোথায় আছেন জানা যায়নি। বাবুলের গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহের শৈলকুপায় যাননি তার বর্তমান স্ত্রী ও সন্তানরা।

ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে চট্টগ্রামের জিইসি মোড়ে ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে গুলি ও ছুরিকাঘাতে নিহত হন তৎকালীন পুলিশ সুপার বাবুল আকতারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার তার স্বামী এখন কারাগারে আছেন।

বাবুল আকতার গত বুধবার গ্রেপ্তার হওয়ার পর তাদের সন্তান কোথায় আছে, তা জানতে পারেনি মামলাটির বর্তমান তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

তবে নিউজবাংলার অনুসন্ধান অনুযায়ী, দুই সন্তান বাবুলের বর্তমান স্ত্রীর সঙ্গে রয়েছে। সোমবার ভোরে চট্টগ্রামের উদ্দেশে ঢাকার মোহাম্মদপুরের বাসা থেকে বের হন বাবুল আকতরা। তার সর্বশেষ কর্মস্থল আদ-দীন হাসপাতালের একটি গাড়িতে চড়ে বাসা থেকে বের হন তিনি।

পরদিন মঙ্গলবার তার বর্তমান স্ত্রী এবং বাবুল-মিতু দম্পতির দুই সন্তান ও বাবুলের এক ভাতিজা মোহাম্মদপুরের ওই বাসা থেকে চট্টগ্রাম যাচ্ছেন বলে বের হন। এরপর তারা কোথায় আছেন জানা যায়নি। বাবুলের গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহের শৈলকুপায় যাননি তার বর্তমান স্ত্রী ও সন্তানরা।

বাবুল-মিতুর দুই সন্তান কোথায় আছে, তা জানতে তদন্ত কর্মকর্তাদের বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পিবিআই প্রধান ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার। তিনি বলেন, ‘তারা (বাবুল-মিতুর দুই সন্তান) ঢাকার বাসায় নেই। তারা নিরাপদে আছে কি না জানতে আমাদের তদন্ত কর্মকর্তারা পেটার্নাল পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তবে এখনও জানা যায়নি।’

মামলায় ভুল ঠিকানা দিয়েছিলেন বাবুল

মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন পাঁচলাইশ থানায় বাবুল আকতারসহ আটজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। এই মালায় বাবুল আকতারের মোহাম্মদপুরের বাসার ভুল ঠিকানা দেয়া হয়, যে ঠিকানা বাবুলই তার করা হত্যা মামলায় দিয়েছিলেন।

মামলায় মোহাম্মদপুরের বাসার ঠিকানায় লিখা ছিল বাবর রোড, ব্লক সি, রোড-১১, বাড়ি-২২। এই ঠিকানায় কোনো বাড়ি পাওয়া যায়নি। বাড়ি নম্বর ঠিক থাকলেও রোড ও ব্লক নম্বর ভুল ছিল।

তবে ভুল ঠিকানায় বাড়ি খুঁজতে গিয়েই পাওয়া যায় প্রকৃত বাড়ির ঠিকানা। সেখানে কথা হয় কেয়ারটেকার সোহেলের সঙ্গে। তিনি জানান, সোমবার ভোরে আদ-দ্বীনের গাড়িতে করে বাসা থেকে বের হন বাবুল আকতার। পরদিন বাবুলের বর্তমান স্ত্রী, দুই সন্তান ও ভাতিজা বাসা থেকে বেরিয়ে যান।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা বলেন, ‘উনি (বাবুল আক্তার) মিডিয়া ও বাইরের মানুষের থেকে তার সন্তানদের দূরে রাখতে চেয়েছিলেন। পরবর্তীতে বাবুলের কাছ থেকে সঠিক ঠিকানা নিয়ে বাসায় যান পিবিআই ঢাকার কর্মকর্তারা। তবে বাসায় কাউকে পাওয়া যায়নি। বর্তমানে বাসাটি তালাবদ্ধ রয়েছে।

ডিবি পরিচয়ে মুসাকে তুলে নেয়ার অভিযোগ

মিতু হত্যার পর কেটে গেছে পাঁচ বছর। কিন্তু এতদিনেও এই হত্যা মামলার অন্যতম আসামি কামরুল ইসলাম শিকদার ওরফে মুসার কোনো সন্ধান জানাতে পারেনি পুলিশ।

তবে মুসার স্ত্রীর অভিযোগ, ২০১৬ সালে ৫ জুন মিতু হত্যার পর ২২ জুন মুসাকে ডিবি পরিচয়ে তুলে নেয়া হয়।

মিতু হত্যার একদিন পর তার স্বামী তৎকালীন পুলিশ সুপার বাবুল আকতার চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন। ওই মামলা প্রথমে ডিবি ও সর্বশেষ পিবিআই তদন্ত করে। ওই মামলায় ফাইনাল রিপোর্ট দিয়ে বাবুল আকতারকে আসামি করে ১২ মে নতুন আরেকটি মামলা করেন মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন।

এই মামলায় এক নম্বর আসামি বাবুল আকতার। দ্বিতীয়তে রয়েছে মুসার নাম। আসামি রয়েছেন আরও ছয়জন।

বাবুল আকতার চট্টগ্রামে দায়িত্বে থাকা অবস্থায় মুসা তার সোর্স হিসেবে কাজ করতেন বলে জানিয়েছেন মুসার স্ত্রী পান্না আক্তার।

তিনি বলেন, ‘মিতু খুন হওয়ার পর আমরা আত্মগোপনে চলে যাই। মুসার একজন পরিচিত ড্রাইভার ছিল নুরুন্নবী নামে। নুরুন্নবীর এক আত্মীয়ের বাসা ছিল চট্টগ্রামের বন্দর কাঠঘর তিন রাস্তার মাথার কাছে। মুসা সারেন্ডার করতে চাইছিল ২১ তারিখ । ২২ তারিখ কোর্টে যাইবে। আমাদের বলছিল নুরুন্নবীর আত্মীয়ের বাসায় যাইতে। উনি সকালে আসবে বলছিল।

‘মুসা বাসায় আসার আগে ডিবির লোক আমাকে ও নুরুন্নবীকে একটা সাদা গাড়িতে করে নিয়ে যায়। আমাদের নিয়ে গাড়িটা দাঁড়ায় তিন রাস্তার মোড়ে। কিছুক্ষণ পর ওইখানে আসে মুসা। ও নুরুন্নবীর বাসা চিনতেছিল, এই কারণে রাস্তার পাশে দাঁড়াইয়া ছিল। এদিকে মুসা আসার পর নুরুন্নবীর কাছ থেকে ডিবি পুলিশ কনফার্ম হয় যে এটাই মুসা। এরপর মুসাকে ধরে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে একটি পিকআপে উঠিয়ে নিয়ে যায়। এরপর আর দেখা পাইনি মুসার।’

মুসার স্ত্রী পান্না আরও বলেন, ‘যারা মুসাকে তুলে নিছিল, তাদের আমি চিনতে পারছি। তাদের নামও আমি সংবাদ সম্মেলনে বলছিলাম। মাস খানেক আগে পিবিআইকেও বলছি। কিন্তু তারা বলছে, নেয়নি। আমার চোখের সামনে ওরা নিয়ে গিয়ে অস্বীকার করছে।’

পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার নিউজবাংলাকে বলেন, মুসা পলাতক। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

আট আসামির তিনজন পলাতক

গত ১২ মে মিতুর বাবার করা মামলায় বাবুল আকতরসহ আটজনকে আসামি করা হয়। তাদের মধ্যে মুসাসহ পলাতক রয়েছেন তিনজন। অন্য ‍দুজন হলেন তিন নম্বর আসামি এহতেশামুল হক ওরফে হানিফুল হক ওরফে ভোলাইয়্যা এবং ছয় নম্বর আসামি খায়রুল ইসলাম ওরফে কালু ওরফে কসাই কালু।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমাও বলেন, মিতু হত্যার প্রথম মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তিনজন। তারা হলেন মোতালেব মিয়া অরফে ওয়াসিম, আনোয়ার হোসেন ও শাহজাহান মিয়া। আর নতুন মামলা হওয়ার পর বাবুল আকতার ও সাইদুল ইসলাম সিকদার গ্রেপ্তার হয়েছেন।

মুসাসহ পলাতক তিন আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান সন্তোষ কুমার।

এ বিভাগের আরো খবর