বিধিনিষেধের মধ্যে ভারত থেকে স্থল সীমান্ত দিয়ে দেশে এসে কোয়ারেন্টিনের শর্ত পূরণ না করে যাত্রীদের পালিয়ে যাওয়া ঠেকাতে নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন চুয়াডাঙ্গা প্রশাসন।
সিদ্ধান্ত হয়েছে, যারা দর্শনা সীমান্ত দিয়ে দেশে আসবেন, তাদের সবার পাসপোর্ট পুলিশ হেফাজতে থাকবে। কোয়ারেন্টিন শেষে সিভিল সার্জনের ছাড়পত্রের পর তা ফেরত দেয়া হবে।
রোববার থেকে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা চেকপোস্ট দিয়ে দেশে আসতে পারবেন ভারতে আটকে পড়া বাংলাদেশিরা। তবে দেশে আসার পর তাদের করোনা পরীক্ষা করা হবে। আক্রান্ত শনাক্ত হলে রাখা হবে প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে। তবে সবাইকেই সীমান্ত এলাকাতে ১৪ দিনের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনে রাখা হবে।
শনিবার করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কিত চুয়াডাঙ্গা জেলা কমিটির সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পরে বিষয়টি জানায় জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার।
তিনি জানান, কোয়ারেন্টিন সেন্টার হিসেবে প্রাথমিকভাবে নার্সিং ইনস্টিটিউট ও দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে নির্বাচন করা হয়েছে। কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থায় নির্ধারিত পরিবহনে আইসোলেশন ও কোয়ারেন্টিন সেন্টারে যাত্রীদেরকে পৌঁছানো হবে। কোয়ারেন্টিনে অবস্থানকালীন সবাইকেই থাকা ও খাওয়ার খরচ বহন করতে হবে।
ভারতে ছড়িয়ে পড়া করোনার ধরন যেন দেশে ঢুকতে না পারে, সে জন্য গত ২৬ এপ্রিল থেকে সীমান্ত ১৪ দিনের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়। পরে আরও ১৪ দিন বাড়ানো হয় নিষেধাজ্ঞা। তবে এরই মধ্যে দেশে করোনার ভারতীয় ধরন শনাক্ত হয়েছে।
আর সীমান্ত দিয়ে দেশে আসার পর সীমান্ত এলাকায় কোয়ারেন্টিনে থাকার কথা থাকলেও বহুজন পালিয়ে বাড়িতে আসার ঘটনা ঘটেছে। এই খবর পেয়ে ভোলায় এক শিক্ষকের বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। আর নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে আসার পর একজনের করোনাও শনাক্ত হয়েছে।
এই পরিপ্রেক্ষিতে চুয়াডাঙ্গা প্রশাসন পাসপোর্ট আটকে রাখার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেটি তদারকির জন্য অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মনিরা পারভীনকে প্রধান করে সাত সদস্যের মনিটরিং কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (দামুড়হুদা) আবু রাসেল, সিভিল সার্জনের প্রতিনিধি আওলিয়ার রহমান, চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবি প্রতিনিধি, জেলা গ্রাম প্রতিরক্ষা ও আনসার বাহিনীর প্রতিনিধি, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি সরদার আল আমিন ও জেলা বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক একেএম মঈনুদ্দিন মুক্তা।
সভায় জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার বলেন, দেশে আসা মানুষদের জন্য যাতে সংক্রমণ ঝুঁকি তৈরি না হয় সেজন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সবাইকে কোয়ারেন্টিনের আওতায় নিতে এরইমধ্যে অন্তত চারটি সরকারি প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি চারটি হোটেল নির্ধারণ করা হয়েছে। সেখানে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনের পর তাদের বাড়িতে অবস্থানের অনুমতি দেয়া হবে।