কুড়িগ্রাম ঈদের ছুটিতে দল বেঁধে মানুষ ভিড় জমাচ্ছে ঘুরে বেড়ানোর স্থানগুলোতে। বিশেষ করে ধরলার সেতু এলাকায় বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হাজার হাজার মানুষের অবস্থান দেখা যায়।
করোনাকালে সামাজিক দূরত্ব আর মাস্ক পরার যে সাবধানতার কথা স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলে আসছেন, তার কোনো বালাই নেই সেখানে।
স্বাস্থ্যবিধি মানাতে আর ভিড় সামলাতে পুলিশকে বেশ বেগ পেতে হয়।
কুড়িগ্রাম ছাড়াও লালমনিরহাট জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকেও মানুষ নদীর দুই পার, বাঁধ এবং বালু চর এলাকায় ভিড় জমায়।
অনেকে সেতুর উপর, বাঁধ এবং ধরলা নদীর কাছাকাছি গিয়ে প্রিয়জনের সঙ্গে ছবি উঠানো আর সেলফি তোলায় ব্যস্ত হয়ে পড়ে। অনেকে বন্ধু-স্বজনদের নিয়ে নৌভ্রমণে বের হয়।
পর্যটকরা ভ্যান, রিকশা, অটো, মোটরসাইকেল বা মাইক্রোবাস, যে যেভাবে পারে, সেভাবেই আসেন। এসব যানবাহনের চাপে ধরলা সেতু এবং ফুলবাড়ি উপজেলায় শেখ হাসিনা সেতুর উপরে দীর্ঘ যানজটেরও সৃষ্টি হয়।
ধরলা পারে মানুষের ভিড়। ছবি: নিউজবাংলা
মানুষের এমন মিলনকে ঘিরে নদীর পারে ফুচকা, চানাচুর, আইসক্রিম, চুরি-ফিতা ও বেলুনসহ নানা পণ্যের দোকান বসে। সেসব দোকানেও ক্রেতাদের ভিড় উপচেপড়া।
শাহবাজার এলাকার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নুর নবী সরকার ঘুরতে এসে নিজেও ভিড় দেখে অবাক হয়েছেন।
ঘুরতে আসা বুলবুলি আকতার বলেন, শহরে কোনো পার্ক না থাকায় পরিবার নিয়ে এখানে এসেছেন।
শিল্পী সরকার বলেন, ‘এত সমাগমে স্বাস্থ্যবিধি মানা প্রায় অসম্ভব। তারপরও যতটুকু সম্ভব চেষ্টা করছি।’
সবুজ বলেন, ‘বছরের একটা দিনে বন্ধুদের নিয়ে ছবি ও সেলফি তুলে ফেসবুক পোস্ট করেছি। সেই সঙ্গে ধরলা নদীতে ডিঙ্গি নৌকায় ঘুরেছি। সব মিলিয়ে করোনার প্রভাব আমাদের এবারের ঈদ-আনন্দটা বিলীন হয়নি। ধরলা পারের মুক্ত বাতাসে কোনো ধরনের অসুবিধা হবে না।’
সেতুতে দায়িত্ব থাকা লালমনিরহাট সদর থানার উপপরিদর্শক কামাল হোসেন বলেন, ‘কোনোভাবেই দর্শনার্থীদের ঠেকানো যাচ্ছে না।’
কুড়িগ্রাম সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খাঁন মো. শাহরিয়ার বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি পালনে
আমরা মাইকিং অব্যাহত রেখেছি।’
ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন দাস জানান, ‘ধরলা পারে দর্শনার্থীর ঢলের বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গে আমি নিজেই সেখান উপস্থিত হই। তাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এ জন্য সচেতনতামূলক প্রচার অব্যাহত রয়েছে।’