ঈদুল ফিতর উপলক্ষে শহর ছেড়ে বাড়ি যাওয়াদের ফিরতি যাত্রা কীভাবে হবে তার উপায় খুঁজতে রোববার আলোচনায় বসতে যাচ্ছে সরকার। এতে লকডাউন এবং মাস্কপরাসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে পুলিশের কাছে বিচারিক ক্ষমতা দেয়াসহ অন্যান্য বিষয়েও আলোচনা হবে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।
শনিবার করোনা পরিস্থিতি নিয়ে কয়েকজন সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘এ বিষয়ে আগামীকাল (রোববার) আলোচনা হবে। আসলে কত সংখ্যক মানুষ আসতে পারবেন, কত দিনের মধ্যে আসতে পারবেন। অধিকাংশই গিয়েছে একটু লম্বা সময়ের জন্য। অধিকাংশ মাসখানেক বা ২০ দিনের জন্য গিয়েছেন। তবে আবার অনেকে ফিরতে চাইবেন। ফলে বিষয়গুলো নিয়ে আগামীকাল আলোচনা হবে, সেখানেই ঠিক করা হবে কোন কৌশলে তারা ফিরবেন।’
পঞ্চম দফা বাড়ছে লকডাউন
করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের রুখতে চলমান লকডাউনের মেয়াদ আরও এক দফা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। পঞ্চম দফায় লকডাউন বাড়িয়ে করা হয়েছে ২৩ মে পর্যন্ত।
বিষয়টি রোববার প্রজ্ঞাপন নিশ্চিত করা হবে জানিয়েছেন জন প্রশাসন প্রতিমন্ত্রী, ‘বিধিনিষেধ ১৬ মে পর্যন্ত চলমান আছে। আগামীকাল (রোববার) সেটা কারেকশন করে আমাদের পরিকল্পনা আছে আরও এক সপ্তাহ এটাকে এক্সপান্ড করার। রোববারই প্রজ্ঞাপণ দিয়ে বিষয়টি জানানো হবে।’
করোনা পরিস্থিতি নিয়ে অনেকটাই চিন্তিত সরকার। বিশেষ করে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে মানুষ যেভাবে শহর ছেড়ে বাড়ি ফিরেছে এতে সংক্রমণ হার বেড়ে যায় কি না এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
আরও এক সপ্তাহ বাড়ানো হচ্ছে প্রজ্ঞাপন। ছবি: নিউজবাংলা
জন প্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের করোনা শনাক্তের হার ৭ এর কাছাকাছি চলে এসেছে। কিন্তু গতকাল (শুক্রবার) আবার ১০ ক্রস করল। যদি এভাবে আবার বাড়তে থাকে তাহলে প্রবণতা বোঝা যাবে। তখন আমাদের আবারও ইয়ে (বিধিনিষেধ বাড়াতে) করতে হবে।’
লকডাউন আরও বাড়তে পারে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সেটা আগামীকাল (রোববার) আলাপ আলোচনা সাপেক্ষে হবে। আপাতত সাত দিনের হবে। যদি কালকে সিদ্ধান্ত হয় আপাতত সাতদিন, দেন পরে এক্সটেন্ড করা যাবে অবস্থা বুঝে।’
জীবন জীবিকার কথা মাথায় রেখে ঈদের আগে খুলে দেয়া হয় শপিং মল ও দোকানপাট। কিন্তু বন্ধ রাখা হয় আন্তজেলা গণপরিবহন। কিন্তু তার ফল হয়েছে উল্টো। স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করে, শপিং মলগুলোতে ছিল মানুষের উপচে পড়া ভিড়, মাস্ক ছাড়াই অনেকেই করেছেন কেনাকাটা। জরিমানা করেও নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি ঈদ বাজার।
বাড়িমুখী মানুষকে গাড়ি বন্ধ করেও ঠেকানো সম্ভব হয়নি। ফেরিতে অগুণতি মানুষের সমাগম, যেন তারই প্রমাণ রেখেছে। পদদলিত হয়ে মৃত্যু মেনে নিয়েও আটকে রাখা যায়নি মানুষের স্রোত। এতে সংক্রমণের মাত্রা বেড়ে যাবে বলে ধারণা করছে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আসলে আমরা শঙ্কিত। কারণ হচ্ছে, যেভাবে মানুষ (ঈদে বাড়ি) গেল, শপিংয়ে মাস্ক ছাড়া কেনাকাটা করল। ফলে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার কথা ২২ বা ২৪ তারিখের দিকে। সেটার দিকেই এখন আমাদের নজর।
‘এটার ম্যানেজমেন্ট নিয়েই এখন আমাদের চিন্তা ভাবনা। কীভাবে কী করা যায়, সেটাই ভাবা হচ্ছে। যদি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকে, আমাদের তো সতর্ক অবস্থানে যেতে হবে।’
ভারত ভ্যারিয়েন্টে স্পেশাল নজর
করোনাভাইরাসের ভারতীয় ডাবল মিউট্যান্ট ধরন নিয়ে বাংলাদেশ সতর্ক নজর রাখছে বলে জানালেন জনপ্রশাসন মন্ত্রী।
ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট আরও খুব বেশি সংক্রামক। এই ধরনে আক্রান্ত কয়েকজন রোগী দেশে এরই মধ্যে শনাক্ত হয়েছে। এই ভ্যারিয়েন্টের ভয়াবহতা বিবেচনায় প্রজ্ঞাপনে নতুন কোনো সিদ্ধান্ত থাকবে কি-না জানতে চাওয়া হয় প্রতিমন্ত্রীর কাছে।
তিনি বলেন, ‘ভারত তো আমাদের প্রতিবেশী দেশ। সে ক্ষেত্রে আমাদের সর্তকতা তো আছে। ভারতের ভ্যারিয়েন্ট তো একটা বিষয়, এটার ওপর আমরা স্পেশাল নজর রাখছি।’
ভারত ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে কিছু মিশ্র প্রতিক্রিয়া আছে জানিয়ে ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘অলরেডি, ইউকে ভ্যারিয়েন্ট আছে। ইউকে ভ্যারিয়েন্ট থাকলে সেটা (ভারত ভ্যারিয়েন্ট) আবার খুব একটা ই (প্রতিক্রিয়া দেখাতে) করতে পারে না- এ রকম কিছু মতবাদ আছে।’
করোনাভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে লকডাউনের চেয়ে মাস্ক পরা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে যাচ্ছে সরকার। কীভাবে তা বাস্তবায়ন করা হবে তা নিয়েও চলছে নানা আলোচনা।
রোববার এক অনলাইন বৈঠকে বিষয়গুলো নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা হবে বলে জানালেন প্রতিমন্ত্রী।
‘আগামী দিনের একটা পরিকল্পনা ঠিক করারও কথা চলছে। পৃথিবী থেকে এটা এখনই যাচ্ছে না। করোনা যেহেতু খুব সহসা যাবে না, তাই এটি নিয়ন্ত্রণে রেখে আমরা যেন সব কাজ চালিয়ে যেতে পারি সেটাই হচ্ছে আমাদের লক্ষ্য।’
দিনের পর দিন সবকিছু বন্ধ করে রাখাটাকেও যৌক্তিক মনে করছে না সরকার। বিষয়টি নিয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এতদিন সবকিছু বন্ধ করে রাখাও সম্ভব হবে না। তাই সকলকে কীভাবে মাস্ক পরানো যায়, সে বিষয়টা নিয়ে কিন্তু আমরা খুব আলোচনা করছি। কোন কৌশলে সেটা করানো যায়, সেই বিষয়ে বিভিন্ন অল্টারনেটিভ চিন্তা করছি। আইনের সংশোধন করা যায় কিনা, পুলিশকে নির্বাহী ক্ষমতা দেয়া, শুধু মাস্ক পড়ানোর ক্ষেত্রে, এগুলো নিয়ে আলোচনা চলছে।
যারা হুড়োহুড়ি করে বাড়ি গেছেন, তাদের ফেরার বিষয়ে সরকার কোনো সিদ্ধান্ত নিয়েছে কিনা জানতে চাওয়া হয় জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের কাছে।
তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আগামীকাল আলোচনা হবে। আসলে কত সংখ্যক মানুষ আসতে পারবেন, কত দিনের মধ্যে আসতে পারবেন। অধিকাংশই গিয়েছে একটু লম্বা সময়ের জন্য। অধিকাংশ মাসখানেক বা বিশ দিনের জন্য গিয়েছেন। তবে আবার অনেকে ফিরতে চাইবেন। ফলে বিষয়গুলো নিয়ে আগামীকাল আলোচনা হবে, সেখানেই ঠিক করা হবে কোন কৌশলে তারা ফিরবেন।’
সবার মধ্যে মাস্ক পরা এবং স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে পুলিশকে দেয়া হতে পারে বিচারিক ক্ষমতা। ছবি: নিউজবাংলা
মাস্ক পরাতে পুলিশকে বিচারিক ক্ষমতা দেয়া নিয়ে আলোচনা চলছে
করোনাভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে লকডাউনের চেয়ে মাস্ক পরা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে যাচ্ছে সরকার। কীভাবে তা বাস্তবায়ন করা হবে তা নিয়েও চলছে নানা জল্পনা, কল্পনা। রোববার এক অনলাইন বৈঠকে বিষয়গুলো নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনার হওয়ার কথা জানালেন প্রতিমন্ত্রী।
‘আগামী দিনের একটা পরিকল্পনা ঠিক করারও কথা চলছে। পৃথিবী থেকে এটা এখনই যাচ্ছে না। করোনা যেহেতু খুব সহসা যাবে না, তাই এটি নিয়ন্ত্রণে রেখে আমরা যেন সব কাজ চালিয়ে যেতে পারি সেটাই হচ্ছে আমাদের লক্ষ্য।’
দিনের পর দিন সবকিছু বন্ধ করে রাখাটাকেও যৌক্তিক মনে করছে না সরকার। বিষয়টি নিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এতদিন সবকিছু বন্ধ করে রাখাও সম্ভব হবে না। তাই সকলকে কীভাবে মাস্ক পরানো যায়, সে বিষয়টা নিয়ে কিন্তু আমরা খুব আলোচনা করছি। কোন কৌশলে সেটা করানো যায়, সেই বিষয়ে বিভিন্ন অল্টারনেটিভ চিন্তা করছি। আইনের সংশোধন করা যায় কিনা, পুলিশকে বিচারিক ক্ষমতা দেয়া, শুধু মাস্ক পড়ানোর ক্ষেত্রে, এগুলো নিয়ে আলোচনা চলছে।’