লকডাউনের কারণে এবারের ঈদ যাত্রায় আন্তজেলা বাসসহ দূর পাল্লার গণপরিবহন বন্ধের সুযোগে পাইভেটকার, মাইক্রোবাস, অটোরিকশা সহ ছোট গাড়িগুলো ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য চালাচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপ চেয়েছে তারা।
বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। এতে বলা হয়েছে, ঈদ যাত্রায় দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় ছোট গাড়িগুলো দূরপাল্লার যাত্রী পরিবহনের সুযোগ নিয়েছে। স্বাস্থ্যবিধিতে পাত্তা না দিয়ে গাদাগাদি করে যাত্রী পরিবহন করায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি কয়েকগুণ বেড়েছে।
সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী সাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, দূরপাল্লার বাস বন্ধের সুযোগ নিয়ে বছরব্যাপী দীর্ঘ লকডাউনে কর্মহীন, আয়-রোজগার কমে যাওয়া কর্মজীবী-শ্রমজীবী নিম্ন আয়ের ঘরমুখী যাত্রীদের কাছ থেকে প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, অটোরিকশা, সিটি সার্ভিস ও শহরতলীর বাসে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য চলছে। এ ছাড়া, এসব পরিবহনে গাদাগাদি করে যাতায়াতের ফলে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়েছে।
‘এসব অনিয়ম ও জুলুম বন্ধে সরকার, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’
এছাড়া যাত্রী, চালক ও পরিবহন শ্রমিকদের স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণে মনিটরিং কার্যক্রম জোরদার করা, সড়ক দুর্ঘটনা ও যানজট নিরসনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
দেশে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল ‘কঠোর’ বিধিনিষেধসহ ‘সর্বাত্মক’ লকডাউন আরোপ করে সরকার। পরে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে সারা দেশে সর্বাত্মক লকডাউন আরও এক সপ্তাহ অর্থাৎ ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ায় সরকার।
পরে লকডাউনের মেয়াদ বাড়িয়ে করা হয় ৫ মে মধ্যরাত পর্যন্ত। তা শেষ হওয়ার দুই দিন আগে ১৬ মে পর্যন্ত এই লকডাউন বর্ধিত করার সিদ্ধান্ত জানায় সরকার।
এর মধ্যে আরও এক দফা লকডাউন আরও এক সপ্তাহ বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে করছে সরকার।
এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার জন প্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘ঈদের পরে ২০-২২ তারিখের দিকে সংক্রমণ আবার বৃদ্ধি পেতে পারে। এ দিক থেকে আমাদের পরিকল্পনা আছে ঈদের পরে আরও এক সপ্তাহ বিধিনিষেধ চলমান রাখা অন্তত।
‘আর এর মধ্যে শতভাগ মাস্ক যেন আমরা পরাতে পারি সে ব্যবস্থা করা। আশা করি ১৬ তারিখের মধ্যে প্রজ্ঞাপন দিয়ে এগুলো জানাতে পারব।’
ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঘোষণায় লকডাউন কিছুটা শিথিল করা হয়। প্রতি জেলার অভ্যন্তরে বাস চলাচলে অনুমতি দেয়া হয়। তবে বন্ধ রাখা হয় আন্তজেলার বাসসহ গণপরিবহন। এরপরও ঈদ উপলক্ষে ঘরমুখী মানুষ বসে নেই। যে যার মতো বাড়ি ফিরছেন। প্রতিটা ফেরিঘাটে লোকারণ্য।
আর এই সুবিধাটা নিচ্ছে ছোট যানবাহনগুলো। যাত্রী পরিবহনে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া নিচ্ছেন তারা।